সকাল থেকে মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে কমার কোন লক্ষনই নেই। হবেই বা না কেন? ফেসবুকের ভাইরাল খবর কালাম মিয়াকে ‘কুত্তা কালাম’ বলে ডাকার কারণে সে একই পরিবারের ছয়জনকে কামড় দিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে।
এরপর তারা সবাই হাসপাতালে ভর্তি। কুত্তা কালামকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি এই কাজ করতেই পারেন না। আপাদমস্তক একজন সুস্থ সবল মানুষ।
ভাববার বিষয়, সে যদি পাগল হবে, অসুস্থ হবে তাহলে, একই পরিবারের লোককে কেন কামড়ালো? অন্য আর কেউ তাকে কেনই বা এ নামে ডাকলো না, বা তাদের কামড়ালো না।
কামড়া কামড়ির এহেন ঘটনার পোস্ট মর্টেম এ জানা গেল ‘কুত্তা কালাম’ বলে ডাকাডাকি আসলে কোন ঘটনা নয়। ঘটনা বৈষয়িক ও স্বার্থান্বেসী। তাদের দীর্ঘদিনের জমি জমার বিবাদ। জবর দখলের পায়তারা থামাতে দুই দলে কামড়াকামড়ি। কি আজব!
মেজাজ সেই লেভেলে খারাপ। আমি সাধারন পাবলিক। অল্প ইনকাম, সারদিন কামলা দেই, খাই। কে কোথায় কাকে কামড়ালো আমার তাতে কি আসে যায়। অথচ দ্যাখেন আমার কেমন মাথা ব্যথা করছে।
এদিকে সিলেটে গলা পানি, হাটু পানি। এক্কেবারে অবস্থা কাহিল। আমার তা নিয়া একটু হলেও ভাবা দরকার। সারাদিনের কামলা খাটার পয়সায় দিলাম ১০০০ টাকা।সওয়াব বড় জরুরী জিনিস, সেই সওয়াবের আশায়।
আচ্ছা এই যে বাংলাদেশের সকল মানুষ সিলেটে দোয়া করতে যায়। কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢেলে আসে মাজার গুলোতে। তো এই মহামারীতে তার কয়েকটা ভাঙ্গলে খতি কি? সওয়াবের কাজেই তো লাগতো। নাকি অজগর সাপেরা খোপ বানিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। বন্যা নেমে গেলে তবেই মুখ খুলবেন?
কুড়িগ্রামে চার/ পাঁচটা থানা ডুবে গেল তা নিয়ে তেমন কোন আলাপ নেই। দেশে এখন খালি বড়লোকী ব্যাপার- স্যাপার। সিলেটেই সব যায়। যতো হিসাব দেখলাম তাতে- ‘ হাতির টাকায় ছাগল পালন’। হোক তাতে আমার কি?
সাত সকালে পদ্মা সেতুর খবর জানতে ফেসবুকে গেলেই আজগুবি প্রলাপ। আজ নাকি কারও মন ভালো নেই! কে বা কারা এটা স্লোগান বানিয়ে সপ্তাহ ধরে শেয়ার বাজারে বানর বিক্রির মতো সবার পোষ্টে চলছে হাড্ডাহাড্ডি বানর বেচি- কিনি। পৃথিবীর আর কোন সেতু নিয়ে এতো কেনা বেচা বোধহয় হয়নি। কেউ বল্টু খোলে, কেউ টিকটক করে,কেউ পিসু করে আর কেউ স্টাইল মারতে গিয়ে মরে কাত। ফলাফল কাল থেকে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ। এতো অযথা খবরে একজন ভালো মনে থাকা মানুষেরও অসুস্থ কিংবা মন খারাপ হতে বাধ্য! অথচ ডিজিটাল অপরাধ, আইন নাকি আছে?
এতো মন খারাপীর মাঝে জানা গেল, পদ্মা সেতুতে একদিনে কয়েকঘন্টায় টোল উঠেছে নাকি আশি লক্ষের বেশি টাকা। যথাযথ নিয়মে টাকা উঠুক, তা কাজে লাগুক, এমনটাই আশা। দেশে আরও বড় বড় কাজ হোক। শুধু গল্প যেন না হয়।
যাক সেসব, গল্পে আসি।
মেয়েটি ছোটবেলা থেকেই গল্পবাজ। এবং ভীষন বিলাসী জীবন যাপন পছন্দ করে। যা নেই তা নিয়ে খুব বিশ্বাসযোগ্য মিথ্যা গল্প করে বেড়ায়। যেমন- তার অনেক টাকা, তার বাবার কয়েকটা বাড়ি, গাড়ি আছে। তার চালচলন, কথাবার্তা, পোশাক- পরিচ্ছদ অতি আধুনিক এবং মেয়েটি সুন্দর হওয়ায় সবাই তা বিশ্বাস করে।
তার বন্ধু- বান্ধবও খুব হাই রেটেড, ঠিক তার পোশাক- পরিচ্ছদের মতো। এভাবে পরিচয় তার শো বিজের বন্ধুদের সাথে। তারও ভীষণ শখ হলো শো বিজে কাজ করার।
আর তার বন্ধুদের মেধা ও টাকা থাকলেও তারা আরও টাকার লোভী। তাই তারা টাকার জন্য তাকে কিডন্যাপ করলো। বেঁধে রেখে খুব মারধোর করলো। তখন সে স্বীকার গেল সে আসলে এতোদিন মিথ্যা বলেছে।
তারা কিছুতেই তা বিশ্বাস করলো না। এবং ধর্ষন করলো যেন সে সত্য স্বীকার করে তাদের টাকা এনে দেয়। সর মিথ্যা করে, একসময়ের তার মিথ্যা গাল গল্প আর বানানো কথা সত্য করে মেয়েটির মৃত্যু হলো।
সে যাবার সময় বলে গেল, নিজের যা নেই তা নিয়ে বাড়িয়ে- চাড়িয়ে বলা কথা সাময়িক বিশ্বাস যোগ্য মনে হলেও, সময় মতো মিথ্যাও তার বোল খোলে। তখন পাশে দাড়াঁবার কেউ থাকেনা!!!
আমার কি? আমি কামলা মানুষ! তারপরও মাথা ব্যথা কারণ মাথায় মাথাপিছু বিরাট ঋণের বোঝা। তবুও জীবনকে বলি খুব ছুটে চল জীবন। কারণ তোর পাছার কড়ায় কারও বিলাসী জীবন কাটবে। আর সংগ্রাম করে তবুও তোকে বলতে হবে ভীষন সুখে বাঁচতে চাই জীবন!!
ছবি- নেটের
২৫টি মন্তব্য
জিয়া আল-দীন
ফেসবুকে যে যেমন পারে নিজেকে ফোকাস করে। হাওয়াই এই জগতে মুখোশের ছড়াছড়ি।হয়তো মিথ্যার কারণেই সকালে সম্পর্ক হয় বিকালে ব্রেকআপ। যেন খুকীর হাতে কাচের চুড়ির মতো ঠুনকো।মিথ্যার উপর কোন কিছুই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।বরং ধ্বংস
অনিবার্য।
গল্পটা পড়ে গরীবের ঘোড়া রোগের কথাই মনে পড়লো। সুন্দর হয়েছে।
ছেলে মেয়েরা সত্য বলতে শিখুক,সৎপথে চলুক। অহেতুক জীবন যেন বিপন্ন না হয় সেদিক থেকে এই গল্প একটি অনবদ্য উদাহরণ।
রোকসানা খন্দকার রুকু
প্রথম মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই।
মিথ্যার উপর কোনকিছু প্রতিষ্ঠিত হতে আসলেই পারেনা।।।
শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
ওই শিরোনামটাই বলে দেয়….তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
আর কি-ইবা করার আছে। কৃতজ্ঞতা আপু।
তির্থক আহসান রুবেল
হাওয়াই মিঠাই… মুঠোয় পড়লেই ছোট দানা
রোকসানা খন্দকার রুকু
অল্প কথায় পুরো লেখার সারমর্ম। অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই। আপনি বুঝতে পেরেছেন কি বলতে চেয়েছি। ভালো থাকুন!!!
হালিমা আক্তার
আদার বেপারী জাহাজের খবরে লাভ নাই। তবু মাথা থাকলে মাথাব্যথা হতে পারে। মাথার আর কি দোষ।বাঙালিকে একটা বিষয়ে নোবেল প্রাইজ দেওয়া যায়। অতি আশিয্যের পাগলামি।
মিথ্যার শক্তি কই সত্যকে ঢেকে রাখে। মাজার নিয়ে কথা নাই বললাম। শুভ কামনা রইলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
মাথার দোষ দিয়ে লাভ আসলেই নাই।
কৃতজ্ঞতা অশেষ আপা।
রিতু জাহান
বৈষম্যের পৃথিবী,,
কেমন যেনো হুজুগে আমরা দোলা খাই।।
বেশি ভিড়ের দিকেইনছুটে চলি।
আমাদের বিচার বিবেচনা নেই। সিলেট হলো তেলো মাথায় তেল দেবার মতো অবস্থা, আর কুড়িগ্রামের বিষয়টা হয়ে গেছে ‘এক মরা ছকওয়ার কান্দা কয়বার কাঁদবে মানুষ’ এমন।
শোঅফ এটা সব সময়ই ছিলো ইদানিং খুব বেশি। ক্রাইম পেট্রোলে এমন কাহিনি দেখেছিলাম যে শোঅফ করার জন্য কি করুণ পরিণতি হয়। আসলে দোষটা কার? শতর্ক থাকার দায়টা আসলে প্রতিটা মানুষেরই।
গত দুই তিন দিন অসুস্থ থেকে বুঝেছি জীবন একটা মুহুর্ত ছাড়া আর কিছু না।
এ পৃথিবীর যেনো কোনোকিছুই আর সুশৃঙ্খল নেই।।
অল্প কথায় খুবই ভালো লিখেছো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
তেলা মাথায় আমরা তেল দিতে থাকি। বাংলাদেশের লন্ডন আরও ভরে উঠুক। কৃতজ্ঞতা রিতু।
রিতু জাহান
বাংলাদেশের লন্ডন যদি এখনি তাদের নগর পরিকল্পনা ঠিক না করে তবে মরবে,,,
ঐ যে বললাম, এক মরা ছাওয়ার কান্দা কয়বার কান্দে মা!
আজকে আমার ব্যাচমেটরা কুড়িগ্রামে ত্রান দিতে গেছিলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
বাহ্ দারুণ খবর!!
বোরহানুল ইসলাম লিটন
অতি রঞ্জিত কথন ও
মিথ্যার সায়রে হাবুডুবু খাওয়া জীবন একদিন চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়।
তবুও সমাজ সংসার আজ মেকির বিজ্ঞাপনে মাতাল!
সময়ের সুন্দর ও সাবলিল উচ্চারণ।
আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা জানবেন সতত।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অশেষ কৃতজ্ঞতা ভাই। ভালো থাকবেন।।।
ছাইরাছ হেলাল
সত্য আসিবে, মিথ্যে পালিয়ে বাঁচবে, এমন আশায়-ই থাকি।
রোকসানা খন্দকার রুকু
থাকি আশায়? কিইবা করার আছে?
খাদিজাতুল কুবরা
এটা পড়ে খুব মজা পেলাম। লেখকের রম্যরসে ভরা লেখনীতে সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে অসঙ্গতিগুলো। এখনকার সময়ে যা হচ্ছে হোক আমার কি বলে এড়িয়ে যাওয়াই ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
নিজে বাঁচলে বাপের নাম।
নার্গিস রশিদ
কুড়িগ্রাম এর কথাটি একেবারে ঠিক আছে। কই কুড়িগ্রামে যে তিস্তার ভাঙ্গন সেটা নিয়ে তেমন খবর নাই।
রোকসানা খন্দকার রুকু
সব সিলেট নিয়ে ব্যস্ত। বাংলাদেশের লন্ডন!!
অশেষ কৃতজ্ঞতা।।
নার্গিস রশিদ
রংপুর এবং তাঁর বিভিন্ন স্থান এর (সাদুল্লাপুর, গাইবান্ধা, বদরগঞ্জ, লালমনিরহাট, মগলহাট,খোলাহাটি,মহেন্দ্রনগর, বুরিমারি, বাহাদুরাবাদ ঘাট,কুড়িগ্রাম ) সাথে আমার জীবন ওতপ্রোত ভাবে জড়িত।
সাবিনা ইয়াসমিন
অকাট্য সব যুক্তি, তবুও মন যেন কেমন করে উঠে কারো অবুঝ ভুলের নির্মম পরিনতির কথা শুনে।
জীবন এমনই। কেউ দেখে পদ্ম পাতায় হীরে-মুক্তা, আর কারো চোখে মশা বাড়ানোর ফার্ম।
জীবন চলছে সময়ের নিয়মে আর নিজেদের কিছু মাথাব্যথা নিয়ে।
রোকসানা খন্দকার রুকু
তাই আমরাও থাকি কোনমতে আমাদের নিয়ে। কোনমতে বেঁচে বর্তে চলুক জীবন।
অশেষ কৃতজ্ঞতা।
অনন্য অর্ণব
এটা অসাধারণ লাগছে। তাইতো বলি রাত দুইটায় ও দেখি নামের পাশে সবুজ বাতি জ্বলে,,ঘুম আসবে কেমনে,,,মাথা ভর্তি চিন্তা যার ঘুরঘুর করছে 😄😄
রোকসানা খন্দকার রুকু
সবুজ বাতি অফ করতে হইবে বোঝা যাচ্ছে। শকুন চোখ পরেছে।😄😄
আমি বেশি রাত জাগি না। কদিন প্রচুর কাজ জমা ছিল তাই আরকি! তবে সারারাত সবুজ বাতি থাকলেও কেউই বিরক্ত করে না, আমার বন্ধুলিষ্ট অতি ডিসেন্ট।
শুভ কামনা🌹