আবেগ বা ইমোশন….এ ছাড়া কি মানুষ হয়! নাহ কখনই না! আবেগ নেই যার সে তো কোনো মনুষ্যকূলেে ভেতরেই পড়ে না। আবেগ আছে বলেই তো পৃথিবীতে এত প্রেম, এত ভালোবাসা, এত কবিতা, এত গান। তবে এই আবেগই আবার অনেক ক্ষতিরও কারণ। এই আবেগের বাড়াবাড়িও আছে বলেই আবার এত হানাহানি, রেষারেষি, এত স্যুইসাইড, এত ঝগড়া, ফ্যাসাদ, বিচ্ছেদ…..
আবেগের কারণেই যেমন মানুষ আপ্লুত হয় ঠিক তেমনই আবেগের অনিয়্ন্ত্রনের কারণেই আবার ফেটে পড়ে ক্রোধে, চিৎকারে, চেচামেচিতে বা লঙ্কাকান্ড ঘটিয়ে পারিপার্শ্বিক পরিবেশ তথা নিজের ইন্টারনাল ক্ষতিও করে থাকেন। তাই তো বলি, এই ইমম্যাচিউরড মেন্টালিটি বা আবেগ নিয়ন্ত্রন করতে শিখুন ও হাসিখুশী জীবন যাপন করুন। নিজে বাঁচুন, অপরকে বাঁচান। ইমম্যাচিউরড মেন্টালিটি বলতে গিয়ে আবার মনে পড়ে গেলো আরেকটি কথা ছোট্ট বাবুরা তাদের আবেগ নিয়ন্ত্রনে প্রায় অক্ষম থাকে। একটুতেই যেমন একটা প্রজাপতি বা বেড়ালছানা দেখলেই হাসি খুশি মুখে ধরতে দৌড়ায় ঠিক তেমনি একটু ধমকেই ভ্যা করে কেঁদেও ফেলে। অনেকে আবার রুহিনবাবুর মত বাবার ধমকে দুঃখে এবং অভিমানের আবেগে ঠোঁট ফুলায়!
যাইহোক দেখি আবেগ কি বা আবেগের বহিঃপ্রকাশ মাধ্যম কি কি ?
ভালোবাসা,
ভালো লাগা
আনন্দ/ বেদনা
হিংসা/দ্বেষ
রাগ /ক্রোধ
ঝগড়াঝাটি
মারামারি/ খুনাখুনি
উন্মাদনা/ ইগো
যাইহোক, এই আবেগকে নিয়ন্ত্রন না করতে পেরে যখন কেউ কেউ রাস্তার মাঝে গাড়ি থামিয়ে জানালা নামিয়ে নিয়ম ভাঙ্গা কাউকে হাউ মাউ করে গালি দিয়ে ফেলে বা রেস্টুরেন্টে প্রেমিকের সাথে ঝগড়া শুরু করে আশপাশ জানিয়ে ও শেষমেষ ভ্যা করে কেঁদেই ফেলে তাতে নিজে তো বোকার মত আচরণ করেই, এমনকি প্রেমিকসহ অন্যান্যদেরকেও বিব্রত করে এবং নিজেরও বিশেষ ক্ষতি করে থাকে যা তার নিজের অজান্তেই নিজের মাঝে ঘটে যায়, সে নিজেই জানেনা।
তাই আবেগ নিয়ন্ত্রন অবশ্য জরুরী। আবেগ নিয়ন্ত্রণের রয়েছে কিছু পরীক্ষিত কৌশল মানে যখনই কেউ ক্রোধে উন্মাদ হবেন বা রাগে দুঃখে চুল ছিড়তে চাইবেন( নিজের এবং অপরের) বা চিৎকার চেঁচামেচিতে বাড়ি মাথায় করবেন বা কোনো দিশা না পেয়ে পুরাই ধেই ধেই পাগলা নৃত্য তখনই মনে রাখুন-
১. নো কুইক রিয়্যাকশন আই মিন দ্র্বুত প্রতিক্রিয়া না দেওয়া – সোজা ভাষায় রিএক্টিভ না হওয়া! হা হা আমি জানি যারা আমাকে এই ব্লগে থেকে চিনলেও ব্লগের বাইরে একটু বেশি চিনেন তারা আমার এই বানী দেখে হাসছেন বা হাসবেন। কারণ কোনো কোনো বিষয়ে আমি পাবলিকলি প্রতিক্রিয়া না দেখালেও ভেতরে ভেতরে যে অনিয়ন্ত্রিত আবেগটা ধারণ করি তা আমার প্রিয় মানুষদের কাছে প্রকাশ করে ফেলি বা ফেলতাম তবে ইদানিং আমি সে আবেগ কন্ট্রোলের প্রায় ৮৭% সফলতা অর্জন করেছি। আর বাকী ১৩% করে ফেললেই …… ব্যাস…….
সফলতা অনিবার্য্য!
যাইহোক, কোনো পরিস্থিতিকে আবেগ দিয়ে বিবেচনা না করে যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করতে শিখতে হবে ও তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে পদক্ষেপ ফেলতে হবে। মনে রাখতে হবে, উগ্র বৈশিষ্ঠের স্বভাব বা গালাগালি, ক্রোধ প্রকাশ, অশালীন ভাষার ব্যবহার যুক্তিকে দূর্বল করে ফেলে। আজ আর সেই দিন নেই যে মানুষকে গালাগালি বা মারামারির ভয় দেখাবেন আর সে আত্নসন্মানের কথা ভেবে হলেও ল্যাজ গুটিয়ে পালাবে আর আরেকটা কথাও বলি, এতে নিজের জন্য কোনোই লাভ নেই বরং আপনি এমন বৈশিষ্ঠের হলে পাগল ছাগল বা না পাত্তার পাত্রই প্রতীয়মান হবেন সে আপনার প্রিয়জনের কাছেও! হুম পাগলা গারদেও ঠায় হতে বেশিদিন সময় লাগবে না বলে দিচ্ছি। কাজেই সাধু সাবধান!
২. সঠিক সমাধান – আমার কাছে ব্যাপারটা সময় নিয়ে হলেও সঠিক ডিসিশন নেওয়াটাকেই বুঝায়। যে বিষয়গুলোতে আমরা ইমোশননাল হয়ে পড়ি সেসব থেকে মন ডাইভার্ট করতে হবে, না পারলে মন থেকে মুছেই ফেলতে হবে যে সব স্মৃতি বা ঘটনা আমাদেরকে ইমোশনাল করে তোলে। নয়তো অন্য কিছুর প্রতি মনোযোগী হওয়া বা ডাইভার্ট করে ফেলাটাও একটি সমাধান হতে পারে। ওপেন ডিসকাসনের সুযোগ থাকলে যার সাথে মনোমালিন্য হয়েছে তা নিয়ে কথা বলা যেতে পারে। সমাধান হলে হলো, নইলে বিদায় বা আলবিদা।
৩. সচেতনতা – সচেতনা বৃদ্ধি বা আবেগ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে ওয়াকীবহাল থাকাটাও একটি জরূরী ব্যাপার। কোন কোন পরিস্থিতিতে আবেগ কন্ট্রোলে থাকছে না সেগুলো খেয়াল রাখতে হবে। রাগ, দুঃখ, ভালোবাসা, ভালোলাগা, ক্ষোভ, ক্রোধ, হতাশা, অস্থিরতা এসব নেগেটিভ ব্যাপারগুলোর কারণ চিহ্নিত করতে হবে।
৪. চিন্তার পরিবর্তন – যেসব বিষয় নিয়ে ভাবলে আবেগ নিয়ন্ত্রনে থাকেনা বা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়তে হয়, সেসব বিষয় মনে পড়লে সাথে সাথে চিন্তা পরিবর্তন করতে হবে। সে সময় ভালো কোনো স্মৃতির কথা মনে করা যেতে পারে কিংবা মহাজাতকীয় বুদ্ধি, একটি ফুলের বাগানে আপনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আকাশ থেকে একজন পরী নেমে এলো অথবা একদিন রাস্তায় কোটি কোটি টাকার বান্ডিল কুঁড়িয়ে পেলেন…. ইত্যাদি ইত্যাদি এবং ইত্যাদিও । এইভাবেই চিন্তাধারা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে আবেগাপ্লুত না হয়ে আত্মনিয়ন্ত্রন বা আবেগ নিয়ন্ত্রন সম্ভব!
৫. ইতিবাচক হওয়া – ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা বা ডিসিশন কিংবা পজিটিভ থিংকিং আবেগ নিয়ন্ত্রনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। পজিটিভ একটিভিতে জীবনের এচিভমেন্টগুলো ভাবতে হবে। তাহলেও নেক্সট পদক্ষেপেও ভুল হবার সম্ভাবনা কম।
এসব ছাড়াও তাৎক্ষনিক আবেগ নিয়ন্ত্রনেরও কিছু অব্যার্থ কৌশল আছে-
১।শ্বাস নিয়ন্ত্রণ – শান্ত হয়ে মোটামুটি নিরিবিলি কোনো জায়গা খুঁজে বসতে হবে। কিছুক্ষণ স্বাভাবিক শ্বাস নেবার পর খুব ধীরে নাক দিয়ে ফুসফুস ভরে শ্বাস নিয়ে শ্বাসটা ভেতরে ধরে রাখতে হবে ও ১,২,৩ ৪ পর্যন্ত গুনতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস বের করে দিতে হবে।
২। ইতিবাচক ভঙ্গি রপ্ত করা- চলাফেরা এবং কাজেকর্মে ধীর, আত্মবিশ্বাসী এবং ইতিবাচক ধ্যান-ধারণা ও অঙ্গভঙ্গি ধরে রাখতে হবে। বসা বা দাঁড়ানো বা হাঁটা চলার সময় ভগ্ন হৃদয় বা ত্রিভঙ্গ মুরারী না হয়ে, সোজা এবং দৃঢ় স্মার্ট ভাবটাই প্রাকটিস করতে হবে। সোজা কথা তাৎক্ষনিক আবেগ নিয়ন্ত্রনে ভাবতে হবে, কন্ট্রোল ইওর আবেগ বাট ডোন্ট লেট ইট কন্ট্রোল ইউ!!!!!!!!
৩। হালকা ব্যায়াম- এ ব্যাপারে খুবই কার্য্যকরী ব্যায়াম। ব্যায়ামের বদলের হাঁটার অভ্যাসও করা যেতে পারে। হাঁটার ফলে এন্ড্রোফিন নামক রাসায়নিক পদার্থের সিক্রিয়েশনে মুড পজিটিভ হয়ে যায়। তবে আবেগ নিয়ন্ত্রনে তক্ষনি হাঁটা শুরু করাটা মনে হয় সঠিক হবে না।
৪. লেখালিখি- এটা একটা দারুন কৌশল! লেখালিখি করে মনের আবেগগুলো বের করে দেওয়া যায়। ১ সপ্তাহ বা ১ মাস পরে সেসব পড়ে নিজেকে চিনে নিতে হবে কি কি বিষয়গুলি আবেগকে প্রভাবিত করে। এইবার সে সবের নিয়ন্ত্রন সহজ! এভয়েড অর কন্ট্রোল অর কন্ট্রোল অলটার ডিলিট।
৫। নিজের কথাগুলো বলুন– শেয়ারিং একটি ভালো উপায়। মনের কথাগুলো দুঃখবোধ বা কষ্ট অন্যের সাথে শেয়ার করা! ফোন দিয়ে বা মুখোমুখি বলা যেতে পারে। তবে সাবধান বন্ধু ভেবে হিংসুটে কোনো শত্রুকে মনের ভাব বলে ফেললে ভবিষ্যতে খবর আছে। ( নিজস্ব অভিজ্ঞতার আলোকে)
৬। জীবনযাপনের ভালো বিষয়গুলো সযত্নে লালন করুন– সুন্দরের প্রশংসা, সুন্দরের চর্চা, প্রতিদিনের ছোটখাটো আনন্দের বিষয়গুলো উপভোগ করা এই অযাচিত আবেগীয় অনিয়ন্ত্রনকে কন্ট্রোল করে। এটা অবশ্য সার্বক্ষনিক আবেগ নিয়ন্ত্রনের কৌশল প্রাকটিস হিসাবেই কাজ করে।
৭। দূরদর্শীতা- হুম এ কারনেই কথায় আছে, ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না। আবেগ আপ্লুত হয়ে রাগে দুঃখে ক্রোধে অন্ধ হবার আগে ভাবতে হবে এ আবেগ আপনাকে কোথায় নিয়ে যাবে! আবেগের ফাঁদে পড়ে জীবন সংকটই ঘটবে নাতো! দূরদর্শী চিন্তাচেতনাই আবেগ নিয়ন্ত্রণে রেখে ভবিষ্যতের পথে হাঁটতে সাহায্য করবে।
এছাড়াও আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে-
পর্যাপ্ত ঘুম – আবেগ যখন অনিয়ন্ত্রিত হয় তখন ঘুম কমে যায় বা অনিদ্রা হয় যেমন কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ, ব্রেক আপ এসব রাতের ঘুম হারাম করে দেয়। সেটা বেশ কয়েক দিন মাস বছরও পেরুতে পারে। এই অনিদ্রা বা ঘুম হারাম হওয়া এ ব্যাপারটাতে যে ভাবেই হোক সতর্ক থাকতে হবে। একটা পর্যাপ্ত আরাম দায়ক ঘুমের পর রাগ দুঃখ, ক্রোধ, ক্ষোভ অনেক আবেগই নিয়ন্ত্রনে চলে আসে।
গুড প্লানিং- ভালো প্লানিং না থাকলে যে কোনো কাজেই সফলতা পাওয়া একটু কঠিন আর এই অসফলতা বা অব্যার্থতাও মানষিক অবসাদ বা আবেগ নিয়ন্ত্রন হারাতে কাজ করে। তাই গুড প্লানার হয়ে কাজ শুরু করাটাই উত্তম। এই কারণেই কথায় আছে, ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না।
নিজের জন্য কিছু সময় ও আত্ম কথন- নিজের সাথে নিজের কথা বা নিজেই প্রশ্ন করা বা উত্তর খুঁজে বের করা এসবও আবেগ নিয়ন্ত্রনে সহায়ক। নিজের জন্য কিছু আনন্দময় কাজ খুঁজে বের করা বা একান্ত সময় কাটানোও আবেগ নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে। তাই তো টক টু দাইসেল্ফ এ্যান্ড ইনক্রিজ ইওর ঔন ক্রিয়েটিভিটি/ ক্রিয়েটিভ থিকিং অর থটফুল আইডিয়াস। সোজা ভাষায় নিজের চরকায় তেল দেওয়টাই উত্তম।
যাইহোক অনেক বক বক করেছি এবার আসি মজার এবং খুবই এফেক্টিভ একটি বিষয়ে। দিস ইজ কলড নাইটি/টেন প্রিন্সিপাল-
১০% পার্সেন্ট অফ লাইফ ইজ মেড আপ হ্যোায়ট হাপেনস টু ইউ বাট ৯০% অব লাইফ ইজ ডিসাইডেড বাই হাউ ইউ রিয়্যাক্ট…. – মানেটা কি? আমাদের লাইফে ঘটে যাওয়া অপ্রত্যাশিত ঘটনাতে ১০% এর ওপর আমাদের কোনো হাত থাকেনা, থাকেনা কোনো কন্ট্রোল কিন্তু বাকী ৯০% কিন্তু ডিফারেন্ট। এটা আমরা কন্ট্রোল করতেই পারি। কিন্তু কিভাবে! আমাদের রিয়াকশনের মাঝ দিয়ে মানে আমরা কিভাবে রিয়্যাক্ট করবো ঘটনাটির প্রতি।
একটা গল্প বলি, একদিন সুন্দর এক সকালে, মা বাবা আর ছোট্ট একটি মেয়ে সবাই মিলে আনন্দে সকালের ব্রেকফাস্ট করছিলো। হঠাৎ বেবিটা এক কাপ বাবার গায়ে ফেলে দিলো। বাবার অফিসের পোষাক নষ্ট হয়ে গেলো। এখানে কফি পড়ে যাবার ঘটনাটিতে কারো কন্ট্রোল করবার কোনো উপায় ছিলো না কিন্তু এর পরেরগুলো কন্ট্রোল করা যেত কিভাবে তিনি রি্যাক্ট করবেন তার উপরে। বাবা রেগে গেলেন। অনেক চিল্লাচিল্লি বকাঝকা! বাচ্চাটা কান্না করতে শুরু করলো। শুধু তাই না বাচ্চাকে বকা ঝকা করেও বাবার হলো না সে মায়ের উপর চড়াও হলো চিৎকার চেচামেচিতে। আমার জামাকাপড় বদল, ঝগড়াঝাটি রাগারাগি। বাচ্চার ব্রেকফাস্ট দেরী। স্কুলবাস মিস।
তাড়াতাড়ি বাবাকে কারে করে স্কুল নিতে হলো। তাড়াহুড়ায় যে কোনো মুহূর্তে তখন এক্সিডেন্ট হয় হয় ! বাচ্চা স্কুলে মুখ গোমড়া করে ঢুকলো বাবাকে কোনোই হাই অর বাই না বলেই। অফিসে পৌছে বাবা দেখলেন ব্রিফকেসটাই ভুলে গেছেন। সমস্ত কাজ ভন্ডুল। সারাদিনটাই নষ্ট হয়ে গেলো এইভাবেই……বাড়ি ফেরার পরও সবই থমথমে কারণ সকালের ব্যবহার। কেন সারাদিন খারাপ গেলো?
১। কফিটাই কারণ?
২। নাকি বেবিটাই কারণ?
৩। নাকি মাটাই কারণ?
৪। নাকি বাবাটাই তার কারণ?
উত্তর তো সকলের জানা- ৪নং টাই। অনলি এই একজনই। কফি পড়ার উপরে কন্ট্রোলিং ছিলো না কারও। কিন্তু ঐ ৫ সেকেন্ডের রিয়াকশন বদলে দিলো সব….. এটা যদি হত এমন- কফি পড়ে গেলো আর বাবাটা বলতো ওহ বেবি নেক্সট টাইম বি কেয়ারফুল। তারপর কাপড় বদলে সব ঠিকঠাক নিয়ে এসে দেখতেন বাচ্চা নাস্তা খেয়ে বাসে চলে গেছে। তাহলে তাড়াহুড়া বা দেরীও হত না অফিসে।
বাচ্চাও মনটা খারাপ করতো না , স্কুল বাসও মিস হত না। বাবার ব্রিফকেসও ভুল হতো না। একটু খেয়াল করলেই দেখা যায় এই ডিফারেন্সটা। ঘটনার স্টার্টিংটা সেইম হলেও শেষ হত অন্যভাবে। কারণ ঐ ১০% এ আমাদের কন্ট্রোল নেই কিন্তু বাকী ৯০% এ আছে। কাজেই সদা ও সর্বদা মনে রাখতে হবেই এই ৯০/১০ ইমোশন কন্ট্রোল গুঢ় উপায়টি।
এবার ভিডিওটি-
The 90 10 Principle by Stephen R Covey An Inspirational Video
এছাড়াও —-
যে ভিডিওটি দেখলে সকল রাগ দুঃখ বা হতাশার আবেগ কন্ট্রোলে চলে আসবে?
হরিণছানার গান যা শুনে পৃথিবীর সব দুঃখ মুছে যায়
রাগ কন্ট্রোল অর এংগার ম্যানেজমেন্ট
কিছু কিছু টার্ম বা কৌশলের নাম নেওয়া হয়েছে- Self-Consciousness in Public How to Control Your Emotions- L. W. de Laurence থেকে…..
যাইহোক, ইমোশোন, ইমোশনের ভালো খারাপ দিক, ইমোশন কন্ট্রোল, ৯০/১০ থিওরী সবকিছু নিয়েই বক বক করা হলো । এমনকি খুব সহজ পদ্ধতিতেও কি কি মজার ভিডিও, বা মনুষ্যসৃষ্ট পাগলামী ছাগলামী দেখে শুনে ও হেসে মন ভালো করা যায় তথা ইমোশন কন্ট্রোল করা যায় তাও দেখা গেলো। এবার আসি ইমোশন সেফ জোন প্রসঙ্গে।
ইমোশানাল সেফ জোন- শেষ হইয়াও হইলো না শেষ—
সেফটি বলতে আমরা শুধু মাত্র ফিজিক্যাল সেফটিই বুঝে থাকি আর তাই কেমনে এক্সসিডেন্ট না হবে, সিট বেল্ট বাঁধা হবে, লাইফ জ্যাকেট পরা এসব নিয়েই সচেতন থাকি। কিন্তু আমাদের ভেতরের ক্ষতি, ভেতরের নিরাপত্তা বা অনিরাপত্তাবোধ এটা নিয়ে ক,জনে ভাবি? হঠাৎ বা ধীরে ধীরেও যখন তখন এই নিরাপত্তার অভাব বোধ হতে পারে। লজ্জা, ভয়, ত্রাশ বা সংশয়, কষ্ট গ্রাস করে নিতে পারে। নিজের দিকে তাকিয়ে দেখুন। এই ক্ষুদ্র বা বৃহৎ জীবনে আপনি কি ইমোশোনাল সেফটির প্রয়োজন বোঁধ করেছেন? নাহলে এখন থেকে একটি ডায়েরী মেইনটেইন করুন। কোন কোন দিন কোন কোন ঘটনায় আপনি ইমোশোনাল সেফ ফিল করেননি? সেসব নিয়ে ভাবুন, এই ইমোশনাল সেফটিটাও দারুন প্রয়োজন! জীবনে চলার পথে এই সব ঘটনা থেকেই নিজের সেফটি গড়ে তুলুন আর তাই প্রয়োজন ইমোশন কন্ট্রোলিং।
ইমোশানাল সেফ জোন
আই এ্যাম প্রাকটিসিং ইট। আপনিও করুন…..
২৬টি মন্তব্য
সঞ্জয় কুমার
চমৎকার লেখা । ছবির সাথে লেখা মিলিয়ে অসাধারণ । ভিডিও গুলো youtube থেকে দেখতে হবে ।
নিজের আবেগ কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অর্ধেক পৃথিবী জয় করা সম্ভব
অপ্সরা
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। আবেগ নিয়ন্ত্রন আসলেও জরুরী। নয়তো জীবন যাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
নীলাঞ্জনা নীলা
আবেগকে শাসন করা, আমি একেবারে শুধরে নিয়েছি। সত্যি বলতে কি বেশ কিছু মানুষের অসহ্যজনক ব্যবহারে মেজাজ খিঁচকে থাকতো। এখন আমি “খাঙ্কে নাই(don’t care)” বলে ওসবের সব থেকে আলাদা করে নিয়েছি। আমি খুব বেশি পজিটিভ। এটা আমার বন্ধু-বান্ধব থেকে ডাক্তারসহ চারপাশের সকলেই জানে। সবাইকে চেষ্টা করি শেখানোর “বি পজিটিভ” ভাবনা ভাবতে। যেখানে আঘাত, অন্য পথ ধরো, তা নইলে ওই পথ দিয়েই যাও, পাত্তা দিওনা।
আপু পোষ্টটা প্রিয়তে নিলাম। একেবারে আমার মনের কথা এখানে। যা যা আমি বলি বন্ধুদেরকে, তাদেরকে দেখাবো। আমার কথাকে পাত্তা দেয়না। ওই যে কথায় আছেনা, আমাদের স্বভাব হলো ঘরে ডাক্তার থাকলেও বাইরের ডাক্তারের উপর নির্ভর করি। আপনার লেখাটা পড়লে যদি বোঝে যে আমি ঠিক বলেছিলাম কিনা!
আর কী বলবো! চমৎকার লিখেছেন। :c
অপ্সরা
হা হা মন্তব্য পড়ে মজা পাচ্ছিলাম মানে ভালো লাগছিলো কিন্তু লাস্টে এসে আরও হাসলাম!
অনেক অনেক থ্যাংকস আপুনি। যদিও সব কিছু ফলো করা খুব সহজ নয় তবুও চেষ্টা করতে হবে এবং সফল হতেই হবে ঠিক যেমনই অন্যের আবোল তাবোল কাজে সময় নষ্ট করা চলবেনা তেমনি নিজের সময়টুকুও অনেক বেশি মূল্যবান।
অনেক ভালো থেকো আপুনিমনি!
নীলাঞ্জনা নীলা
প্রিয়তে নিয়ে রেখেছি। বললাম না আমার মনের মতো করে তুমি লিখেছো।
তুমিও ভালো থেকো আপু।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
অনেক সুন্দর এবং সাবলিল ভাষায় প্রকাশ করেছেন আবেগের ইতিবিত্য।সত্যিই আবেগকে কন্ট্রোল করতে না পারলে জীবনে যে কোন সময় বড় কোন অঘটন ঘটে যেতে পারে তাই তা কন্ট্রোলে আপনার লেখাটি কাজে লাগবে।প্রিয়তে নিলাম।
অপ্সরা
থ্যাংক ইউ ভাইয়া!
নীরা সাদীয়া
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের অবতারণা করলেন, যা আমার মত মানুষের খুবই প্রয়োজন ছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে অপ্সরা দিদি।
নীরা সাদীয়া
আমিও প্রিয়তে নিলেম। -{@
অপ্সরা
অনেক অনেক থ্যাংকস আপুনিমনি!
মোঃ মজিবর রহমান
দারুন একটি পোষ্ট। প্রিয়তে নিলাম।
আবেগ নিয়ন্ত্রনের সুন্দর সুন্দর পন্থা বলেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
অপ্সরা
প্রিয়তে নেবার জন্য থ্যাংকস ভাইয়া!
নীহারিকা
ইমোশন কন্ট্রোলে রাখা একটি বিশাল গুণ। আমরা অনেকেই তা পারি না। যার ফলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি আমরাই করি। আপনার পোস্টটি পড়ে নিজেকে আরও শুধরে নিতে পারবো আশাকরি। খুবই সুন্দর একটি পোস্ট দেয়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অপ্সরা
তোমাকেও অনেক অনেক থ্যাংকস আপুনিমনি! আসলেই এই আবেগ যেমনই আমাদের প্রয়োজন তেমনি অতি আবেগ ক্ষতিকরও বটে।
মিষ্টি জিন
ছোট বাচ্চারা যেমন আবেগ কন্ট্রোল করতে পারে না তেমনি অনেক বডরাও পারে না। যত ফ্যাসাদ বাধে এই অনিয়ন্ত্রিত আবেগের জন্য।
আমি ভীষন প্রাকটিক্যাল মানুষ তাই সন্তান ছাডা মোটামুটি অন্যসবার বেলায় আবেগ নিয়ন্ত্রন করার চেষা করি।
আবেগের ব্যাপারে বেশ কিছু জানলাম আপনার এই লেখার মাধ্যমে।
আপনার পোষ্ট গুলোতে ভিন্নতা আছে। তাই ভাল লাগে।
অপ্সরা
ছোট বাচ্চারা যেমন আবেগ কন্ট্রোল করতে পারে না তেমনি অনেক বডরাও পারে না। যত ফ্যাসাদ বাধে এই অনিয়ন্ত্রিত আবেগের জন্য।
১০০% সত্যি কথা ভাইয়া।
আপনার পোষ্ট গুলোতে ভিন্নতা আছে। তাই ভাল লাগে।
আর এই কথাটার জন্য রইলো অনেক অনেক ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা
মিষ্টি জিন
আপনার জন্যও ভালবাসা। (3
আমি ভাইঁয়া না আপু। 🙁
জিসান শা ইকরাম
অনেক ভাল একটি পোষ্ট দিলে দিদি,
যারা আবেগ/ রাগ কন্ট্রোল করতে পারেনা, এটি তাদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক একটি লেখা হবে।
গল্পে সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলে সব।
প্রিয়তে নিলাম লেখা।
হরিন ছানাটি কে?
শুভ কামনা।
অপ্সরা
অনেক অনেক থ্যাংকস ভাইয়া।
হরিন ছানা মুনতাজার ভাইয়ার মেয়ে!
ইউটিউবে অনেক লিঙ্ক আছে।
ইঞ্জা
অসাধারণ পোষ্ট, আমি আবেগ কন্ট্রোল করতে পারি, এও জানি আবেগ কন্ট্রোল করতে বা পারলে কি যে বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা হয়।
অপ্সরা
ইঞ্জামনি!!!!!!!
অনেক অনেক অনেক থ্যাংকস!
ইঞ্জা
😀 -{@
মৌনতা রিতু
অনেক ভাল একটি পোষ্ট।
আমার আবেগ কন্ট্রোলে কখনোই থাকে নি।
মেডিটেশন করতে হবে।
অপ্সরা
হা হা থাকেনি বলে থাকবেনা এমন কথা নেই!
চাইলেই করা যাবে এখন থেকেই আপুনিমনি!
অপার্থিব
প্রথমত আমার মনে হয় না আবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য এত কিছুর প্রয়োজন আছে। মুলত তিনটি যোগ্যতা অর্জন করতে পারলেই আবেগকে অনেক খানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারার কথা। এই তিনটি যোগ্যতা হল- জ্ঞান, বিশ্লেষনী দক্ষতা ও পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন ঘটনা থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা। আপনি বাচ্চার চায়ের কাপ ফেলে দেয়া থেকে বাবার সারাটা দিন নষ্ট হওয়ার যে উদাহরণ দিলেন সেই প্রসঙ্গেই বলা যায় যে নুন্যতম জ্ঞান সম্পন্ন কোন বাবার কাছে তার ছোট বাচ্চার চায়ের কাপ ফেলে দেওয়ার ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হবার কথা। এটা নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করা যে অর্থহীন সেটা বুঝতে আইনষ্টাইন হতে হয় না। তারপরও তিনি যদি এটা নিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে চিৎকার চেঁচামেচি করে থাকেন তবে এটা বলা যায় যে ঐ ব্যক্তির সিরিয়াস কোন মানসিক সমস্যা আছে কিংবা অন্য কোন কারণে তিনি তার স্ত্রীর উপর মারাত্নক ভাবে ক্ষুদ্ধ, এটাকে বাচ্চার চায়ের কাপ ফেলে দেওয়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখাটা ঠিক বলে আমার মনে হয় না। আর তিনি যদি ঐ দিনের ঘটনা থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা থেকে কিছুটা হলেও শিক্ষা নিয়ে থাকেন তবে অন্য কোন দিন তার সন্তান আবার তার উপর চায়ের কাপ ফেললে ঐ ভাবে রিএক্ট না করারই কথা। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ এই তিনটি গুণ অর্জন করতে শুরু করে ফলে বয়স বাড়ার সঙ্গে অধিকাংশ মানুষ তার আবেগ নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা অর্জন করতে শুরু করে তবে এই তিনটি দক্ষতা অর্জনের প্রক্রিয়া কিভাবে আরো দ্রুততর করা যায় তা নিয়েই ভাবাই মনে হয় বেশি জরুরী।
অপ্সরা
একদম সঠিক। অল্প বিষয়ে যারা আবেগ নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা হারায় তাদের জন্য এই লেখালিখি। জ্ঞান, বিশ্লেষনী দক্ষতা ও পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন ঘটনা থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা এই ৩টি জিনিস যাদের আছে তাদের জন্য পৃথিবী সহজ ও সুন্দর! যারা ক্ষতিকর আবেগ কিছুতেই নিয়ন্ত্রন করতে পারেনা তাদের জন্য নানা পন্থা প্রয়োজন! সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।