গ্রামে গঞ্জে একটি পেশা আছে এখনো। পুকুরে স্বর্ণালংকার হারিয়ে গেলে তা খুঁজে দেয়া। এদের ডুবুরী বলা হয়, যদিও ডুবুরী শব্দের ব্যাপকতা অনেক। নারীদের কাছে স্বর্ণালংকার অত্যন্ত মূল্যবান। যাদের অনেক আছে তাদের তুলনায় যাদের খুব কম স্বর্ণালংকার আছে তাদের কাছে এর কদর অনেক গুন বেশী। দরিদ্র একজন নারীর হয়ত সম্বল একটি নাকফুল বা কানের ছোট একটি ঝুমকা, তা যখন কোনো পুকুরে পরে যায় বেখেয়ালে, তখন তার মনের হাহাকার এবং অলংকারের জন্য শূন্যতা ধনীরা ততটা বুঝতে পারবেন না। পুকুরে পরে যাওয়া স্বর্ণালংকার ডুবুরী দিয়ে খুঁজে পাওয়ার ঘটনা যারা দেখেছেন, তারা কেবল অলংকারটি উদ্ধার হবার ঘটনাটিই দেখেন। অলংকার হারান নারীর হারিয়ে ফেলা সুখ, আনন্দ, স্মৃতি উদ্ধারের অপেক্ষার প্রহরটি কজনে দেখতে পান? বুকের মাঝে ঢিবঢিব ঢিবঢিব করতে থাকা নারী সর্বোচ্চ আশা এবং বিশ্বাস নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন, কখন ডুবুরী খুঁজে পাবার সু- সংবাদটি দিবেন। পুকুরের তলদেশ থেকে কাদা মাটি চালনিতে বিছিয়ে পানি দিতে থাকার এক পর্যায়ে যখন সোনালী ছোট্ট অলংকারটি চিক চিক করে ওঠে, যার অলংকার সেই একমাত্র উপলব্দি করতে পারে খুঁজে পাবার প্রকৃত আনন্দ।
মাঝে মাঝে কিছু বিশ্বাস এবং ভালোবাসা হারিয়ে ফেলে মানুষ। ভালোবাসার ঘরে বাহ্যিকভাবে হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবেনা। তবে প্রকৃত ভালোবাসার চাষী ঠিকই বুঝতে পারেন যে ভালোবাসা আছে নিশ্চিত অভ্যন্তরে। নিজে ডুবুরী হয়ে প্রতি মুহুর্তে খুঁজতে থাকেন তার আপাত হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা। সময়, পরিস্থিতি হয়ত ধারণা দেবে, নেই নেই ভালোবাসা নেই। তারপরেও যুক্তিছাড়া আশা এবং বিশ্বাস এর শক্তিতে বর্ষীয়ান হয়ে নিজেই ডুবুরী হয়ে কাংখিত ভালোবাসাকে খুঁজে পায়।
এই খুঁজে পাবার আনন্দের সাথে অন্য কোনো আনন্দের তুলনা করা যাবেনা, যায়না।
আপাত ভালোবাসা শূন্য বাসাটি ভালোবাসার উজ্জল আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে, বিশ্বাসে ফিরে পাওয়ায়।
* ছবিটি আমার নিজেরই প্রিয় একটি বিশ্রামাগারের রাতের ছবি।
৩১টি মন্তব্য
সাবিনা ইয়াসমিন
শেষের দিকে লেখাটি অসম্পূর্ণ মনে হলো। হয়তো লেখক তাড়াহুড়ো করেছেন, হয়তো পাঠক (আমি) অধিক তাড়াহুড়ো নিয়ে পড়েছেন।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা কিছুটা তাড়াহুড়ো ছিলো। ইদানিং লেখায় মনসংযোগ রাখতে পারছি না। একারনে লিখছি না কিছু।
লেখা আরম্ভ করি একটা থিম চিন্তা করে, পরে আর কুলিয়ে উঠতে পারিনা।
ভালো থাকবেন,
শুভ কামনা।
সাবিনা ইয়াসমিন
আরাধ্য কিছু হাতে পাওয়ার চাইতে হারিয়ে যাওয়া নিজস্ব সম্পদ ( হোক তা ক্ষুদ্র ) হাতে পাওয়ার আনন্দ গুলো নিঃসন্দেহে স্বর্গীয় সুখ এনে দেয়। ভালবাসা সমৃদ্ধি লাভ করে তখনই, যখন ভালবাসা নির্ধারিত হয় এর প্রকৃত বাহকের মাঝে।
আপনার লেখার শিরোনাম গুলো বরাবরই আমাকে মুগ্ধ করে। একেকটি শিরোনাম যেন এককেটা সম্পূর্ণ পোস্ট!
মাঝে মধ্যে আমাদের ( পড়ুন আমাকে ) কিছু শিরোনাম ধার দিয়েন।
শুভ কামনা 🌹🌹
সুপর্ণা ফাল্গুনী
উপমাটা দারুন হয়েছে। যার যায় সেই বুঝে হারানোর ব্যথা আর সেটা যদি তার একমাত্র সম্বল হয় তখন সে অধীর আগ্রহ, বিশ্বাস নিয়ে অপেক্ষা করবেই। নিজেই ডুবুরী হয়ে যায় ভালোবাসার, সুখের জন্য। যখন কাঙ্খিত সম্পদ পেয়ে যায় তখনই তার ধৈর্য্যের, কষ্টের আরাধনা সার্থক হয়। আমি কি পেরেছি দাদাভাই আপনার ভাবনাটা ধরতে? শুভ কামনা রইলো
জিসান শা ইকরাম
যা লিখতে চেয়েছি তার সারাংশ ছোটদির মন্তব্যে চলে আসলো।
এই না হলে ছোট বোন?
শুভ কামনা।
সুপর্ণা ফাল্গুনী
ওয়াও। ধন্যবাদ দাদা ভাই। আমি পেরেছি। ভালো থাকবেন সবসময় শুভ কামনা রইলো
ফয়জুল মহী
অসাধারণ লেখা । ভালোবাসা , শুভ কামনা রইলো l
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ আপনাকে।
নতুন লেখা দিন।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
ভালোবাসা জিনিসটি আসলে আপেক্ষিক। ব্যক্তি এবং ক্ষেত্র বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন হয়। তবে কাঙ্ক্ষিত জিনিস খুঁজে পেলে মনে যে সুখানুভূতি আসে সে অনুভূতি ব্যক্ত করা কঠিন। আমরা প্রত্যেকেই কিন্তু নিজ জীবনে এক একজন ডুবুরী। ভালবাসার শুন্যস্থান পূরণ করা কষ্টকর।
ভালো থাকুন ভাই।
জিসান শা ইকরাম
যা বলতে চেয়েছি লেখায় তা আপনার মন্তব্যে পেলাম।
ধন্যবাদ ভাই।
শুভ কামনা।
তৌহিদ
ভালো থাকুন ভাইয়া।
কামাল উদ্দিন
ভালোবাসা খুঁজে পাবার ডুবুরীর বিশ্রামাগার এতোটা ঝোপঝাড়ের ভেতর কেন বড় ভাই?
জিসান শা ইকরাম
ঝোপঝাড়ের মধ্যেই এটি করা হয়েছে। দোতলার তিন রুমের একটি রুমের লাইট জ্বালিয়ে ছবি তুলেছিলাম।
ভালো থাকবেন ভাই।
শুভ কামনা।
কামাল উদ্দিন
জঙ্গুলে একটা বিশ্রামাগার আমার থাকলে বেশ ভালো হতো
প্রদীপ চক্রবর্তী
প্রকৃত ভালোবাসার চাষী ঠিকই বুঝতে পারেন যে ভালোবাসা আছে নিশ্চিত অভ্যন্তরে। নিজে ডুবুরী হয়ে প্রতি মুহুর্তে খুঁজতে থাকেন তার আপাত হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা।
দারুণ উপস্থাপনা করলেন দাদা।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ প্রদীপ, যা বুঝাতে চেয়েছি তা বুঝার জন্য।
শুভ কামনা।
সুপায়ন বড়ুয়া
“পুকুরের তলদেশ থেকে কাদা মাটি চালনিতে বিছিয়ে পানি দিতে থাকার এক পর্যায়ে যখন সোনালী ছোট্ট অলংকারটি চিক চিক করে ওঠে, যার অলংকার সেই একমাত্র উপলব্দি করতে পারে খুঁজে পাবার প্রকৃত আনন্দ। “
বলেছেন যতার্থ ভাইজান।
যার যায় সেই জানে ফিরে পাওয়ার আনন্দটা কি ?
ভাল লাগলো। শুভ কামনা।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ দাদা মন্তব্যের জন্য।
নতুন লেখা চাই।
শুভ কামনা।
বন্যা লিপি
প্রথম অংশের ভূমিকা পড়ে ভাবছিলাম কোনো সত্য কাহিনী হয়তো পাবো পরবর্তী অংশে।
পরবর্তী অংশে কিছুটা পড়ার পর মনে হলো, এখানেও কোনো উপমাধর গল্প পাবো…..হঠাৎ হোঁচট খেলাম…এটা কি হলো??
আপনাকে ঘিরে আছে অনেক এলোমোলো চিন্তা, ভয়, আতংক, মনখারাপের বাতাস।উড়িয়ে দেন।
ভালোবাসা এমনই এক শব্দ! ডুবুরী নামিয়েও খোঁজা সম্ভব না। যদি না ধরা না দেয় নিজ থেকে। যে পেয়ে যায় সে মহা ভাগ্য নিয়ে এসেছে পৃথিবীতে, যে পায়নি/ পাচ্ছেনা, সে বা তারা আজীবন ডুবুরী হয়ে হন্যে ডুব সাঁতারে নিঃশ্বাস ক্ষয়িষ্ণু করে চলেছে…..
জিসান শা ইকরাম
বাসায় থাকতে থাকতে মন মেজাজ এলোমেলো হয়ে গেছে আসলে,
একারণে বিক্ষিপ্ত চিন্তা এসে যায়।
ডুবুরীর বিশ্বাস থাকতে হবে যে সে খুঁজে পাবেই।
শুভ কামনা।
নাজমুল হুদা
ডুবরির সাথে ভালোবাসা সন্ধানীর যে মিল টানলেন তা সত্যিই শিল্পসম্মত। ভালোবাসা বেঁচে থাকুক যে না হারায়।
জিসান শা ইকরাম
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ছোট ভাই।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
আপাত ভালোবাসা শূন্য বাসাটি ভালোবাসার উজ্জল আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে, বিশ্বাসে ফিরে পাওয়ায়।
এ দুটি লাইনেই পুরা লেখার মহত্ব রয়ে গেছে, প্রথমে অবাক হয়েছিলাম গল্প পড়তে গিয়ে, পরে বুঝতে পারি এর মর্মকথা।
দারুণ লিখলেন ভাইজান।
জিসান শা ইকরাম
হ্যা ভাই, সঠিক লাইন দুটোই নিয়েছেন 🙂
জহুরির চোখ আপনার বুঝাই যাচ্ছে।
শুভ কামনা।
ইঞ্জা
শুভকামনা রইলো ভাইজান।
ছাইরাছ হেলাল
ভালুবাসা বলে কিচ্ছু নেই, ছিল ও না কোনদিন।
ডুবুরী হয়ে সময় নষ্ট করা ঠিক না।
জিসান শা ইকরাম
হু ঠিক বলেছেন।
একদম হক কথা।
আরজু মুক্তা
আমিও একবার ডুবুরিকে দেখেচিলাম। জীবনের বিনিময়ে ভালবাসা বিনিময়।
ভালো লাগলো
রুমন আশরাফ
চমৎকার লেখা। বিমোহিত হলাম।
পার্থ সারথি পোদ্দার
অসাধারণ লেখনি,প্রিয়জন।হারানো সুখ,আনন্দ,স্মৃতি ডুবুরির নিরলস প্রচেষ্টায় এভাবেই পুনরুদ্ধার হোক।
দালান জাহান
নিজেকে উপলব্ধি করা আরও খুঁজে বের করা।
সুন্দর লিখেছেন