কে বলেছে মেয়ে মানুষকে শুধু ঘরে বসে থাকতে হবে, অনেক রান্নাবান্না জানতে হবে,অন্যের পেট ভরানোর দায়িত্ব নিতে হবে, অনেক লম্বা চুল রাখতে হবে, রূপচর্চা করতে হবে, অন্যের চোখের খোড়াক হতে হবে? কে বলেছে বিয়েই মেয়েদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য?
ঘরেতো প্রতিবন্ধীরাও বসে থাকে, যাদের পায়ে বল নেই,
রান্নাতো বাড়ির বুয়াও জানে,
চুলতো পেত্নীরও নাকি পা পর্যন্ত থাকে,
রূপতো অনেকেরই থাকে।
বিয়েতো প্রায় সবাই করে।
কিন্তু কটা মেয়ে চাঁদের দেশে যায়?
কটা মেয়ে এভারেস্ট জয় করে?
কটা মেয়ে মাদার তেরেসা হয়?
কটা মেয়ে গনিত অলিম্পিয়াডে সোনা জয়ী হয়?
কটা মেয়ে অলিম্পিক গেমসে দেশের জন্য সোনা জিতে?
কজন মেয়ে বাল্য বিবাহের বিপরীতে হাঁটে?
কটা মেয়ে সমাজের রক্তচক্ষু ডিঙিয়ে সমাজে সফল হয়?
কটা মেয়ে বালিশের ওয়ার মাপা শিখে গ্রহ নক্ষত্রের দূরত্ব মাপতে শেখে?
কটা মেয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হবার স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত
পূরণ করতে পারে?
এমনও কিছু মেয়ে আছে দেখবেন হাড়ভাঙা খাটুনির পর নিজ পরিবারের জন্য দুটো অন্ন জোগাড় করে।
এমনও আছে যাদের সমাজ বার বার ছুঁড়ে ফেলার পর তারা উঠে দাঁড়ায়।
কেউবা পুরো সমাজকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এগিয়ে চলে।
কিন্তু তাদের সেসব সাফল্যের কথা কেউ বলে না।
একটা মেয়েকে এ সমাজ পঙ্গু বানিয়ে রাখার জন্য এভাবেই ব্রেন ওয়াশ করে। তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য “বিয়ে” এটা স্থির করে দেয় এ সমাজ।
রান্না কম জানলে, অন্যদিকে বহুত পারদর্শী হলেও কিছুই পারে না, কিছুই পারে না কলরব ওঠে, যেন তাকে জীবনে শুধু শেফই হতে হবে। আর কিছু না জানলেও চলবে। রান্না জানা ভালো, তবে তা নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই।
রূপচর্চা করে তাকে অন্যের চোখের খোড়াক হতে হবে কেন? মেয়েরা যেন এসবেই ফালতু সময় নষ্ট করে সেজন্য? বিখ্যাত লেখিকা শার্লট ব্রন্টি,জেন অস্টেনও সুন্দরী ছিলেন না, তবু আজো তাঁরা বেঁচে রয়েছেন কোটি ভক্তের হৃদয়ে।
মাদার তেরেসা তো বিয়ে করেন নি। তবু আজ সম্মানের সাথে তাঁর নামের পূর্বে মাদার শব্দটি উচ্চারিত হয়।
বিয়েটা অপ্রয়োজনীয় নয়, তবে এটাইতো জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হতে পারে না।
লোকের কাজই হলো যে এগুতে চায় তাকে টেনে পিছিয়ে রাখা। আর সে মেয়ে হলে তো কথাই নেই! তাই
লোকের কথায় না চলে অাল্লাহ যেন সকলকে নিজের জ্ঞান বুদ্ধি প্রয়োগ করার ক্ষমতা দেন।
১০টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
নিজের জ্ঞান বুদ্ধি প্রয়োগ করবার আগে নিজেকে বুদ্ধিমান হতে হবে, নিজেকে শিক্ষিত করতে হবে। সংস্কার সরাতে হবে, সাহসী হতে হবে। রূপচর্চার পেছনে মেয়েরা যেভাবে সময় ব্যয় করে, অবাকই হতে হয়। কাকে খুশি করে কে জানে! নিজেকে কী? যারা নিজেদেরকে আয়নায় সুন্দর দেখেই সন্তষ্ট তাদের জন্য উপদেশনামার দরকার নেই আসলে।
আমাদের দেশের মেয়েরা অনেক পিছিয়ে নীরাপু। তবে আশা করি তারাও একদিন গ্রহ নক্ষত্রের দুরত্ব মাপবে।
নীরা ব্রান্ডেড পোস্ট। থাম্বস আপ (y)
নীরা সাদীয়া
একদম ঠিক বলেছেন শূণ্যদিদি। আপনার কথায় আমি আরো প্রেরণা পেলাম। শুভকামনা জানবেন।
জিসান শা ইকরাম
অসাধারন এক লেখা,
মুগ্ধ হলাম এমন লেখায়।
নীরা সাদীয়া
অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। শুভকামনা জানবেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
আয়নায় সময় দিতে হয় কম, এটা আমি শিখেছি খুব ছোট থেকে। কিন্তু এখন ছোট বাচ্চা মেয়েটিকেও দেখি রূপচর্চা নিয়ে ব্যস্ত।
ওহ ফেসবুকে আমাকে একটা রূপচর্চা গ্রুপে এড করেছিলো কে জানি! বের হয়ে আসার আগে গ্রুপের ওয়ালে লিখে এসেছি মেকাপ নেই, করিনা, আর এসব নিয়ে আগ্রহও নেই।
যাক ফেসবুকে এই পোষ্টটা পড়েছিলাম। দারুণ লিখেছো আপুনি।
নীরা সাদীয়া
ছোট ছোট মেয়েগুলোর শৈশব কৈশর কেড়ে নিয়ে তাদেরকে এক ধাক্কায় যুবতি বানিয়ে দিচ্ছে এসব সস্তা প্রসাধনী ওয়ালারা, পাশাপাশি বিবাহ পাগল এ সমাজ। সারাক্ষন তাদেরকে যেন বিয়ের জন্য প্রস্তূত করছে। এমন হচ্ছে যেন বিয়ে ছাড়া তাদের জীবনে আর কিছু নেই। তাদের জন্মটাই হয়েছে কেবল বিয়ে করার জন্যে।
আমার নীলাদি প্রাকৃতিক ভাবেই সুন্দর। মেকআপের প্রয়োজন নেই। :v
অনেক শুভকামনা রইল।
নীলাঞ্জনা নীলা
আপুনি মন্তব্যে নম্বর ৯০% পেয়েছো। ১০% যোগ হলোনা কারণ “আমার নীলাদি প্রাকৃতিক ভাবেই সুন্দর। মেকআপের প্রয়োজন নেই”—শুধু এ কথার কারণে। 🙂
অনেক ভালো থেকো।
মোঃ মজিবর রহমান
এই প্রশ্নগুলো ঠিক ছেলেদের হয় কয়জন শীর্ষে থাকে!!
ভাল বিশ্লেষণ মুলক লেখা মুগ্ধ করে গেলো।
নীরা সাদীয়া
ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরকেও সমানতালে এগিয়ে যেতে হবে।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
মোঃ মজিবর রহমান
তা অবশ্যই তানা হলে জীবন বন্ধ হবে না!