নীল খামে এসেছে চিঠি
মন বিষ্মিত!এ আমার খুবই চেনা,
তবে,
এত কাল কোথায় ছিলে তুমি?
আর,এলেই যখন
নীল খামে কেনো?।
চিঠিটির ভাজ খোলতেই
মনে পড়ে সে দিনের কথা
সে দিন অজ্ঞ আমি,
এই ভাজ খোলতে দেরী হওয়াতে
ধরা পড়ে কায়া কর্তার শাসনে।
নীল খামের সেই ভাজ দক্ষ কারিগরের
গোলাকার হাতে লেখা এক একটি অক্ষর,
ভাজ জয়ের পর প্রতিবার বেলী ফুলের
মিষ্টি সুগন্ধি নাসিকাকে শিহরিত করত,
আজ কেনো!
আজ কেনো সেই ঘ্রান নেই
একি!
আতরের এক বিশেষ ঝাজালো ঘ্রানে
প্রান বুঝি যায় যায়,
তবে কি নীল খাম মানে
দুঃস্বপ্ন, সু-স্বপ্নের মরন!
বিশ্বাস হয় না,
এক সময় এই আমিই
নিয়তির কাছ থেকে
হাত পেতে চেয়ে নিয়েছিলাম সম্পর্কের লম্বা
আয়ুকাল,
নিয়তি হয়তো ভুলে গিয়েছিল সেই আবদারটুকু
ভাজ জয়ে চোখকে অশ্রুজলে সিক্ত করে
জানালো বিদায়,
দীর্ঘ দশটি বছরের
প্রেম লীলার অবসান।
ঘটনার অন্তরালে
দশটি বছর ছিলাম নীল খামহীন
অথচ একদিন!এক দিন এই একটি নীল খাম পাওয়া
জীবনে কত গুরুত্বই না বহন করত
একটি নীল খাম পাওয়া যেন
সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি।
তোর সাথে দেখা হয় কি তাহার
আমিতো বন্ধু বহু দূর
ইচ্ছে হলেও দূরত্ব যে দেয়াল,
দূরাগ্য ক্যান্সারে লড়ছি
জীবনের সাথে,
হয়তো দেখা হবে না আর…।
সত্যিই বন্ধু,
তোমার কথাই সত্যি
সে দিন হঠাৎ দেখা তাহার সঙ্গে
সঙ্গতঃ কারনে এই আমাকে
চিনতে না পারাটাই ছিলো
তাহার সরল কায়ার মায়া,
তারপরও
সে আমার বাল্য কালের বান্ধবী।
শিল্পের কিছুটা পরশ পেয়েছিলাম বলে
মেয়েদের সাথে বন্ধুত্বটাই ছিলো আমার বড্ড বেশী
ছেলে বন্ধু যে ছিল তা নয়
যখনি শীত লক্ষ্যায় আড্ডা দিতাম
বিশ পচিশ হতো৴৴৴
অবশেষে সে চিনল আমায়
দ্বিতীয় রমণী হয়ে,
আর আমি চিনলাম তাহাকে
এক প্রেমহীন হৃদয়হীনা ;
কি রে কেমন আছস?
ভালো
তুই?
ভালো,
চিনতে এতো দেরী হলো যে?
অনেক বদলে গেছিস,
কেমন যেন বেটা বেটা
তুইতো বুড়ো মহিলা…হা হা হা।
নীল খামের প্রতিটি অক্ষরে যেন
এক একটি হতাশার দীর্ঘশ্বাস
সে জীবনকে ছেড়ে দিয়েছিল নিয়তির কাছে
সে দিনই,
যে দিন প্রিয় বান্ধবীর ভালবাসার রং বদলায়
অথচ এই সেই রমণী
ষোল আনা বঙ্গ ললনার ন্যায় বন্ধুর মায়ের প্রত্যুত্তোরে বলেছিলো,
মা,
ইট পাথরে শীতল ঘরের চেয়ে
স্বামীর মাটির ঘরই আমার বেহস্ত ,
অথচ এই সে,
ছলনাময়ী নারীর ন্যায়
হঠাৎ বদলে যায়;
বুঝিয়ে দেয় প্রেমিকের হৃদয়কে,
কতটা সহজে নারীরা নতুন শাড়ীকে আপন করে
সর্পের ছোলমের ন্যায় মন বদলায়।
নীল খামে কষ্টের যাতনাগুলো
আমাকে ভাবায়
কি বা প্রয়োজন ছিলো জীবনকে
নিঃশেষের পথে ধাপিত করার
হাজারো ভালবাসার মাঝে
জীবনতো একটাই,
সে যদি পারে,তুমি কেনো পারবে না বন্ধু
জীবনকে,
নতুন জীবনের রং রসে সাজাতে।
নীল খামের শেষ চরণে লিখেছিলো
“যদি আমি না থাকি
এ ধরণীর বুকে আর,
জেনে রেখো পৃথিবীর যত,
দোষী আমি নই
প্রেমহীন ঘূনে পোকাড়া
ধীরে ধীরে আয়ুকে করেছে ক্ষত বিক্ষত।
সত্যি,
আজ মনে পড়ে বার বার বন্ধু তোমায়
হয়তো নীল খামটি তোমার ঠিকানায় পৌছবে ঠিকই
আর,
সেখানে তোমার সব কিছুই আছে নাম-ধাম
শুধু
তুমি নেই,
থাকবে না নীল খামটি স্পর্শ করবার
তোমার ক্ষমতা,
যেখানে থাকো সেখানে যাবার মানুষের যে
বরাবরের অক্ষমতা।
১৩টি মন্তব্য
মৌনতা রিতু
নীলখামের চিঠি তার সঠিক ঠিকানাতেই পৌছবে। সেখানে আতরের গন্ধ নয় ফুলের গন্ধই থাকবে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ আপু হয়তো অনেক দেরী যাবে -{@
ইনজা
অসাধারণ এক প্রেমময় ও বিরহগাথা পড়লাম, ভালো লাগা রইল।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ ইনজা ভাইয়া -{@
জিসান শা ইকরাম
নীল খামের চিঠি, মনে পড়তেই হৃদয়ে দোলা লাগে।
চিঠির শেষটা বিষাদ ময় 🙁
ভাল লেগেছে মনির ভাই।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ ভাইয়া এ এক অতৃপ্ত ভালবাসার শেষ পরিণতি -{@
মামুন
মন বিষন্ন হল।
ভালো লেখেছেন। শুভেচ্ছা।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ মামুন ভাইয়া,আমি খুবই খুশি আবারো সোনেলায় আপনাকে নিয়মিত পেয়ে। -{@
আবু খায়ের আনিছ
পদ্যকবিতা বা গীত কাব্য। ভালো লেগেছে ভাই।
নীলাঞ্জনা নীলা
নীল খামের চিঠি এ জীবনে পাইনি।
মনির ভাই আপনার চিঠি পৌঁছে যাক এ কামনা করছি।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
পৌছবে না আর সে সময় নেই।ধন্যবাদ আপনাকে -{@
মেহেরী তাজ
মন খারাপের লেখা! 🙁
তবে লেখা টা বেশ ভালো হয়েছে ভাইয়া…. 🙂
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
ধন্যবাদ আপু -{@