এসব কি হচ্ছে আজকাল? পথে-ঘাটে-মাঠে-ঘরের ভেতর সবজায়গাতেই যেনো ধর্ষণের মহোৎসব চলছে। একসময় ছিলো মেয়েদেরকে উঠিয়ে নেয়া, তারপর চললো এসিড সন্ত্রাস। কয়েকবছর থেকে একেবারে লাগাতার ভাবে শুরু হয়েছে ধর্ষণলীলা। আগেও ছিলো, কিন্তু এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কী শিশু, কী বৃদ্ধ, কী তরুণী সবাই যেনো গণিমতের মাল। পাকিস্তানীরা যেমন যুদ্ধের সময় যে নারীকে পেয়েছে, তার সব খেয়েছে। মেরেছে নৃশংসভাবে। অনেকেই প্রশাসনের দোষ দেখে। কিন্তু ঘর থেকে যদি না শিক্ষা পায় ছেলেরা, প্রশাসন করবেটা কি? অস্বীকার করছি না প্রশাসনও দায়ী। যদি ধর্ষণ মামলার আসামীদের পক্ষে কোনো উকিল না দাঁড়াতো, সোজা ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে দেয়া হতো ওইসব নপুংসকদের! তাহলে হয়তো এই লীলা কিছুটা কম হতো। আর আমাদের সমাজ, পরিবার নারীকে শালীনতা বজায় রাখার শিক্ষা দেয়। একটা ছেলেকে মা-বাবা কী কোনো শিক্ষা দেয়? তাদের জন্য কোনো বাধা-নিষেধ নেই, কোনো নিয়ম-কানুন নেই। সব শুধু নারীদের জন্য। কতোটা জঘণ্য আমাদের মন-মানসিকতা! সেদিন একটা ফিচার পড়লাম গুগল সার্চ নিয়ে। কয়েকটি অক্ষর আছে যা লিখলেই বাজে বাজে লেখা উঠে আসে। এমনকি “মা” শব্দ লিখে সার্চ দিলেও। তার মানে আমরা কোথায় নেমেছি, ভাবা যায়? প্রশাসন কী এসব দেখেনা? দেশ এতোটাই ডিজিটাল হয়েছে যে, তথ্যমন্ত্রণালয় বড়ো বড়ো ভাবের বুলি ঝরাচ্ছে। আমার মতে এসব ধর্ষকদের লিঙ্গটাই কেটে দেয়া দরকার। ওরা বুঝুক কতোটা যন্ত্রণা।
আমি এসব নিয়ে লিখিনা আজকাল। ধর্ষণের ঘটনা পড়িনা। হেডলাইন দেখলেই আমার যন্ত্রণা শুরু হয়। কিন্তু আজ পারিনি। এক রূপাকে কবরে শায়িত করা হয়েছে। ঠিক তার পাশেই আরেকটি খবর সাভারে আরেক তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। আমি আর নিতে পারিনা এসব। প্লিজ ছেলে সন্তানের বাবা-মায়েরা জাগুন, শেখান ওদেরকে নারী শুধু একটি শরীর না। ছেলে বলেই তাদের যা মন চায় করার ইচ্ছেটা ঠিক না। আর কন্যা সন্তানের বাবা-মায়েরা নিজের মেয়েকে নাচ-গানের পাশাপাশি নিজেকে আত্মরক্ষার জন্য মার্শাল আর্ট শেখান। আজকালকার যুগে মার্শাল আর্টটা জরুরী। মেয়েলী অনেক তো নিয়ম-নীতি শিখিয়েছেন, কীভাবে পোষাক পড়তে হবে, চলাফেরা কীভাবে করতে হবে, ধর্মপালন করতে হবে, এসব সবই শিখিয়েছেন। এবারে নিজেদের আত্মরক্ষা করাটা শেখান। মরার আগে অন্তত একটা উত্থিত লিঙ্গকে আঘাত করতে যেনো পারে। যে পৌরুষত্ব নিয়ে গর্ব করে পুরুষের দল, একবার তাদের গর্বকে খর্ব করুক। একদিন পত্রিকার পাতায় হেডলাইন দেখতে চাই “ধর্ষণ করতে গিয়ে ধর্ষকের মৃত্যু কিংবা লিঙ্গ কাটা গেছে।”
হ্যামিল্টন, কানাডা
৩১ আগষ্ট, ২০১৭ ইং।
১২টি মন্তব্য
মৌনতা রিতু
বাঁচো নারী তুমুলভাবে বাঁচো।
মেয়ে সন্তান হলে তাকে বড় হওয়ার সাথে সাথে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলা প্রয়োজন। সে যেন আঘাত করতে পারে এই সাহসটা তাদের ভিতরে ঢুকানো উচিৎ।
একটা এন্টি কাটার অন্তত ব্যাগে রাখুক। আমি বাসায় গেন্জি ওপ্লাজু পরি। আমার সন্তান যেন পোশাক নিয়ে কোনো কৌতুহল বোধ না করে এই বিষয়টা মাকে অবশ্যই শিখাতে হবে।
তবে আমার মাঝে মাঝে কি মনে হয় জান নীলনদ, মানবিক বোধেও কিছু পাপ পূণ্যের হিসেব থাকার কথা শিখানো উচিৎ। মৃত্যু পরবর্তী যে হিসেবটা এটাও মনে হয় বোঝানো উচিৎ। তবে ধর্মী গোড়ামি অবশ্যই না।
সত্যিই, এসব আর সহ্য হচ্ছে না। চারিদিক শুধু বিভৎস দৃশ্য।
এরমধ্যেই আমাদের ভাল থাকতে হবে।
ভাল থেকো নীলনদ। -{@ (3
নীলাঞ্জনা নীলা
শান্তসুন্দরী আপু তুমি খুবই সুন্দর বলেছো। I agree with that.
ভালো থেকো অনেক। -{@
ইঞ্জা
জাগো নারী জাগো, জাগো মানুষ জাগো, বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেললাম কিন্তু কেউ শুনেনা আপু 🙁
নীলাঞ্জনা নীলা
হ্যান্ডপাম্প ভাইয়া
“মানুষ নামের মানুষ আছে দুনিয়া বোঝাই
এই মানুষের ভীড়ে আমার সেই মানুষ নাই।”—-বুঝেছেন?
ইঞ্জা
আহারে….
নীলাঞ্জনা নীলা
🙁 ;(
জিসান শা ইকরাম
দেশটি নারীদের জন্য নরকের চেয়েও খারাপ হয়ে গিয়েছে। ধর্ষন এখন অতি স্বাভাবিক এবং নিয়মিত ঘটনা। সমাজের দৃষ্টিভংগি হচ্ছে, ধর্ষন হচ্ছে ধর্ষিতার কারনে। নারীর চলাফেরার কারনেই ধর্ষন হয়েছে। ধর্ষকের ধর্ষনে উৎসাহ দিয়েছে নারী।
মার্ষাল আর্টে কাজ হবেনা, প্রতিবাদী নারীর বিপক্ষেই অবস্থান নেয় প্রায় সব পুরুষ।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা তোমার মতো মানুষ যতোদিন এ পৃথিবীতে আছে, ততোদিন নারীদের পক্ষে বলার মতো মানুষও থাকবে।
তোমার মন্তব্যটা আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে।
ভালো থেকো। -{@
মোঃ মজিবর রহমান
“অনেকেই প্রশাসনের দোষ দেখে। কিন্তু ঘর থেকে যদি না শিক্ষা পায় ছেলেরা, প্রশাসন করবেটা কি? অস্বীকার করছি না প্রশাসনও দায়ী”
এখন বাবা মাও তাঁর সন্তানের দোষ দেখেনা। মা বাবা যদি ছেলে-মেয়েদের শাসনে রাখত অনেক সমস্যা দূর হত। দোষ জেনেও তাঁর সন্তাঙ্কে ঘুষ দিয়ে বা গ্রাম্য বা রাজনৈতিক শক্তির বা অর্থের প্রভাবে দোষী ছেলে-মেয়েকে রক্ষা করে।
আর প্রশাসনের কথা বলছেন তারাও ঘুষ নিয়ে অপরাধীকে মুক্ত রেখে নির্দোষ একজনকে দোষী সাব্যাস্ত করে জেলে পুরে দেয়।
হ্যাঁ আর আইন শৃঙ্খলা বাহীনি যদি ভাল হত তবে অনেক অনেক ভাল হত তাঁর চেয়ে বেশি খারাপ রাজনৈতিক শক্তি। ের বলে প্রশাসনের লকেরাও নাজেহাল। যদি তাঁদের কথা না শোনে তবে শাস্তি পেতে হয়।
নীলাঞ্জনা নীলা
মজিবর ভাই ঠিক বলেছেন, বাবা-মায়েরা এখন নিজের সন্তানের দোষ দেখেনা। আর তাই সন্তানরাও প্রশ্রয় পেয়ে যাচ্ছে।
আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করছি।
ভালো থাকুন।
নিতাই বাবু
দিদি আমার এই কথাটাই বলেছেন, একেবারে দশ কথার এক কথা। ওদের কর্ম অনুযায়ী ফাঁসি হওয়াটাই আমার কাম্য।
ধন্যবাদ দিদি ভালো থাকবেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
দাদা আপনার ধারাবাহিক লেখাগুলো ক্রমান্বয়ে পড়া হচ্ছেনা। মনে কিছু নেবেন না।
এখন ব্লগে আসা কম হয়।
অনেক ভালো থাকবেন। শারদীয়া দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা।