চারুকলার এই সিঁড়িতে অগণিত স্মৃতি আমার। মোবাইলে ছবিটা দেখে বুকের ভেতর বর্ষা নামলো। চোখের সমানে ভেসে উঠলো সেই ক্যাম্পাস, সেই আলপনা আঁকা উপরে উঠার সিঁড়ি। কতদিন কত সময় এই সিঁড়িতে বসে অপেক্ষা করেছি,কখন তোমার ছুটি হবে,কখন তুমি কাছে এসে বসবে।
চারুকলার ছুটির কোন নির্দ্দিষ্ট নিয়ম ছিল না। ক্লাস শেষেও তুমি আঁকাঝাঁকা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে তোমাদের মাঝে ছিল তুখোড় প্রতিযোগীতা। কার কাজ সুন্দর হবে কে বেশী নাম্বার পাবে সেই প্রতিযোগীতা। আমার ছুটি হয়ে যাবার পর ছুটে আসতাম তোমার কাছে। পাগলের মতো ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করতাম। এক একটা মিনিটকে মনে হতো শত সহস্র বছর,সেকেন্ড গুলো পিন ফুটাতো গায়ে। কখন তোমার দেখা পাবো,কখন তুমি বের হবে।
ভার্সিটির ক্ষণিকা নামের লাল বাস চলে যেতো। দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে তোমার দেখা পেতাম।ততক্ষণে আমার পকেটের সামান্য ক’টা টাকা চা সিঙ্গারা খেয়ে শেষ। তুমি হাত ধরে ক্যান্টিনে নিয়ে যেতে। আবার ফিরে আসতাম চারুকলার পেছনের দীঘির কাছে।তখনো অনেক ছাত্রছাত্রী তাদের নির্মাণ শৈলী নিয়ে ব্যস্ত।আমরা দীঘির পারে একটু নিরালায় বসতাম। তুমি আমার কাঁধে মাথা রেখে তোমার ক্লাসের গল্প,তোমার মনের ভেতর যে সব কথা খেলা করে সবই অকপটে বলতে। ফেরার পথে রিক্সা নেবার সময় বলতাম, আমার পকেট শূন্য, তুমি বলতে সে আমি জানি,নতুন কিছু নয়। হিসেব করে রেখেছি,একদিন সুদে আসলে ফেরৎ চাইবো। তোমার সুদের মেয়াদ পূর্ণ হয়ে চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়েছে — বেড়েই চলছে।কই,তুমি তো নিতে এলে না?বিশ্বাস করো,ঋণের শেষ আমি রাখতে চাই না। শুধু একটি বার এসো।
১২টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
সোনেলা ব্লগে আপনাকে স্বাগতম।
নিয়মিত লিখুন, সহ ব্লগারদের লেখায় মন্তব্য দিয়ে উৎসাহিত করুণ।
শুভ কামনা।
শুভ ব্লগিং।
জিয়া আল-দীন
আমি নতুন। সোনেলা ব্লগে এটাই আমার প্রথম লেখা।আমি আপনাদের সাথেই থাকতে চাই। নিজের অর্জিত বোধজ্ঞানে লিখে যেতে চাই,সাথে আপনাদের লেখায় মন্তব্য করতে চাই। আমার লেখায় ভালমন্দ মন্তব্য শুনতে চাই। আমাকে সবাই উৎসাহিত কররেন এই প্রত্যাশা করি।
এই ব্লগে আসতে পেরে আমি আনন্দিত। কৃতজ্ঞতা জানাই জিসান শা ইকরাম ভাই সহ রোকসানা রুকু এবং খাদিজাতুল কোবরাকে। ধন্যবাদ।
রোকসানা খন্দকার রুকু
সোনেলায় আপনাকে স্বাগতম!!🌹🌹
আমি আপনার লেখার ফ্যান। সব বিষয়ে সমান লিখতে জানেন আপনি। আমি সরি! অনেক দেরীতে বলার জন্য।
অনুগল্প ভালো লেগেছে। থাকুন আমাদের সাথে।
জিয়া আল-দীন
গল্পটা আমার জীবন থেকে নেয়া। ভাল লেগেছে শোনে খুশি হলাম।
আমি আছি সোনেলা সভায়—
সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
রোকসানা খন্দকার রুকু
ধন্যবাদ ভাইয়া।
সঞ্জয় মালাকার
সোনেলায় আপনাকে স্বাগত,
চমৎকার লিখেছেন, পাঠে মুগ্ধ হলাম।
শুভ কামনা 🌹🌹
রেজওয়ানা কবির
সোনেলায় স্বাগতম ভাইয়া। ফিরে আসবে না হয়ত অনেকেই ঋন রেখেই যায় যা আর ফেরত দেয়া যায় না। লিখতে থাকুন, শুভকামনা।
জিয়া আল-দীন
এই ঋণ আমৃত্যু আমাকে বইতে হবে তা আমার জানাছিল না।যতটুকু জানি– ঋণের শেষ রাখতে নেই।
ধন্যবাদ রেজওয়ানা কবির আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
হালিমা আক্তার
স্বাগতম সোনেলায়। কিছু ঋণ কখনো শোধ করা যায়না। চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে। হয়তো কখনো ফিরে আসলেই কি আর শোধ করা যাবে। এ বোঝা চিরকাল বয়ে বেড়াতে হয়। ভালো লাগলো গল্পটা। শুভ কামনা রইলো।
জিয়া আল-দীন
ঋণের বোঝা আমাকে চাপ সৃষ্টি করে না।আমি নিজেই আবেগী হই,ব্যাকুল হই- প্রতীক্ষিত হই সে ফিরে আসবে। ভুলে যে যাই,অপেক্ষা নিকটের,প্রতীক্ষা দূরের — নিশ্চয়তা দেয় না।
ধন্যবাদ হালিমা আক্তার আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
সাবিনা ইয়াসমিন
ঋণ শোধবোধ হয়ে গেলে তাকে কি আর এমন করে খুঁজে পেতে চাইতেন? হয়তো না। হয়তো একারণেই সে আর ধরা দেয়নি। সে চেয়েছিল আপনি তাকে মনে রাখুন অপরিশোধিত ঋণের বোঝা নিয়ে।
সোনেলা পরিবারে আপনাকে সুস্বাগত জানাচ্ছি। বেশি বেশি লিখুন। শুভ কামনা 🌹🌹
রিতু জাহান
সোনেলায় স্বাগতম।
সব ঋণ কি শোধ করা যায়!
সব ঋণ শোধ হয় না,
শুভ কামনা রইলো