প্রিয় মানুষ,
কেনো রাত ২ টার সময় তোমায় লিখতে ইচ্ছে করলো হঠাৎ, সে মোটামুটি একটা রহস্য। আছো কেমন বলো? খুব মনে পড়ছে তোমায়। সেই সাথে মনে পড়ছে তোমার সাথের চিঠিপত্রের দিনগুলো।
আচ্ছা কতদিন তোমার বাসার সামনের ডাকবাক্স টা চেক করো না বলো তো? কতশত প্রশ্ন করা আছে সেই চিঠিগুলোতে সে কি তুমি জানো?
আমার কিন্তু উত্তরগুলো চাই।
২৬-১২-১৬
= কি করছেন?
– স্টেশনের পাশের চায়ের দোকানে দুটো চায়ের অর্ডার করে বসে আছি?
= দুটো কেনো?
– আপনি আসবেন এক সাথে বসে চা খাবো তাই।
= আমি তো আসতামই কিন্তু শেষ ট্রেনটাও ছেড়ে গেছে, আজ তাই আর আসা হলো না।
প্রিয় মানুষ,
এই যে প্রিয় মানুষ, এতো করে ডাকি পড়ে পড়ে ঘুমাও নাকি? সাড়া দাও না কেন? কেউ ডাকলে বুঝি সাড়া দিতে হয় না?! আজকাল খুব মনে পড়ে তোমায়। রাত, সকাল, দুপুর, মাঝরাত কিচ্ছু মানা মানি নাই সুযোগ পেলেই বসে যায় তোমায় নিয়ে ভাবতে। কি এক অবিচার বলো?
খাচ্ছে আমার, পড়ছে আমার আর ভাবছে, গাইছে তোমায় নিয়ে।
২৮-১২-১৬
= কোথায় এখন?
– প্লাটফর্ম এ দাঁড়িয়ে আছি!
= প্লাটফর্ম এ কেনো?
– বাহ রে। আজ না ট্রেনে করে আপনার আসার কথা?
= সে তো যেতামই। টিকিট টাও কাটাই ছিলো কিন্তু টিপটা যে কোথায় হারিয়েছি খুঁজেই পাচ্ছি না।
প্রিয় মানুষ,
তুমি জানো? দীর্ঘশ্বাসগুলো আকাশে বাতাসে বাড়ি খেয়ে প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে। একবার কিংবা দুবার নয় বার বার। সব কিছু হারিয়ে গেলেও “দীর্ঘশ্বাস এর প্রতিধ্বনি ” হারায় না কখনও। ফিকে হয়ে আসা প্রতিধ্বনি এক সময় ফিরে এসে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দেয় কারন টাকে।
২২-১২-১৬
-আজ আসছেন তো?
= কোথায়?
-আমার এখানে। একসাথে সমুদ্রপাড়ে হাঁটা যাবে কিছুক্ষন।
= আজ আমি রেডিই ছিলাম ইভেন জগিং স্যুট পড়ে রেডি। বাস, ট্রাক, ট্রেন কিচ্ছু না পাইলে দৌঁড়েই চলে যাবো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আকাশটা এতো কালো হয়ে এলো যে ভয়ই লাগছে।
প্রিয় মানুষ,
ও হ্যালো হ্যালো। আজ আমি শুধুই বলবো আর তুমি শুধুই শুনবে। ঠিক আছে? লেপের মাঝে পা রেখে একা একা বসে আছি। কফি খাচ্ছি। তোমার মত এক মগ ভর্তি করে। আজকাল ধোঁয়া ওঠা কফি দেখলেই তোমার কথা মনে পড়ে। কেনো কফি দেখলেই তোমায় মিস করি বলো তো?
১৫-০১-১৭
= আজ কি করছেন?
– ছাদের উপর ট্যাংকির পাশে দুটো চেয়ার পেতে বসে আছি।
= কেনো?
– প্রথম কথা খুব রোদ, ২য় কথা আপনি আসছেন তাই।
= আজ আমি যেতামই যেতাম কিন্তু হঠাৎ এতো মাথাব্যাথা কি যে বলি।
– হা হা হা…. আপনি খুব মজা করেন। সে আমি জানি।
“আপনি একদিন হঠাৎ আসবেন দেখবো আমি অবাক হয়ে
প্রিয় মানুষ,
“পাগল” নাকি ভাবতে তুমি ডায়েরী হাতে থমকে গিয়ে।
২৬টি মন্তব্য
নীহারিকা
উফফ এত্ত অজুহাত? এত যার অজুহাত তার আর আসার দরকার নাই। 🙂
সুন্দর হয়েছে ডায়রি লেখা।
মেহেরী তাজ
ঠিক বলছেন তো আপু? তার আসার দরকার নাই?
পরের বার অজুহাত দেখিয়ে বকা খেলে আপনার কথা বলে দেবো মনে রাইখেন। :p
ধন্যবাদ আপু 🙂
মৌনতা রিতু
তা জগিং স্যুট পরে হেঁটে আসলে কিন্তু দারুন হতো, জানিস? দারুন লিখেছিসরে সোনা।
আজ তোর ভাইকে বললাম, একটা ডায়রি কিনে দাও। সে যে উত্তর দিলরে ;( তুই এর বিচার কর।
মুই তো কান্তে কান্তে শেষ ;(
মেহেরী তাজ
তুমি যখন বলছো ভাবীজান তখন দারুন তো হতেই হবে। 🙂
শোন ভাবীজান আমি আর সোনা নাই, চান্দি হয়ে গেছি। চান্দি কইয়া ডাকবা। মনে থাকবে?
ভাইয়া ডায়েরী কিনে দেয় নাই কারন কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছে মনে হয়। জানোই তো চুরের সংখ্যা( শুধু নয় ডাকাতও) বাইড়া গেছে বুঝই তো।
আমি বিচার টিচার করতে পারমু না ভাবীজান, তয় একটা ডায়েরী তুমারে কিনে দিমুনে। হবে তো?
এবার কান্না থামাও। চোখ লাল হইয়া গেছে। চোখের পানি মুইছা নাও।
প্রহেলিকা
এতো গ্যাপ দিয়ে লিখলে হবে? রাগ ফাগ করে না বুঝি!
২২-১২-১৬
এই তারিখের লেখাটা বারবার পড়েছি। ভালো নয় কেবল ভীষণ ভালো। দীর্ঘশ্বাসের আদলে হাহাকার হয়ে ফুটেছে।
ডায়েরি লেখা চালু থাকুক।
মেহেরী তাজ
রাগ ফাগ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জানেন তো? 😀
তবে গ্যাপ মিটানোর চেষ্টা করছি।
২২ তারিখের লেখাটার কারন যদিও আমি এখন মনে করতে পারছি না। তারপরেও হ্যা সম্ভবত আপনি ঠিকই বলেছেন…..
ডায়েরী রেখা চালু থাকবে। 🙂
ছাইরাছ হেলাল
আপনাকে সামলানো (লেখাকে) বেশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে!!
এ লেখা কোন পিচ্চির না, কে লিখে দিয়েছে সত্যি করে বলুন চুপি-চুপি (আমি কারও কাছে বলব না, মা-কালীর দিব্যি)
মেহেরী তাজ
পিচ্চিদের সামলানো তো একটু কঠিনই বলেন?
ভাইয়া আপনি যখন এতো করে বলছেন তাইলে বিদ্যা দেবীর দিব্যি করে চুপি চুপি বলেই ফেলি এই লেখা আমার। কাওকে কে আবার বলে দিয়ে না কিন্তু। 😀
নীলাঞ্জনা নীলা
পিচ্চি আপু যা লিখেছেন, ডায়েরী লিখতে মন চাইছে এখন।
আচ্ছা আগে বলে নেই এতো বেশি অজুহাত মানুষটার, ঠ্যাঙানো দেয়া দরকার।
দারুণ লিখেছেন। এক, দুই, তিন সত্যি!
মেহেরী তাজ
আপু আমার থিউরি হচ্ছে যখন যেটা করতে মন চায় সেটা অসম্ভব না হলে করে ফেলায় উচিৎ। 🙂
আপু আপু আপু থামুন থামুন এভাবে না ঠ্যাঙাইলে হয় না? মানে এবারের মত ক্ষমা করে দিলে আর কি?!
ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকুন।
নীলাঞ্জনা নীলা
থামলাম। থাক ঠ্যাঙানো বাদ দিলাম।
আমি আবার ঠ্যাঙাতে গেলে নিজের হাতেই ব্যথা পাই। :p
আমি কিন্তু মনে যেটা চলে আসে, সেটাই করে ফেলার চেষ্টা করি। যেটা পারিনা, সেটার বিকল্প করি আর কি! 🙂
মেহেরী তাজ
ধন্যবাদ আপু। আর আমার তো একটা দায়িত্ব আছে বলেন। আপনার যদি হঠাৎ লেগে যায়। 🙂
আরিব্বা আমি যা পারি না তা পরের বারের জন্য রেখে দেই অথচ আপনি বিকল্প করে ফেলেন? ভালো আইডিয়া তো। 🙂
মোঃ মজিবর রহমান
এই তা তাজ মেয়ে কিভাবে মাথায় আসে বলুন্ট !! আমই দেখছি আর পড়ছি এতো সুন্দর উপস্থাপন । খুব ভাল লাগা রেখে গেলাম।
মেহেরী তাজ
মাঝে মাঝে লেখারা উড়ে চলে যায় ভাইয়া আবার মাঝে মাঝে এসে উঁকি দিয়েও যায়।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
শুন্য শুন্যালয়
ও বুবু এই লেখাটাতে লেখকের জায়গায় আমার নাম লিখে দেই? 🙁 কেমন করে লিখলি এমন? এতো সুন্দর হয় লেখা!!
আমি এই প্রিয় মানুষটাকে চিনি চিনি লাগছে কেন?
আচ্ছা শোন, লেখা বাদ ডায়রি টা আমাকে দিয়ে দে। না জানি আরো কি আছে ওর মধ্যে।
প্রিয় প্রিয়, প্রিয়তে নিলাম প্রিয় মানুষ। (3
মেহেরী তাজ
এই লেখাতে তোমার নাম? সে দিতেই পারো। কিন্তু কেউ যদি বলে তাজীও পোষ্ট তাইলে কিন্তু আমার দোষ নাই। :p
বুবু প্রিয় মানুষেরা একটা মডেল হয়। সবার তাকে চেনা চেনা লাগে। তাই হয়তো তোমারও লাগছে। 🙂
আমার ডায়েরী নিবে? নাও সমস্যা নাই। কিন্তু প্রত্যেকটা লেখা যে অদৃশ্য কালি দিয়ে, তুমি তো কোন লেখাই দেখবে না। হে হে হে
প্রিয় তে নিবে সে ঠিক আছে কিন্তু প্রিয় মানুষকে নিও না আবার। :p
ইঞ্জা
এতো অজুহাত দিলে কি প্রিয় মানুষের কাছে যাওয়া যায় বুবু, আচ্ছা বুবু প্রিয় মানুষকে অপেক্ষায় রাখাতেও কি মজা আছে, নাকি কষ্ট, অনেক কষ্ট। 🙁
মেহেরী তাজ
ভাইজান যাকে বারবার অজুহাত দিচ্ছি তার কাছে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও তাড়া নেই কিন্তু প্রিয় মানুষের কাছে যাওয়ার ইচ্ছে এবং তাড়া দুই আছে। তবে অপেক্ষাতে মজাও আছে। অপেক্ষা না থাকলে কি আমি লিখতে পারতাম? বলেন?
ইঞ্জা
হুশ করে মাথার উপর দিয়ে ডাইভ মারলো কথা গুলা, কঠিন মানুষ আপনি আর তাইতো আপনি আমার বুবু। 😀
মেহেরী তাজ
তাইলে সম্ভবত বাউন্সার ছিলো ভাইজান। পরের বল সাবধানে করবো কথা দিচ্ছি। 🙂
আমি কঠিন? হ্যা ভাইয়া কঠিন। কারন সব মানুষই তো কঠিন বলেন? যে জন্য আমি আপনার বুবু ঠিক সেই জন্যই আপনি আমার ভাইজান। 😀
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
যখন হবে দেখা তার সনে ডাক দিয়েন ঝাল মুড়ি খাওয়াবোনে।লেখার মান দিন উন্নতির দিকে। -{@
মেহেরী তাজ
ভাইয়া ঝালমুড়ি খাওয়াবেন? টেনশন হচ্ছে ঝালে না আবার সে লাল হয়ে যায়।
আপনি উন্নতি দেখছেন? আমি তো কিচ্চু দেখি না।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ব্লগার সজীব
ওস্তাদ লেখাটি কয়েকবার পড়েছি। সমস্যা হচ্ছে মন্তব্য করতে। এত ভাল লেখায় কি না কি মন্তব্য করি আর লেখাটি বিরক্ত না হয়ে যায়। লেখাটিতে আমি প্রাণের অস্তিত্ব অনুভব করছি। ‘ কিরে সজু কি লিখলি আমার গায়ে?’ এমন প্রশ্ন করে ফেলবে লেখা এই ভয়ে তো মন্তব্যই করছি না 🙁
মেহেরী তাজ
ঠিক আছে শিষ্য মন্তব্য করার দরকার নাই। বলা যায় না লেখা কথা বলে উঠতেই পারে। ভূতের লেখা তো।
তুমি গেছো কই? লেখা দাও।
চাটিগাঁ থেকে বাহার
পাগল না হলে প্রেম করা যায় না।
মেহেরী তাজ
প্রেমের সাথে এই লেখার কোন সম্পর্ক আছে বলে আমি মনে করি না। তবে হ্যা ভালোবাসার সাথে সম্পর্ক আছে।