আজ সাত সকালেই মনটা খুউব বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে । আর হবেই বা না কেন ! দুটো সংবাদ, একটি অন লাইন পত্রিকায় অন্যটি একটি প্রতিষ্ঠিত জাতীয় দৈনিকে । অনলাইনের খবরটিকে মিথ্যে বা অতিরঞ্জিত কিংবা বানানো বলার অবকাশ নেই। কেননা মোটামুটি ঘটনাস্থল এবং পরিচয় সম্বলিত খবরটি অস্বীকার করার উপায় নেই।
একটি বার বছরের বালিকা তার দীর্ঘ সাত বছরকালীন প্রবাসী পিতার সাথে প্রথম সাক্ষাতেই বুঝতে পারে সে যে পিতৃস্নেহ, মায়ামমতা এবং ভালবাসার আকাঙ্ক্ষার জন্য উন্মুখ হয়ে বসে আছে , তা তার পিতার মধ্যে অনুপস্থিত এবং তদস্থলে কাম এবং রতি উন্মুখ পিতা এক ভয়ঙ্কর ধর্ষক । জী ঘটনাটি ঘটেছে আফঘানিস্তানের এক শহরে । অথচ এই পশুঅধম পিতার অনুপস্থিতকালে অন্যান্য মামা চাচাদের কাছে সে তার শিশুসুলভ প্রাপ্য আদর ভালবাসাই পেয়েছে । যেদিন প্রথম এই ঘটনা ঘটে মেয়েটি সারাদিন রুমের এককোণে পড়ে থাকে । নিয়মিত একই ঘটনা ঘটতে থাকে এবং মেয়েটি তার দাদিকে জানায় । খুব অবাক কান্ড এই অধমপশুর জননী কোন প্রতিক্রিয়া দেখায় না । অর্থাৎ পারিবারিক বা জন্মেই যার আজন্ম কলুষতা নিহিত ছিল, তাতে কোন সন্দেহ নাই । এইভাবে চলাকালীন মেয়েটি গর্ভধারণ করে, তখন পিতা নামক অধমপশু মেয়েটিকে নিয়ে দূরে গ্রামে যায় , সেখানে একটি কন্যা জন্ম নেয় এবং তখন বাচ্চাটিকে মেয়েটির কাছ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কোথায় নিয়ে যাওয়া হয় মেয়েটি জানতে পারে না এবং আজতক জানে না। এই ভাবে দশ বছর সে নিয়মিত ধর্ষণের স্বীকার এবং একটি কন্যা সন্তানের জননী। এই একটি মাত্র সন্তান জীবিত যার পিতা মেয়েটিরও পিতা । এ ছাড়াও সে আরও কয়েকবার গর্ভবতী হয় এবং তা গর্ভপাতে শেষ হয় । আফঘানিস্তানের কোর্টে এই মামলা যখন চলে তখন বিশ্ব বাহায়া পশুঅধম পিতা কন্যাকে দুশ্চরিত্র বলে আখ্যায়িত করে ।সদাশয় কোর্ট জানতেন , মেয়েটিকে না হলে শাজা ভোগ করতে হবে, তাই তিনি ডি এন এ টেস্টের আদেশ দেন । বাচ্চার ডি এন এ টেস্ট করা হয় ( আমেরিকাতে পাঠানো হয়) এবং দিব্য সত্য প্রকাশ পায় । মেয়েটি নিজের কন্যা সন্তানকে দেখিয়ে বলে “ও আমার বাবার সন্তান” ।
আমার খুব সামান্য ধ্যান এবং জ্ঞানে এটুকু বলতে পারি , আজতক পৃথিবীতে এমন কঠিন নির্মম চরম সত্য বাক্য সম্ভবতঃ ইতিপূর্বে আর উচ্চারিত হয়নি। সেই থেকে আমি খুব অস্থির আছি ,বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে মন। এমন নয় যে আগে কোথাও পিতা দ্বারা কন্যা ধর্ষিত হয়নি ! হয়েছে , খোদ আমেরিকা এবং ইংল্যান্ডে এমন হয়েছে । কিন্তু তারা নিজ কন্যার সন্তানের পিতা হন নি । আফঘানিস্তানের মত ঘোর মুসলিম রাষ্ট্রে একি অনাচার । এর অর্থ কি ? আমরা কি আর মানুষ নেই ? আমরা ফিরে গেছি সে আদি যুগে, পশুর দুনিয়ায়। যেখানে মা বাবা সন্তানের কোন আলাদা পরিচয় নেই । পরিচয় একটাই , একজন পুরুষ অন্যজন নারী । আর নারী মানেই ভোগের সামগ্রী ।
চলেব………………………………………………………………………………………
২৬টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
এমন পশু পিতাও থাকতে পারে এ জগতে তা চিন্তাই করতে পারিনা
কত কষ্ট আর অসহায়ত্বের মাঝে দিন গুলো পার করছে ঐ মেয়েটি তা কল্পনাও করা যায় না।
গত বছর একটি খবরে পড়েছিলাম ”সৌদি আরবে এক পিতা তার নাবালিকা কন্যাকে ধর্ষন করে এবং কন্যাটি মৃত্যু বরন করে, ধর্ষক পিতার নাম মাত্র কিছু অর্থ দন্ড হয়”। এদের কাছে কন্যা নয় ,নারী আর পুরুষ প্রধান পরিচয়,যেখানে নারী শুধুই ভোগের সামগ্রী।
পারভীন সুলতানা
অপেক্ষা করুন , আমি আরো কিছু লিখব ……………।লেখাটা এখন তাগিদ , তাগিদ মেয়ে হয়ে জন্মেছি বলে ,
লীলাবতী
আপু লেখাটি পড়ে ভয় পেলাম।আমরা কি আমাদের পিতাদের বিশ্বাস করবো না আর? 🙁
পারভীন সুলতানা
কোন না কোন ভাবে এরাই আমাদের বাবা, ভাই আবার সন্তান । নয় কি ?
খেয়ালী মেয়ে
এ কেমন বাবা?…….এপশুটা সত্যি মেয়েটার বাবাতো?…..লেখাটা পড়ার পর এই প্রশ্নগুলোই মনে আসছে বারবার……….
পারভীন সুলতানা
পশুসন্তানেরও বাবা থাকে থাকে জনক । এ কিছুটা তেমন । সউদি আরবে কিছুদিন আগে পিতাকে সামান্য কিছু জরিমানা করা হয়েছিল শিশু কন্যাকে ধর্ষণ করার জন্য । তাকে ভ্যাবিচারি বলা হয় নি , কারণ তিনি পুরুষ । মেয়ে হয়ে যদি বাবাকে ধরশন করত, তাহলে কি হত আমরা সবাই জানি।
সীমান্ত উন্মাদ
একে কি পিতা বলা যায়। এ কেবল এক নর পশু। একে পিতা বললে পিতা শব্দটিকে অপমান করা হয়। আচ্ছা একে পশু বলছি কেন? কারন এ পিশাচ শ্রেনির প্রতিনিধিতো পশুর চেয়েও অধম।
পারভীন সুলতানা
আপনি কি খেয়াল করেছেন আমি পশুদের অপমান করার ধৃষ্টতা দেখাইনি । আমি লিখেছি অধমপশু মানে পশুর অধিক অধম।
নীলাঞ্জনা নীলা
শমশেরনগর চা’ বাগানে একটি মেয়ে(নামটি দিলাম না) কাজ করতো একজন বাবুর বাসায়, আর তার বড়ো বোন চা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো বাগানে। ওদের মা মারা যাবার পর বড়ো বোনটিকে প্রতিদিন ওর বাবা এসে মাতাল হয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতিত করতো। হঠাৎ শোনা গেলো মেয়েটি গর্ভবতী। শোনার পর মেয়েটির বাবা এতো মারলো, তারপর মরো মরো অবস্থা। সিলেট নেয়া হলো, ভাগ্যক্রমে মেয়েটি বেঁচে গেলো। এজন্য মেয়েটির বাবাকে শাস্তি দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু মেয়েটির মনের উপর ওই দাগ কি কখনো যাবে? যে বাবার বুকে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি, স্নেহ-মায়া-মমতা-নিরাপত্তার উষ্ণতায় জড়ানো আশ্রয়টুকু যে মেয়েরা হারিয়ে ফেলে, তারা কি আর জীবনে কোনো পুরুষকে বিশ্বাস করতে পারবে?
কোনো মেয়ে যেনো নিরাপদ এই আশ্রয়টুকু না হারায়।
পারভীন সুলতানা
এই খানে আমি নিষ্প্রাণ এবং নিস্তব্দ । আমার চিন্তাশক্তি এত কঠিন এবং নির্মমতায় সম্পূর্ণ অকেজো । আমাকে ক্ষমা করবেন, এই অনুভুতির প্রকাশে অক্ষম আমি।
শুন্য শুন্যালয়
কি ভয়ংকর ঘটনা!! মানুষের মধ্যেও পশু আছে, আর পশুকেও এরা হার মানিয়েছে।
এ বাবা নয়, পিশাচ।
পারভীন সুলতানা
যে কোন নামেই ডাকুন , উপযুক্ত ভাষা খুজে পাবেন না। আমি পাইনি।
ছাইরাছ হেলাল
অন্ধকারত্ব আমাদের পিছু ছাড়েনি। অভাব্য এমন বিষয়।
পারভীন সুলতানা
না ভাই, এমন ঘটনা ঘটছে এখন । ঘটছে অনেক …………………পরবর্তীতে আসছি আমি।
অনিকেত নন্দিনী
আমাদের দেশেও এই ঘটনা অনেক ঘটেছে এবং এখনো ঘটছে। লোকলজ্জা আর আত্মসম্ভ্রমের ভয়ে মুখ খোলেনা বলে তা সামনে আসে না।
পারভীন সুলতানা
এক্কেবারে সত্যি বলেছেন। আমি আসছি , আরও কিছু উপাত্ত নিয়ে।
আজিম
অত্যন্ত বিষাদময় ঘটনা।
পারভীন সুলতানা
এ লজ্জা কি দিয়ে ঢাকি …………………।
মেহেরী তাজ
বিচ্ছিরি অনুভূতি। এ সব কি শুনি???! ^:^
পারভীন সুলতানা
আমার অনুভুতি সব অসার আর মৃত বলে মনে হয়েছিল।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
আপনার লেখা বরাবর তাৎপর্যপূর্ণ এটাও তাই জগতে মানুষের কত রূপ কত ভয়ংকর তা এ ঘটনা থেকেই বুঝা যায়।
পারভীন সুলতানা
ধন্যবাদ মনির । যা আমাকে নাড়া দেয় , আমাকে ভাবায় তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করি ।
সঞ্জয় কুমার
মেয়েটি নিজের কন্যা সন্তানকে দেখিয়ে বলে “ও আমার বাবার সন্তান ।
অসহ্য । সহ্যের বাইরে । আমি হলে ই পশুকে খুব করতাম
সঞ্জয় কুমার
খুব না খুন
পারভীন সুলতানা
একজঙ্কে খুন করে কি হবে ? এদের সঙ্খ্যা কিন্তু খুব কম নয় ।
সঞ্জয় কুমার
bbcতে এমন একটা নিউজ পড়লাম http://www.bbc.com/bengali/news/2013/08/130827_aho_child_sex_abuse_special_report