আমি তো বুড়া হই গেসি। তাই কেউ আমারে কামে লিবার চায়না। বেকতে কয় আমি নাকি কাজ কইত্তে হারি না।যেইদিন কেউ দয়া করি কাজে নেয় সেইদিন ঘরের উনুনে আগুন জ্বলে।আর না হয় উপোস।এইডারে কি জীবন কয়!!!
চোখ মুছতে মুছতে আবুল কালাম বলে চলেন,”দ্যাশের লাই যুদ্ধ কইচ্চি,দ্যাশ স্বাধীন কইচ্চি। অতছ ৪৩বছরে সবার ভাইগ্য পাল্টাইসে,কিন্তুক আমার ভাইগ্যর পরিবর্তন অয় নাই। চাইরডা পুলামাইয়া ঘরে।মাইয়াগুলান বড় অইছে। বিয়া দিবার পারিনা। জায়গাজমি ও কিছু নাই যে বেচি কিছু কইররুম। তাই কামলা খাডি। দিন শেষে যা পাই তা দিয়া ঘরের খাওন আনি।
হুনচি,শেখের বেটি মুক্তিযোদ্ধাগোরে কত সুযোগসুবিধা দিতাসে। তাগোরে ভাতা দিতাসে।আমি তো আইজ পইযযন্ত ও কিসুই পাইলাম না। আমি তো ওসমানীর কাছে অস্র জমা দিসি। তিনি আমারে সনদ ও দিসে। তয় আমি কেন কিসু পাই না??
প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ, জীবনের এই শেষ সময়ে আইসা আমি আর কিসু চাই না। আমার পুলামাইয়াগুলা না খাইয়া মরতাসে। সুযোগসুবিধা আমার দরকার নাই।শুধু ভাতার কয়টা ট্যাকা আমারে দেও। আমি চাইরডা খাইয়া জীবন বাঁচাই।
(এতক্ষন যে মানুষটির কথা লিখলাম তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ। গাইবান্ধা সদরের সাহাপাড়া ইউনিয়নের তুলশিহাটে তার বাড়ি। তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ থাকার পর ও তিনি তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা না। যার কারনে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বা কোন সুযোগসুবিধা পাননা।)
১০টি মন্তব্য
লীলাবতী
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ এর মত হাজার মুক্তিযোদ্ধার চোখের পানিতে ভেষে যাবে এই দেশ।
হোমায়রা জাহান হিমু
লাভ কি?যাদের চোখে পড়ার তাদের চোখে যে পড়ে না।
আজিম
কী মন্তব্য করবো শ্রদ্ধেয়া, আমরা যে হয়ে গেছি অনূভুতিহীন অস্তিত্ব এক একজন । উপরের মন্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করা ছাড়া আপাতত: যে আমার কিছুই করার নাই ।
অতি আবেগী পোষ্টগুলি দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ । আপনার গত পোষ্টেের এক মন্তব্যে ইনাদের জন্য যে উদ্যোগের কথা আপনি বলেছিলেন, আশা করি সে ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন ।
হোমায়রা জাহান হিমু
কাজ চলছে,শীঘ্রই জানতে পারবেন।
শুন্য শুন্যালয়
৪৩ বছরেও একটা তালিকায় নাম ওঠানো যায়নি, হায়রে দেশ… যারা লম্বা লম্বা বুলি শোনায় তারা কোথায়? মরে গেলে তো অন্তত শহীদ টাইটেল টা পাওয়া যেতো… 🙁 এখন আর কস্ট হয়না, ক্ষোভ হয়।।
হোমায়রা জাহান হিমু
ক্ষোভটাকে শক্তিতে পরিনত করো ভাই।
ব্লগার সজীব
শেষ হবেনা আপু 🙁
আজিজুল ইসলাম
মহান মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার কাজে সংশ্লিষ্ট হওয়ার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে তরুন সমাজের দ্বিধা-দ্বন্দ কাটিয়ে ওঠা উচিৎ ।
মহান মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের কাজ করেছেন এখন তরুনদের উচিৎ তাঁদেরকে যোগ্য মর্যাদা দেওয়ার পথ খুঁজে বের করা ।
খসড়া
সে এখন বৃদ্ধ হয়েছে বেশ
তার জগত জুড়ে শুধু দুঃখের বেসাতি
অস্তিত্বের প্রতিটি রন্ধে
লাল নীল কষ্টের তান্ডব
মেরুদন্ডের নিকশ কালো স্রোতে
জিসান শা ইকরাম
কান্নার কি শেষ আছে? যুগ যুগ ধরে এটি চলবে।