১৯৭৪ সাল, স্বাধীনতার মাত্র আড়াই বছরের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল অল্প অল্প করে সন্ত্রাস, ব্যাঙ্ক লুট আর দুর্নীতি। এসব দেখে তখন বেশীরভাগ মানুষের দাবি ছিল ,অবশ্য তা আলাপে , একটি বিচার চাই প্রকাশ্যে এবং অপরাধীকে গুলিস্তানের চৌরাস্তার কামানের সামনে ফাঁসি দিয়ে লাশ ঝুলিয়ে রাখলেই সন্ত্রাস, লুট বন্ধ হয়ে যাবে। । এই দাবী ছিল ক্ষোভের এবং আবেগের । যা অযৌক্তিক দাবী। সেই সময় একটি কামান ছিল গুলিস্তানের চৌরাস্তায়, অবশ্য সেটা পাকিস্তান আমল থেকেই ছিল । কিন্তু এসব আলাপে বুঝা যেত জনগণের ভিতরে ক্ষোভ জমা হচ্ছে। যা প্রশাসন কর্ণপাত করেন নাই। প্রশাসনের কাছে আমাদের চাওয়া ছিল যারা এসকল কু-কর্ম করছে তাঁদের বিচারের আওতায় এনে সুষ্ট বিচার করা, কিন্তু কেন যেন তা হয়নি? এবং এরপর ক্রমশ বারতে থাকে, যার ফলে দেশ অনেক নাম করা নেতা কর্মিকে হারিয়েছিল ।
৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল এবং সেই দশকের শুরুতে সারা বিশ্বব্যাপী খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। তবে এই দুর্ভিক্ষের মুল কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় সেই সময়ে হয়ে যাওয়া ভয়াবহ বন্যাকে।
চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভিক্ষের প্রকোপ ৭৪ এর মার্চ মাস থেকে দেখা দেয়। এই মাসের রংপুর অঞ্চলে প্রথম মন্দা দেখা দেয় এবং এই অঞ্চল ছিল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তিন অঞ্চলের একটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার মাত্র দুই বছর তিন মাসের মাথায় এটি ঘটে। সে সময় বাংলাদেশের মত একটি নতুন রাষ্ট্র তাদের ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো ও বাজার নিয়ে এটি সামাল দেয়ার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। নব্য নিয়োগপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাগণ ব্যাপক দুর্নিতিপ্রবণ ছিলেন। যদিও এপ্রিল মাসে সরকারের লোকেরা বলতে থাকেন যে, এই দুর্যোগ বেশি দিন স্থায়ী হবে না। কিন্তু চালের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল এবং দুর্ভিক্ষ আরও ব্যাপকতা লাভ করছিল। এপ্রিল থেকে জুলাই এই সময়টাতে সেসময় বাংলাদেশে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং ব্রহ্মপুত্র নদীতে বিধ্বংসী বন্যা দেখা দেয়; যা মে, জুলাইয়ের দিকে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে এর ফলে ধানক্ষেত ধ্বংস হয়ে যায় এবং চালের দাম অসম্ভব-ভাবে বেড়ে যায়। মার্চের শুরু থেকেই খবর আসতে থাকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে- মানুষ মরছে অনাহারে, না খেয়ে। বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, টাঙ্গাইলে বিরাজ করছে দুর্ভিক্ষ অবস্থা। আকাশচুম্বী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের হতে থাকে স্থানে স্থানে।
৪টি মন্তব্য
ইঞ্জা
দুর্দান্ত একটি লেখা লিখছেন ভাই, এইসব ইনফরমেশন কমই জানি আমি, চালিয়ে যান ভাই, পাশে আছি।
শুন্য শুন্যালয়
সিণ্ডিকেট যখন দলবদ্ধ হয়ে কাজ করে তখন তাদের সামলানো কঠিনই হয়ে পড়ে। মানুষের ভিড়েই অমানুষের বসবাস, ছিলো থাকবেই।
এই সিরিজটা দূর্বার আকর্ষনীয়, যেন সামনে বসে শোনা। লিখুন ভাইয়া।
মোঃ মজিবর রহমান
আওয়ামিলীগের সময় এই সব বেশি সংঘটিত তা আওয়ামিলীগ সামাল দিতে পারেনা। যা অতীতে ছিল এবং এখন সেই দুরাবস্থান। আর তখন দোষ দিতো জাসদ, সর্বহারা, সিরাজ শিকদার। এখন ক্ষমতায় আওয়ামিলীগ ক্ষমতা তাঁদের না বিরোধীদের! তাঁরা কাজ না করে দোষ দিচ্ছে অপরকে। কিন্তু ক্ষমতা প্রয়োগ করে যদি দুর্নীতি, অপবাদ দূর করতে না পারে তবে তাঁদের ক্ষমতায় থেকে কি লাভ।
সঞ্জয় কুমার
আপনাদের কাছ থেকেই আমরা জানবো আমাদের পূর্বের ইতিহাস ।
আরও লিখুন ।
আপনার সুস্থতা কামনা করছি ।
চেইন পোস্টে আগের পোস্টের লিংক থাকলে পাঠকদের জন্য সুবিধা হয় ।