বেশ কয়েকদিন ধরে খ্যাঁক খ্যাঁক করে কাশে। থেমে থেমে জ্বর আসে। ঠান্ডা যেন লেগেই আছে। তারপর হাঁপানির রোগী রহিজ মিয়া।
সপ্তাহ খানেক আগে বড় মেয়ের শ্বশুর এসেছিলো। সে ঢাকায় থাকে। এইজন্য রহিজ মিয়ার গিন্নীর সন্দেহ হয়েছে তার হয়তো করোনা রোগ হয়েছে। এজন্য বারবার রহিজ মিয়াকে ডাক্তারের কাছে যেতে বলছে জোছনা বানু।
তোমাক কইতেছি, ডাক্তারের কাছে যাও, ডাক্তারের কাছে যাও। কিন্তু তুমি বারান্দায় বইসা জাবুর কাটতেছ। যদি করোনা রোগে ধরে তহন কি অইবো?
মুচকি হেসে রহিজ মিয়া বলল, আমার যে না শরীর আমারে আবার করোনায় ধইরবো। করোনা নিজেই কাশতে কাশতে পালাইবো।
তারপরও তুমি ডাক্তারের কাছে থিক্কা ঘুইরা আইসো।
ঠিক আছে। তোর প্যাঁচালের ঠ্যালায় কি বাইত্তে বইসা থাইকা যাইবো?
হ, আমি তো খালি প্যাঁচালি পারি।
হ অইসে। এহন ট্যাহা দে। ডাক্তারের কাছে থেইক্কাই আগে ঘুইরা আহি।
গ্যাদা কইসে, থানার কাছে যে ডাক্তার বহে সেই ডাক্তারের কাছে যাইতে।
হ, যামুনে। অই ডাক্তারের কাছেই যামুনে।
বুধবারের দিন। তেমন কোন ভিড়ভাট্টা নেই। দুই-একজন রোগী বসে আছে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরপরই ডাক পরে রহিজ মিয়ার।
রহিজ মিয়া ভিতরে ঢুকতেই খ্যাঁক খ্যাঁক করে কেশে ওঠে। রহিজ মিয়া বসামাত্রই ডাক্তার সাহেব জিজ্ঞেস করে, কি হয়েছে কাকা? আমারে খুলে কন।
রহিজ মিয়া বলল, কয়েকদিন হলো জ্বর থাইম্মা থাইম্মা আহে, ঠান্ডায় জবুথবু, কাশির ঠেলায় আরাম কইরা বইসাও থাইকা পারি না।
ডাক্তার সাহেব ঘাবড়ে গেলো। সরাসরি বলল, কাকা, আপনার করোনা টেস্ট করতে হবে।
রহিজ মিয়া করোনার কথা শুনে বিরক্ত হয়ে বলল, আমার করোনা অয়নাই বাপু। তোমরা খালি খালি…।
ডাক্তার সাহেব আবারও একই কথা বললো। বলল, টেস্ট ছাড়া আমি চিকিৎসা দিতে পারবনা।
রহিজ মিয়া প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে বড়সড় করে ডাক্তারের উপর হাঁচি-কাশি দিয়েই চেম্বার থেকে দ্রুত বাইরে চলে এলো।
ডাক্তার সাহেব খুব চিন্তিত হলেন। ভাবতে লাগলেন তিনি করোনায় আসক্ত হয়েছে। এদিকসেদিক চিন্তা করে ডাক্তার সাহেব দ্রুত গিয়ে করোনা টেস্ট করালেন। এবং দেখলেন তার করোনা নেগেটিভ এসেছে।
পরেরদিন রহিজ মিয়া ডাক্তারের কাছে ফোন দিলেন। ওপাশে ফোন রিসিভ করলো।
রহিজ মিয়া জিজ্ঞেস করলো, আপনের স্যার কি করোনার ঠেস্ট করসে?
হ, করসে।
তো সেকি করোনাতে আক্রান্ত অইচে নাহি?
না, স্যার করোনাতে আক্রান্ত হয় নাই।
রহিজ মিয়া জোছনা বানুকে ডেকে বলল, আমার ডাক্তারের করোনা অয় নাই। তারমানে আমারও অয় নাই।
৯টি মন্তব্য
তৌহিদ
নিজে নিজে চিকিৎসা নিলে হবে? ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে।
ফয়জুল মহী
মানুষের জয় হবেই l
সুপর্ণা ফাল্গুনী
শেষটুকু খুব মজা পেলাম। এভাবেই করোনা টেস্ট করতে পারলে ভালোই হতো। 🤣🤣🤣
সঞ্জয় মালাকার
চমৎকার উপস্থাপন দাদা,
পড়ে বেশ আনন্দ পেয়েছি।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।
শামীম চৌধুরী
খুব ভালো লাগলো দাদা।
অনেক অনেক শুভ কামনা আপনার জন্য। ভালো থাকুন।
কামাল উদ্দিন
ব্যটার ভাবে সাবে বোকা হলেও ওতো দেখছি ভীষণ চালাক
হালিম নজরুল
সুন্দর লেখা। শুভকামনা রইল।
সুপায়ন বড়ুয়া
মজার ঘটনা তো।
রইজ মিহার বাড়িটা কোথায়
জানাতো হলো না।
শুভ কামনা।
আরজু মুক্তা
মজাই লাগলো পড়ে।
শুভকামনা