বেশ কয়েক বছর ধরেই আমি আমার স্কুল এবং আশেপাশের কিছু পরিচিত স্কুল এবং ঢাকার বাইরেও কিছু স্কুলে বাচ্চাদের ছড়া, কবিতা বিজ্ঞান বা নানাধরনের বই উপহার দিয়ে থাকি। তো এ বছরে আমি পেয়ে গেলাম এমনই এক বই যা আমার অনেক অনেক প্রিয় ব্লগার ভাইয়া গিয়াস লিটনভাইয়ার লেখা। বইটার নাম ক্ষুদে জিনিয়াসদের কথা। এ বইটা ছিলো স্কুলের ছোট বাচ্চাদের জন্য একেবারেই এপ্রোপ্রিয়েট! অবশ্য বই বের হবার অনেক আগে থেকেই এই বইএর ভেতরের কথা বা কন্টেন্টের সাথে আমি পরিচিত ছিলাম। তখনও ভাবতাম ভাইয়ার ব্লগে লেখাগুলি আমি প্রিন্ট করে নিয়ে গিয়ে বেবিদেরকে শোনাবো কিন্তু সেই লেখাগুলোই যখন বই এর আকারে পেয়ে গেলাম আমাকে আর তখন ঠেকায় কে!

মনে আছে ছোটবেলাতে আমিও এমন আমার বয়সী বা কোনো ক্ষুদে জিনিয়াসের কৃতিত্বে বিমোহিত হতাম। এখন আমি অনেক বড় হয়েছি কিন্তু নিশ্চয় আমারই মত আমার ছেলেবেলার মত বাচ্চারাও এসব ক্ষুদে জিনিয়াসদের কথা জেনে অবাক হবে, উৎসাহিত হবে। ভাইয়া এমনিতে রম্যকার হিসাবে একজন সফল লেখক হলেও ভাইয়ার এই দেশ বিদেশের জ্ঞানী গুণী ও জিনিয়াসদের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেবার ব্যাপারটাও বেশ মহতী উদ্যোগ! তাছড়াপ আজকাল আর বাচ্চাদের কথা ক,জনাই ভাবে? সবাই তো কবিতা গল্প সবই শুধু বড়দের জন্যই লেখে। ভাইয়ার বইটি এই ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম ছিলো।

যাইহোক ভাইয়ার এ বইটিতে প্রথমেই আছে চার বছরের আইনস্টাইন সুবর্ণের কথা। সে নাকি বিদ্যার জাহাজ! এ বয়সেই নাকি সে হাভার্ডে ভর্তিও হবে। সবচেয়ে মজার কথা এই পিচ্চিটা বাংলাদেশেরই সন্তান। এই পিচ্চিটার মা বাবা ভাইটাও কম জিনিয়াস নয় তবে এই ক্ষুদে জিনিয়াস বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে, সাথে আমাকেও। বাকী কথা বই এর পাঠকদের জন্যই তোলা থাক।

এই যে পিচ্চি জিনিয়াস সূবর্ণ :)

এরপরেই আছে শুভমের কথা। মাত্র ১৩ বছরেই আস্ত একটা রোবট কোম্পানির মালিক হয়েছে শুভম। মানুষ সারাজীবনে সাধনা করেও অনেক সময়ই যা পায়না এই শুভম তা পেয়েছে ১৩ বছরেই। তার প্রযুক্তি বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। রোবট চালিত ব্রেইল প্রিন্টার তৈরী করেছে সে। তার এই আবিষ্কার ও বয়স শুধু চমকে দেবার নয় এই আবিষ্কার দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের উচ্চ শিক্ষায় কাজেও লাগবে। অনেক অনেক শুভকামনা শুভমের জন্য প্রাণ থেকেই।

ক্ষুদে জিনিয়াস শুভম

রুবেন পাল মাত্র ৮ বছর বয়সেই সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও গেমস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্রুডেন্ট গেমস-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রুবেন পাল। পড়ছে মাত্র ক্লাস থ্রীতে। এই বয়সেই এত বড় অর্জন। মেধা মনন ও বুদ্ধিমত্তার সঠিক প্রয়োগ হলেও কি সম্ভব! হয়তো হ্যাঁ হয়তো না তবুও জিনিয়াস জন্ম নিয়েছে জন্ম নেয় যুগে যুগেই।

ইউটিউবে রুবেন

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদে প্রোগ্রামার বাংলাদেশের রূপকথা। মাত্র ৭ বছর বয়স তার । কিন্তু এ বয়সেই সে কারো সহযোগীতা ছাড়াই শিখে ফেলেছে কম্পিউটারের খুঁটিনাটি নানা কিছু। ওয়ার্ল্ড নিউজ এজেন্সী রুপকথাকে বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী প্রোগামার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই সব বিস্ময় শিশুদেরকে নিয়ে ভাইয়ার বই ক্ষুদে জিনিয়াসদের কথা।

এছাড়াও আছে দাবা জিনিয়াস ফাহিমের কথা। পুরো ফ্রান্সকেই তার দাবার মেধা দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে। এই বইটিতে আমরা জানতে পাই ক্ষুদে বীর প্রতীক শহীদুল ইসলাম লালুর কথা। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারী সর্বকনিষ্ঠ যোদ্ধাই ছিলো সে। তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ১৩। এ ছাড়াও বাংলাদেশের ১৪ বছর বয়সী তাউস, ক্ষুদে দাবাড়ু ফাহাদসহ রয়েছে নানা ক্ষুদে জিনিয়াসদের কথা।

ভাইয়ার ভাষায় “এরকম আরও অনেক ক্ষুদে জিনিয়াস আছে যারা খুব অল্প বয়সেই ক্রীড়া, জ্ঞান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নানা শাখায় নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তুলেছে এবং হয়েছে নন্দিত, পেয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি। ক্ষুদে পাঠক তথা শিশু কিশোরদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এই গ্রন্থে কয়েকজন অল্প বয়সী ‘জিনিয়াস’ এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে যারা বয়সে ছোট হলেও তাদের কাজকে ছোট করে দেখার কোন সুযোগই নেই।”

ঠিক তাই এমন সব আরও আরও দেশ বিদেশের খ্যাত ক্ষুদে মেধাবীদেরকে দেখতে চাই তোমার বই এর পাতায় ভাইয়া। নেক্সট বই মেলাতেও চাই এমন এমন আরও আরও বই! বইটির প্রচ্ছদটিও দারুন হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে তোমার জন্য রইলো এক রাশ শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা ভাইয়ামনি।

অনেক ভালো থেকো এবং আরও আরও লিখে যেও।

৫২৯জন ৫২৯জন
0 Shares

১১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ