মাহবুবুল আলম ।।
মধুর এক যৌথজীবন []
প্রতিদিন এক জোয়ারের নদী আমার
পাশে এসে ঘুমায়, নদীটি কুলকুল
বয়ে যায়, স্রোতের ইশারায় ডাকে;
আমিও তখন তীব্র তৃষ্ণার্থ বুকে
নদীর একদম কাছাকাছি সিক্ত
উপত্যকায় সাঁতারে নেমে পড়ি।
যেখানে এক স্বর্গীয় অমৃতধারা
কাটালের কুন্ডলী, ঘূর্ণিঝড়ের
উৎস মুখের ন্যায় টেনে নেয়,
টেনে নেয় অন্য এক উৎত্রাসে।
তা আমি আগাগোড়া উপভোগ করি
অবাধ সাঁতার কেটে কেটে
উচ্ছ্বাস আর উত্তেজনার
মিলিত দ্বৈরথে চড়ি বুকের ওপর,
সেও আমায় অক্টোপাসের বাঁধনে বেঁধে
টেনে নেয় আরও গভীরে একেবারে
উপত্যকার গুপ্তগুহায়।
সাঁতার শেষে ক্লান্ত ঘামের শরীর মেলে
দেয় পানকৌড়ির ডানা, মুছে গেলে ঘাম
অন্তিম চুম্বন শেষে ওঠে আসি নদীতীরে
যেখানে উর্বর কাদামাটি, আর ক্লান্ত বিধ্বস্ত
নদী তখন হাই তোলে ঘুমের বিছানায়।
দিন শেষে নদী আবার গোধূলীর রঙে
সুরভিত প্রসূনের পরাগরেণু মেখে
আরও এক মায়াবীরাতের অপেক্ষায়
সেজেগুজে বসে থাকে, এভাবে
দিন আসে দিন যায়, শীত গ্রীষ্ম বর্ষায়
সাঁতার কেটে কেটে পার করি যৌথসময়।
এভাবেই নদী তার গুছানো শয্যায়
মাতিয়ে রাখে প্রতিদিন, আমিও
আষ্কারা পেয়ে নিত্যদিন তার
অমৃতসুধার পান করে বার বার
সাঁতারের উল্লাসে মেতে ওঠি
সাঁতার কেটে কেটে এখন আমি
পেশিবহুল এক টাগরাপুরুষ।
পরীক্ষা।।
প্রভু হে, প্রতিদিন তোমার কাছে
কত কিছু চাই, কত প্রার্থনা করি
অভিযোগ লিখে যাই তোমার দরবারে
নিত্য সেজদা দিই জায়নামাজের শিরে।
তোমার প্রার্থনায় নিমগ্ন থেকে থেকে
কপাল, হাঁটু পায়ের পাতায় পড়ে গেছে
পঞ্চমুখির কড়, তবুও গলে না মন
টলেনা তোমার দয়ালুহৃদয়, বার বার
আমাকেই পাঠাও পরীক্ষার সমন।
অথচ যারা মাথা নত করে অগ্নি আর
পাথরের কাছে তারাই সমৃদ্ধ হয়
রত্নসম্ভারে গৌরবের মঙ্গলচেরাগ
জ্বালিয়ে দাও তাদেরই ঘরে ঘরে।
দিনকাল||
কত মেঘ উড়ে যায়
কত রোদ পুড়ে যায় বাতাসে;
তারাদের সব হাসি
সব খুশি মিশে যায় আকাশে।
আমারই এ-মন ঘিরে রাখে হতাশা
মেঘেরা উড়ে যায় সুদূরে
গাঙচিলের কান্না ছুঁয়ে যায় মন-প্রাণ
হৃদয়ের কান্নায় সে পুড়ে!
কে দূরে গায় গান
কান্নার সুর তুলে বাঁশুরীর বাঁশিতে
সেই সুর বিঁধে যায়
হৃদয়ের গভীরে সুখ নেই শুষ্কহাসিতে।
বসে থাকি নির্ভার||
আমার কোনো তাড়া নেই।
এসেছি যখন যাবোইতো
নির্ভার মনোসংযোগে তাই
কাটাতে চাই বাকিটা জীবন।
তবু, বার বার ডাকে কোন
অনিকেত বাঁশি, কোন অশরীরি
ছায়া পাশে এসে বসে
বলে শুধু যাবার কথা।
আমি কার কাছে যাবো
কোথায় যাবো জানা নেই
জানা নেই গন্তব্যের ঠিকানা।
তাই, যাওয়ার কোনো তাড়া নেই
বসে আছি বসে থাকি নির্ভার।
১২টি মন্তব্য
এস.জেড বাবু
প্রথম লিখায় মিষ্টি শব্দের প্লাবন বয়ে গেছে ভিন্নতায়।
এ পরিক্ষার ফলাফল হয়ত ধৈর্য্যর সাথে ব্যাস্তানুপাতিক
হয়ত অপেক্ষায় মিলবে ফল।
তৃতীয় লিখাটা সহজ ভাষায় দুরদর্শী-
মনে হচ্ছে কিছুটা উদাসীন-
আমি হয়ত ভুলও হতে পারি।
শুভেচ্ছা রইলো
মাহবুবুল আলম
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে! ভাল থাকবেন!
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার সব কবিতা গুচ্ছ
দুর্দান্ত উপস্থাপন
২ নং কবিতাটি বেশি ভালো লেগেছে।
মাহবুবুল আলম
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা আপনাকে!
সাবিনা ইয়াসমিন
বাহ! কবিতায় দেখছি যাদু-মধুর ছড়াছড়ি। আপনার এবারের সব গুলো কবিতাই দারুন হয়েছে।
* প্রভু তাকেই পরীক্ষার সমন বারবার পাঠান, যে প্রতিটি পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হতে পারে।
* গন্তব্য জানা থাকুক বা না থাকুক,
প্রত্যাশিত গন্তব্য নিজেই একদিন সামনে হাজির হবে।তাই নির্ভার হয়ে থাকাই শ্রেয়।
* নদী… যৌথ সময়কালের বর্ননা শৈল্পিক ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
শুভ কামনা 🌹🌹
মাহবুবুল আলম
আপনার জন্যও শুভ কামনা। ভাল থাকবেন প্রিয়দর্শিনী কবি!
হালিম নজরুল
“কত মেঘ উড়ে যায়
কত রোদ পুড়ে যায় বাতাসে;
তারাদের সব হাসি
সব খুশি মিশে যায় আকাশে।”
————বেশ ভাল লাগলো।
মাহবুবুল আলম
ধন্যবাদ ও অবিরাম শুভেচ্ছা!
জিসান শা ইকরাম
মধুর এক যৌথ জীবনটাই বেশী ভাল লাগল।
কত সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করলেন সব কিছু।
শুভ কামনা।
মাহবুবুল আলম
ধন্যবাদ, জিসানীর পছন্দ হলে আরো পুলকিত হতাম! হাহাহাহা!
সঞ্জয় মালাকার
প্রভু হে, প্রতিদিন তোমার কাছে
কত কিছু চাই, কত প্রার্থনা করি
অভিযোগ লিখে যাই তোমার দরবারে
নিত্য সেজদা দিই জায়নামাজের শিরে।
চমৎকার সব কবিতা গুচ্ছ, পড়ে মন ভরে গেলো দাদা।
মাহবুবুল আলম
ধন্যবাদ দাদা। ভাল থাকবেন। অবিরাম শুভেচ্ছা !