(ক-ঙ)
কুঞ্জলতার কুঞ্জে আলেয়া হয়ে ডেকেছিলো যে কুহক,
খেয়ালী মনের অবগাহনে নিজেকে আজ করেছে সমর্পন।
গড়েরমাঠে গোল্লাছুটে ছুঁয়ে দেয়া যুবকের সে হাত;
ঘরের মেঝেতে আঁচল বিছিয়ে,
ব্যাঙের কোলাহলে মাখামাখি একজোড়া কপোত-কপোতী।
(চ-ঞ)
চঞ্চল মনের কুহুডাকে সাড়া দিয়ে,
ছন্দে ছন্দে হৃদপিন্ডটা বারি খায় ধুকধুক শব্দে-
জন্ম যেন স্বার্থক হয়েছে এ ধরণীর বুকে।
ঝিমিয়ে পরা যৌবন প্রকম্পিত হয় বিদ্যুৎবেগে,
বঞ্চনা নয়; বেহুলার ঘরে ওৎ পেতেছে সূতানলী গোক্ষুর!
(ট-ণ)
টগবগে যুবতীর গালে মৃদু টোল পরে,
ঠনঠনে উঠোনে ঝুমুর বাজিয়ে মাতে উর্বশী নৃত্যে।
ড্যাবড্যাব নেত্রে চেয়ে থাকা যুবকের পাণে;
ঢাকা লাজলজ্জার সমস্ত বাঁধন হয় ছিন্ন,
ণত্ব-বিধানের নিয়ম ভেঙে শুরু করে রাসলীলা।
(ত-ন)
তারপর! তপ্ততার রেশ কেটে যায় যুবকের
থমকে ওঠা বিবেকের হাতছানি ডাক দেয়,
দগদগে গ্লানিতে হয় নিমজ্জিত।
ধুরন্ধর গোক্ষুরের ধোঁকাবাজিতে…
নুয়ে পরেছে সে অবলীলায়; অক্ষমতার আবডালে।
(প-ম)
পরাক্রান্ত যোদ্ধার আহাজারিতে বিদীর্ণ আকাশ
ফেণীল সমুদ্রের ঘোলা নোনাজলে-
বলীয়ান হয়েছিলো যে লজ্জাবতী শামুক,
ভয়কে জয় করে সে আজ বেড়িয়ে পরেছে খোলস ছেড়ে;
মৃত্যুঞ্জয়ী অবাধ্য প্রেমের বাউলা টানে।
(য-শ)
যবনিকা টানার সময় ঘনিয়ে আসে
রক্তাক্ত দাঁড় দুটি দিয়ে গন্ধ শোকে বাতাসে;
লালাঝড়া ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে করে শেষ চুম্বন।
বিহব্বলতায় আক্রান্ত পরিযায়ী কুহক ;
শব হয়ে লুটিয়ে পরে বালিয়াড়ির বুকে।
(ষ-র)
ষাট গম্বুজ অট্টালিকার কার্নিশে,
সম্মুখ প্রহরে মুখোমুখি সে আলিঙ্গনখানি-
হয়ে উঠেছে এক অসম প্রেমের উপাখ্যান।
চুড়ির মৃদু ঝনঝন শব্দ কর্ণকুহরে কম্পমান;
রুঢ় বক্ষে বাণ ডাকা কুঞ্জ নুয়ে পরে অবলীলায়।
(য়-চন্দ্রবিন্দু)
আয়নার প্রতিচ্ছবিতে আজ বিষাদের ছায়া
জগৎ সংসার ছেড়ে বৈরাগীবেশে;
ফড়িংয়ের রুপ ধরে ওড়ে শুধু এ ডালে সে ডালে।
নিঃশ্বাস থেমে আসছে লক্ষীন্দরের…
চাঁদের গায়ে বেহুলা নিজ হাতে আঁকছে কলঙ্কের কালো দাগ।
(ব্যঞ্জনবর্ণের ক্রমানুসারে ক খ গ ঘ ঙ এভাবে প্রতিটি অক্ষর দিয়ে প্রত্যেকটি লাইন শুরু হয়েছে। ব্যঞ্জনবর্ণ মনে রাখা তেমন কঠিন কিছু নয়। একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু সম্ভব।)
৩৪টি মন্তব্য
প্রদীপ চক্রবর্তী
বাহ্!
দারুণ রচনাশৈলী।
তৌহিদ
ধন্যবাদ জানবেন। শুভকামনা।
রাফি আরাফাত
বাহ। বড়ই ভালো মগজের অধিকারীর নিদর্শন। ভালো লাগছে ভাই। ধন্যবাদ
তৌহিদ
শুভকামনা জানবেন ভাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
ব্যঞ্জন বর্ণের ধামাকা দেখলাম ! এখনো একটানা ব্যঞ্জন বর্ণ বলতে পারি না। কিভাবে লিখবো এমন করে?? 😔😔
তৌহিদ
আমিও পারিনা, নতুন করে শিখছি আপু।
আরজু মুক্তা
মগজ ধার নিতে হবে।।ভাইয়া কিন্তু সবগুলোর মানে তো আলাদা হয়ে গেলো।
তবে ভালো লাগলো। হয়তো আমিও পারবো।
তৌহিদ
পড়ুন পড়ন আবার পড়ুন। আপনিও পারবেন আপু অবশ্যই। এ আর এমন কি!
সঞ্জয় মালাকার
বাহ্ চমৎকার রচনাশৈলী ভাইয়া!
তৌহিদ
ধন্যবাদ ভাইয়া।
মাছুম হাবিবী
স্যালুট ভাই, পুরাই অবাক কেমনে লিখলেন। আমার তো মাথাই ডুকেনা। এত সুন্দর করে কিভাবে যে সব কয়টা সেটিং করলেন তা অাল্লাহই ভালো জানেন। তবে কবিতাটা জোস
তৌহিদ
এইতো লিখতে লিখতেই হয়ে হয়ে গেলো। পাঠকের ভালো লেগেছে জেনে লেখক মন প্রীত হলো।
ভালো থেকো ভাই।
শামীম চৌধুরী
তৌহিদ তোমার শিরোনাম দেখে ক থেকে চন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত পড়ে নিলাম। পড়তে পড়তে সেই ছোট বেলার আদর্শলিপির কথা মনে পড়ে গেল। তোমরা মনে হয় আদর্শলিপি পড়ো নাই্। যাহাহোক দারুন একটা লেখা উপহার দিলে ভাইয়া।
ধন্যবাদ।
তৌহিদ
অ তে অজগর। অজগরটি আসছে তেড়ে এভাবে পড়েছি ভাই। লেখাটি পাঠকের ভালো লেগেছে শোনাও লেখকের পরম প্রাপ্তি।
ছাইরাছ হেলাল
সূতানালী গোক্ষুর আপনারে কী করেছে আগে তাই বলুন।
যাক আদর্শলিপি এখনো কাজের আপনার এ লেখা পড়ে বুঝতে পারছি।
তৌহিদ
আমার নীরেট বাসর ঘরে সূতানলী যে কোন ফোকর দিয়ে প্রবেশ করে গোক্ষুরের রুপ নিয়েছিল!! অথচ এক টুকরো সূতো ভেবে লক্ষীন্দর সেদিন এই সূতানলী সাপকে অবজ্ঞা করেছিল। পরিণাম! হয়নি সাধের বাসর।
শিরিন হক
বেশ সুন্দর আপু
তৌহিদ
হা হা হা! আপু নয় ভাইয়া।☺☺
সমস্যা নেই আপু, আপনাকে মন্তব্যে পেয়ে ভালো লাগছে। লিখুন নিজের মত করে।
মনির হোসেন মমি
ভাইটি আপনি পারেনও বটে।এতো বুদ্ধি নিয়া ঘুমান কেমনে?যাক আপনি ঘুমাতে পারেন আর নাই পারেন আমাদের কিন্তু লাভ হয়েছে,আমরা পড়লাম বর্ণের মালা গাথা।
তৌহিদ
কই ঘুমাইনাতো, জেগে জেগে ব্যঞ্জনবর্ণ মুখস্ত করি। ☺☺
ধন্যবাদ ভাইয়া।
মনির হোসেন মমি
হা হা হা.. চালিয়ে যান আপনার সাধনা।আমরা আছি আপনার পাশে।লেখাগুলো আলাদা অন্যত্র সংগ্রহে রাখবেন।
তৌহিদ
তাই রাখবো ভাবছি ভাই।
জিসান শা ইকরাম
এই পোস্টের প্রশংসা করে কি মন্তব্য করব বুঝতেছি না। যে কোনো প্রশংসার উপরে এই পোস্ট। আইডিয়া কোথায় পেলেন ভাই?
পোস্টটি প্রিয় তালিকায় নিলাম৷
ধন্যবাদ এমন পোস্টের জন্য৷
তৌহিদ
প্রিয়তে নেয়ার মত এত ভালো লেখা কি? কি জানি! জ্ঞানী পাঠকের জ্ঞানের কাছেতো আমি নস্যি।☺
আমার ব্যঞ্জনবর্ণ মুখস্ত নেই কেন এখন – এই চিন্তা থেকে ব্যকরন বই নিয়ে বসেছিলাম। বর্ণগুলি পড়তে পড়তেই আইডিয়া মাথা এলো, লিখে ফেললাম। বাকীটা পাঠক বলবেন।
ধন্যবাদ জানবেন ভাই।
মোঃ মজিবর রহমান
বিশাল লেখা বাংলার বরনমালা আপনার ব্যাবহারে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে নিশ্চিত। খুব দক্ষতার সাথেই লিখেছেন একটি মুল্যবান লেখা। নিলাম প্রিয়োতে। ধন্যবাদ নয় আরো লিখুন পড়ি।
তৌহিদ
লেখাটি প্রিয়তে নিয়েছেন জেনে ভালো লাগছে মজিবর ভাই। নিশ্চয় লিখবো, পাশে থাকবেন সবসময়।
মোঃ মজিবর রহমান
প্রিয় তৌহিদ ভাই, আমি পাঠক হিসেবেই ব্লগিং করি লিখার মত আমার কৌশল নাই। পড়ার জন্য আছি ভাই।
তৌহিদ
কি যে বলেন! আপনার লেখা আমার অনেক ভালোলাগে ভাইজান।
রেহানা বীথি
চমৎকৃত হলাম।
দারুণ লেখা
তৌহিদ
আপনি পড়েছেন দেখে আনন্দিত হলাম আপু।
শুভকামনা সবসময়।
সাদিয়া শারমীন
ওরেব্বাবা ভাইয়া এত অসাধারন লেখা! চমৎকার এবং চমৎকার ।
তৌহিদ
এত পুরাতন লেখা পড়েছেন দেখে চমৎকৃত হলাম আপু। শুভকামনা রইলো।
রোকসানা খন্দকার রুকু
অসাধারণ ব্যাপার স্যাপার।কিভাবে লিখলেন ভাই। চেষ্টা করতে হবে। শুভ কামনা। ভালো থাকবেন।
তৌহিদ
আরে এসব লিখা কোন ব্যাপারই নয়। লিখতে বসুন দেখবেন হয়ে যাবে।
শুভকামনা রইলো।