আমাদের সময় ডিজে হাইস্কুলে দুপুরের টিফিন খাবার দেয়া হত। সে টিফিনের জন্য দিতে হত দুটাকা। টিফিনের মেনু ছিলু বর্ণিল যেমন- ঘি মাখা একমগ মুড়ি, কোনদিন ডিম, কোনদিন পাউরুটি কলা। টিফিনের দায়িত্বে ছিলেন শ্রদ্ধেয় প্রয়া্ত কোরবান আলী স্যার। কোন কোন দিন বলত এ হনুমান বালতিটা ধর, সেদিন হয়ত বাড়তি টিফিন জুড়তো কপালে। ৮৯ ব্যাচের ছাত্রদের পিকনিকের উদ্দ্যেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হল পাহাড়পুর। সকালের নাস্তা দেওয়ার জন্য তিনটি গাড়ি থামানো হল মহাস্থানের একটু উত্তরে ফাঁকা জায়গায়। কিছুক্ষণ পর অর্ধেকের মত টিফিন পেয়েছি, এমন সময় শ্রদ্ধেয় প্রয়াত ইমদাদ স্যার হন্তদন্ত হয়ে এসে বললেন তাড়াতাড়ি গাড়িতে ওঠ।
কি কারন বুঝে ওঠার আগেই সবাইকে জড়িয়ে গাড়িতে তুললেন। আমি সিটে বসে পাশের বন্ধু মান্নান (বর্তমানে পল্লী বিদ্যুত চাকুরীরত) কে বললাম কি হয়েছে? ও বলল জানালা দিয়ে গ্রামের দিকে তাকা। আমি মাথা বের করে দেখি গ্রাম ভেঙ্গে শখানিক লোক লাঠিশোঠা নিয়ে আমাদের গাড়ীর দিকে আসছে। বললাম তাতো দেখছি- কিন্তু কারন টা কি? ও বলল – ভ্যানে ঐ গ্রামের একটা মাল যাচ্ছিল, আমাদের গাড়ির ভীতর থেকে কে যেন ওড়না ধরতে উদ্দ্যেত হয়েছিল তবে ধরতে পারিনি। আমি প্রথমত ওর ”মাল” শব্দে আর কারণটা শুনে ভীমরি খাওয়ার জো। মনে মনে চিন্তা করছি যদি ধরতে পারত আমাদের দিয়ে সকালের নাস্তা সেরে ফেলতো। শেষে কেউ টিফিন পেলো কেউ পেলো না। পাহাড়পুর নেমে স্যারের কাছে একজনের টিফিনের জন্য সাফাই গাইতে গিয়ে স্যার বললেন- এখনতো নাস্তা পাসনি তোরাইতো ওদের সাকালের নাস্তা হয়ে যেতি। মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বললেন- কোন শয়তান এ কাজটি করেছে- এ মালটাকে খুজে বের কর, নইলে দুপুরের খাওয়া বন্ধ। আমি বললাম- এ যেন বাড়ীর রেওয়াজের মত।
বাড়িতে কোন অন্যায় করলে খাবার বন্ধ। সারাদিন পাহাড়পুর পাহারসম আনন্দ সমাপ্তি করে স্যার সবাইকে গাড়িতে উঠতে বললেন। আমরা ক্লান্তভরে গাড়িতে উঠে বসলাম। গাড়ি আর চলছে না, কারন জানতে চাওয়ায় পাশের বন্ধু বলল- আমাদের ভীতর কারা যেন পিকনিক স্পটের অনেক ডালিয়া গাছ তুলে সাবাড় করেছে। কারন অনুসন্ধানে জানা গেল ডালিয়া ফুল গাছের নিচে কেশুর জাতীয় ফল থাকে। সেই আশায় এ কম্ম সাধন করা হয়েছে। শেষে জরিমানা সাপেক্ষ্যে গাড়ি ছাড়ল। এ দিকে গাড়ীর ভীতর রাখা পানীয় একজনের জন্য একবোতল বরাদ্দ থাকলেও, কেউ খেয়েছি পাঁচবোতল, কেউ পায়নি। আসলে সকালের একটি ঘটনা পুরো ব্যবস্থাপনাকেই ভেঙ্গে ফেলেছে।
পরদিন স্কুল ক্যাম্পাসে মহাসমারোহে গতকালের ভয়ানক ঘটনার বিশ্লেষন করে সিদ্ধান্ত হল- ভবিষ্যতে আর পিকনিক নয়। বায়োলজি নিতেন সন্তোষ স্যার। বিশাল দেহের অধিকারী ছিলেন। বায়োলজী বিষয়ে এমন কিছু বিষয় আছে- সে কালে মুখে আনা নিষেধ। স্যার মানুষের জন্ম কি ভাবে হয়। সে বিষয়টি আমাদের বুঝাচ্ছেন। একটি মেয়ের সাথে আরেকটি ছেলে শুয়ে না থাকলে সন্তান হয় না। আমাদের মধ্যে একজন বলে ফেললো- স্যার আমরাতো মাবোনদের সাথেও শুয়ে থাকি। স্যার কি উত্তর দিবেন- বোঝে উঠতে পারছিলেন না। শেষে বললেন- সারাজীবন মা বোনের কাছে শুয়ে থাকবি । বিয়ে করবি না। স্যারকে ঐ বেটা আবার বলল- স্যার আপনি যে বললেন। স্যার তখন রাগত্ব স্বরে বললেন- একজগ পানি দিয়ে তোকে গিলে ফেলবো। আমরাতো মুচকি মুচকি হাসছি।
আমরা বুঝতে পারছি স্যার যেটা বোঝাচ্ছেন সেটা একটু অন্ধরমহলের বিষয়। কি বলতে কি বলব শেষে স্যারের পানিসহ খাদ্য না হয়ে যাই। পরে আবার বোঝাচ্ছেন- ছেলে বা মেয়ে হওয়ার জন্য পুরুষই দায়ী মেয়ে নয়। আরেকজন- উঠে বলল স্যার জন্মতো মেয়েদের থেকে হয় তাহলে আমরা কেমনে দোষী। এবার স্যার রেগে বললেন- এ বে এতো বোঝা লাগবেনা বড় হ । এ গ্লাস পানি দিয়ে গিলে ফেলবো। আসলে ঐ কালে আমাদের অনেক বিষয় অদেখাই ছিল। এখনতো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টয়লেটে কনডম দেখতে পাওয়া যায়।
চলবে –
৬টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
ছেলেরা সবসময়ই এমন বজ্জাত টাইপের হয়;
ওইসময়, সেইসময়, এখনকার সময় যখনই বলেন।
চলুক ইন্টারেস্টিং লেখাটি।
অস্ত্রপাচার নাকি অস্ত্রপচার হবে?
জিসান শা ইকরাম
কিছু পরামর্শঃ
# আপনার লেখায় কোনো প্যারাগ্রাফ নেই, পড়তে পাঠকদের কষ্ট হতে পারে, আমার হচ্ছে।
# আপনি আপনার লেখার মাঝে প্রায় আঁটকে আছেন, এই ব্লগে অনেক অনেক লেখক আছেন, তাঁদের লেখা পড়ে মন্তব্য করে তাঁদের সাথে একটি ব্লগীয় সম্পর্ক তৈরী করুন। এটি আপনাকেই করতে হবে। নতুবা আপনি যত ভালো লেখাই লেখুন না কেন, পাঠক পাবেন না।
শুভ ব্লগিং
শুভ ব্লগিং।
সাবিনা ইয়াসমিন
মেয়েদের “মাল” বলা হয়েছে , প্রথমে বুঝতে পারিনি। ওড়না টানা প্রসংটা না থাকলে বোঝা যেতনা। ছেলেদের মাঝে ননানা রকম সাংকেতিক কথাবার্তা চালু থাকে যা মেয়েদের বেলায় অতটা থাকে না।
বায়োলজি বা গার্হস্থ্য বিজ্ঞানে এমন কিছু চ্যাপ্টার আছে যেগুলোর ক্লাস করাতে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রায়ই গলদঘর্ম হয়ে যেতে হয়। ছাত্র-ছাত্রীরাও সুযোগ বুঝে তাদের নাজেহাল করতেই থাকে। হাসি পাচ্ছে স্যারের রাগন্বিত করুন মুখ কল্পনা করে।
লেখার মাঝখানে বিরতি দিয়ে পর্যাপ্ত যায়গা রেখে লিখবেন মামুন। এতে পাঠকদের পড়তে বুঝতে সুবিধা হবে।
ভালো থাকবেন। শুভকামনা 🌹🌹
তৌহিদ
এমন দুষ্টামি আমিও করেছি স্কুলে। চলুক লেখা।
ব্লগার সজীব
বিদ্যালয় জীবনের দুষ্টামির কথা মনে করিয়ে দিলেন ভাই। আরো লেখুন।
মাহমুদ আল মেহেদী
দুষ্টুমির কথা গুলো মনে পড়ে গেল।