চর্যাপদে সংগীত ও প্রেম

স্বপন দাস ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩, সোমবার, ১১:৪৮:৩৫অপরাহ্ন বিবিধ ৭ মন্তব্য

বাংলাভাষার প্রাচীনতম সাহিত্য চর্যাপদ ।।
দশম ও দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যে এই গীতিপদাবলীর রচয়িতা ছিলেন সহজিয়া বৌদ্ধ সিদ্ধ আচার্যগণ।
চর্যার পদগুলি বিভিন্ন রাগ-রাগিণীর নামে থাকায় মনে করা সংগত, চর্যাগুলি সুরযোগে গাওয়া হতো।
৪৭ টি পূর্ণ চর্যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি —- পটমঞ্জরী রাগে– ১১ টি পদ মল্লার রাগে- ৫ টি
ভৈরবী রাগে – ৪ টি কামোদ রাগে -৪ টি, বরাতী রাগে – ৪ টি, গুঞ্জরী রাগে – ৪ টি, গৌড় রাগে – ৩ টি, দেশাখ রাগে – ২ টি, রামকেলী / আশাবরী / মালসী রাগে – ২ টি করে এবং অরু / দেবগিরি / ধানসী ও বঙাল রাগে – ১ টি করে পদ রচনা করা হয়েছে ।।

নরনারীর প্রেম : শবরপাদের একটি পদে বিমূর্ত হয়েছে এভাবে ——–
” উঁচা উঁচা পাবত তঁহি বসই সবরী বালী।
মোরনগি পীচ্ছ পরহিণ সবরী গীবত গুঞ্জরীমালি
উমত সবরো পাগল না কর গুলী গুহাডা তোহৌরি।
পিতা ঘরণী ণামে সহজ সুন্দারী ।।
ণা ণা তরুবর মৌলিলরে গ অনত লাগেলি ডালী।
একেলী সবরী এ বণ হিন্তুই কর্ণ কুন্ডলবজ্রধারী।

=== পদ: ২৮ । অর্থ : উচু পর্বতে শবরী বালিকা বাস করে। তার মাথায় ময়ুরপুচ্ছ, গলায় গুঞ্জমালিকা। নানা তরু মুকুলিত হলো । তাদের শাখা প্রশাখা আকাশে বিস্তৃত হলো । শবর- শবরীর প্রেমে পাগল হলো। কামনার রঙে তাদের হৃদয় রঙিন ও উদ্দাম । শয্যা পাতা হলো । শবর- শবরী প্রেমাবেশে রাত্রিযাপন করল ।।

এছাড়া ও ঢেনঢ্ন এর পদ :
” টালত মোর ঘর নাহি পরবেষী।
হাড়ীত ভাত নাহি নিতি আবেশী ।।”
=== পদ – ৩৩ । অর্থ :
টিলার উপর আমার ঘর, কোন প্রতিবেশী নেই।
হাড়িতেও ভাত নেই, তবু নিত্য অতিথি আসে ।।

মানব-মানবীর পার্থিব প্রেমের তীব্র আকুতিতে মূর্ত গুঞ্জরীপাদের একটি পদ :
” যোইগি তঁই বিণু খনহিঁ ন জীবমী
তো মুহ চুম্বী কমলরস পীবমী। ”
=== পদ – ৪ । অর্থ :
” যোগীনি, তোমাকে ছাড়া মুহুর্তকালও বাঁচবোনা।
তোমার মুখচুম্বন করে কমলরস (পদ্মমধু) পান করব ।।

২৬৫২জন ২৬৫০জন
0 Shares

৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ