কিছুদিন আগে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়েছিল পদ্মা সেতুর জন্য মানুষের মাথা লাগবে। সেই গুজব ছেলেধরা সম্পর্কে একটা সম্পূরক আতঙ্ক তৈরী করল। ফলাফল দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে নারী পুরুষ নির্বিশেষে কয়েকজন মানুষকে সংঘবদ্ধভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলা বা জখম করা। কয়দিন আগে দুদকের পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফের একটা স্ট্যাটাসে পড়লাম মোবাইল চোর সন্দেহে একটা কিশোরকে সবাই মিলে হিংস্রভাবে মারছিল।
এই যে গণপিটুনির প্রবণতা, এটা কেন হচ্ছে সেটা নিয়ে কি আমাদের দেশের সমাজ এবং অপরাধবিজ্ঞানীরা কিছু ভাবছেন? যদি ভেবে থাকেন, তাহলে তাদের সে ভাবনা/ গবেষণা নিয়ে আমাদের পুলিস প্রশাসন তাঁদের সাথে বসে এসব প্রতিরোধে তাদের করণীয় সম্পর্কে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা কি চিন্তা করছেন?
এই পোস্টের সাথে সংযুক্ত ছবিটি গণপিটুনি নিয়ে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনার খবরের স্ক্রীনশট। এই স্ক্রীনশট থেকেই বোঝা যায় এটা প্রবণতা কতটা আশংকাজনক পর্যায়ে পৌছেছে! আমার মনে হয় এর আগে ঘটা বিভিন্ন গণপিটুনির ঘটনার বিচার হয়নি দেখে এসব ঘটনা এখনও ঘটছে। তখন না হয় প্রযুক্তির এতটা প্রসার হয়নি দেখে গণপিটুনির ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা কঠিন ছিল। কিন্তু বর্তমানের চারপাশের এত এত সিসিটিভির ফুটেজ, সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও, ছবি ব্যবহার করে সব না হোক অন্তত কিছু গণপিটুনির ঘটনার দায়ী ব্যক্তিকে তো খুঁজে বের করা সম্ভব! এরকম দায়ী কিছু মানুষকে চিহ্নিত করে তাদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে আমার মনে হয় এই প্রবণতার রাশ টেনে ধরা সম্ভব হবে। পাশাপাশি, এই প্রবণতার সমাজ মানসিক কারণ খুঁজে বের করে সচেতনতা সৃষ্টি করাটাও জরুরি।
ছেলেধরা সন্দেহে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার খবরটি পড়ুন এখানে ক্লিক করে।
১৬টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
এই সংস্কৃতি থেকে আমরা আর কখনো মুক্ত হতে পারব কিনা জানিনা।
পদ্মা ব্রীজে মানুষের মাথা লাগবে, আর এই দেশের বেশ কিছু মানুষ তা বিশ্বাসও করেছে।
এদের বিশ্বাসের মাত্রা কোন স্তরের তা বুঝাই যাচ্ছে।
এই সমস্ত মানুষের মনে কখনোই আর আলো আসবে না।
আমাদের রাজনীতি ( যারা দেশ চালায় ) বিদ গণ এই সমস্যা নিয়ে ভাবেন কিনা সন্দেহ আছে,
সময় কই তাদের এসব নিয়ে ভাবার?
সমাজ বিজ্ঞানীদের নিয়ে পুলিশ বসবে? ভাবনায় আসে না এটা।
শিরিন হক
গণপিটুনি এখন একটা খেলায় পরিণত হয়েছে। দেশের আইন কে উপেক্ষা করে নিজেরাই হাতে তুলে নিচ্ছে আইন এটা দুঃখজনক আমাদের সমাজের জন্য।
তবে ভুক্তভোগীরা আইনের সঠিক বিচার পায়না বলে নিজেরাই আইনকে নিজের হাতে তুলে নেয়।
এর সমাধান সবাইকে করতে হবে প্রশাসন এবং সমাজকে নইলে এর ভয়াবহতা আরো প্রকট হবে।
খুব ভালো একটা বিষয় লিখেছেন। আর একটু বিস্তারিত হলে আমার মনে হয় ভালো হতো।
শুভকামনা রইলো
বোকা মানুষ
ধন্যবাদ
ইঞ্জা
খুবই জরুরি ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধু, বিষয়টি খুবই সিরিয়াস, ছোট শিশুর মা রেনুর মৃত্যু আসলেই মাথা থেকে সরাতে পারছিনা।
এমন গুজবেও আজকাল মানুষে কান দেয় যে যা মহা বিপদজনক, এই গুজবের সংস্কৃতি থেকে কবে যে আমরা বের হবো তা শুধু মাত্র আল্লাহই জানেন।
আমি আশা করবো গণধোলাইকারীদের দ্রুত বিচারের আইনে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে বা দেওয়া উচিত, প্রসগাসনের এই বিষয়ে কড়া নজরদারি কামনা করছি।
বোকা মানুষ
ধন্যবাদ বন্ধু!
ইঞ্জা
শুভেচ্ছা জানিস, নিয়মিত লিখলে খুশি হবো বন্ধু।
তৌহিদ
হুজুগে বাঙালি আমরা, কিছু একটা পেলেই হলো। এই অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
বোকা মানুষ
ধন্যবাদ আপনাকেও!
মনির হোসেন মমি
বিচাহীনতা আর প্রশাসনের পক্ষপাতিত্ব এবং মানুষ অমানুষ হয়ে যাওয়ার কারনে এ সব ঘটছে।ভাল লিখেছেন।
বোকা মানুষ
আমি বিচারহীনতা বলব না। বরং বিচারে দীর্ঘসূত্রতা এবং যুগোপযোগী আইনের অনুপস্থিতি বলব। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য!
স্বপ্নবিহীন মামুন
—খুবই লজ্জাজনক বাঙালি
বোকা মানুষ
লজ্জাজনক, সন্দেহ নেই। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!
সাবিনা ইয়াসমিন
সন্দেহের বশবর্তী হয়ে মানুষ কতটা হিংস্রতা প্রকাশ করতে পারে, তা দেখে শিউরে উঠতে হয়। মানুষের মাঝে মানবতা কম জংলীপনা বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনদিন। এরা হয়তো খুব শিঘ্রি আদিমযুগে ফেরার প্রস্তুতি নিয়েছে। এমন একটি দেশে বাস করছি, যেখানে মানুষ আছে কিন্তু পর্যাপ্ত মানবতা নেই। প্রশাসন আছে, কিন্তু শাসনের প্রক্রিয়া অব্যবহৃত হয়ে থাকছে।
বোকা মানুষ
অত্যন্ত দুঃখজনক পরিস্থিতি। আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগের অভাবও কিছুটা দায়ী! ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য!
রাফি আরাফাত
গুজব আজ শুধু গুজব নয়, শক্তিশালী অস্ত্র,যা মানুষ খুন করছে প্রতিনিয়ত।
শুভ কামনা ভাই।
বোকা মানুষ
সহমত! ধন্যবাদ!