উদার মানুষের রচনা

নাজমুল হুদা ২২ জানুয়ারি ২০২১, শুক্রবার, ০৩:১২:০৯অপরাহ্ন একান্ত অনুভূতি ১৭ মন্তব্য
আপনার সমাজে কিংবা আশেপাশে উদার মনের মানুষ চেনা একদম সহজ- চাইলেই চেনা যায়। তাঁদের গুণাবলি প্রত্যক্ষ করলেই আপনি চিনতে পারবেন। তারা দৃষ্টি সীমানার অভ্যন্তরে ডজন খানেক গুণ নিয়ে বাস করে  বলে তা শেষ করা সম্ভব না।  সে-ই সব মানুষদের গুণ সম্বলিত লক্ষণ উদাহরণস্বরূপ চিত্রায়ন করাই যেতেই পারে। লক্ষ্য করলেই দেখবেন–
     ক. তারা জীবনে কখনও অর্থ সংকটে ভোগে না।
     খ. তারা ব্যক্তিকে অনুসরণ এবং চার্জবিহীন উপদেশ দিতে ও উপকার করতেও কার্পণ্য দেখায় না।
     গ. তারা চিরযৌবনের অধিকারী।
.
ক এর উদাহরণস্বরূপ চিত্র:
                          তারা আর্থিক লেনদেন করতে পারদর্শী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। কখন কাকে? কার ঘাড়ে? কিভাবে পরোপকারী হয়ে হাজির হবে টের পাওয়া মুশকিল। আপনি শুধু বুঝতে পারবেন কাকের বাসায় ডিম রেখে কোকিলের গান শুনা যাচ্ছে। বলুন- আহ্.. কি শান্তি!
.
খ এর উদাহরণস্বরূপ চিত্র:
                           আপনি আপনার প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস কিনতে চাচ্ছেন সেই উদার মনের মানুষগুলো নাযিল হয়ে আপনাকে বলবে- “এতো অযথা জিনিস কিনে কী লাভ?” আপনি তবুও সেই জিনিস কিনে নিয়ে আসলেন। তারপর সদ্য প্রেমিকার হাত স্পর্শ করলে যে শিহরণ অনুভূতি জাগে তিনিও সেই তখন সেই ভঙ্গিতে ক্রয়কৃত জিনিসের গা স্পর্শ করে জানতে চায়বে- দাম কত? আপনি দাম বলতেই চালতা টক খাওয়া কোনো খাদকের মতোই তাঁর দাঁতে শিরশিরানি লেগেছে এমন মুখের ভঙ্গিতে তড়িঘড়ি উত্তর দেবে- “এতো দাম দিয়ে কেনা লাগে? বড়লোকি দেখানো আরকি। আরো কম দামেরও তো ছিলো।” আপনি তখন ভাবনার দোলনায় দোল দোল খেতে নিজেই নিজেকে অভদ্রের মতো প্রশ্ন করে বসবেন- আসলেই কি ঠকে গেলাম, নাকি না?
.
গ এর উদাহরণস্বরূপ সচিত্র:
                                জীবনে, যৌবনে এবং চলার পথে মানুষের জীবনে কিছু অপরিহার্য প্রোডাক্ট ও যন্ত্রপাতি লাগে। তখন যদি চেকপোস্টের পুলিশের মতো তন্নতন্ন  খুঁজেন তাঁদের কাছে কিছুই পাবেন না। এমনকি কমলাপুর থেকে মোহনগঞ্জগামী কোনো রেলগাড়িতে (জীবনগাড়িতে) হঠাৎ করে যদি ছিনতাইকারী সন্দেহে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করেন। তারা বলবে- “আমার তো এতো কিছু লাগে না। নখ তাড়াতাড়ি লম্বা হয় না, কাটার লাগে না। শরীর ঘামে না। গন্ধ হয় না। পারফিউম কেমন কেমন একটা গন্ধ করে।” আরো যে কত কি হয়না, লাগেনা— আপনি সেই ভাবনায় অজ্ঞান হয়ে যাবেন। তারপর সজ্ঞান ফিরে পেলে আপনিই উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন- আপনার যা কিছু লাগে সেই উদার মানুষগুলোর বেশি বেশি ব্যবহারে লাগছে। সেই ভাবনা বেশি বেশি ভাবতে গেলেই নিজের মালিকানাও শেষে ভুলবশত ভুলে বসতে পারেন।
.
অতএব, আপনি তো কেবল তাঁদের সেই না লাগা কর্ম সম্পাদনের উছিলা হয়ে আসছেন। তারা আসছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না লাগার ছাড়পত্র নিয়ে চিরযৌবনের অধিকারী হয়ে বসে থাকতে আর দফায় দফায় মানুষের প্রয়োজনের দোরগোড়ায় “এতো কিছু লাগেনা– বাক্যে উদারতা বিলাতে। আর কি লাগে! আলহামদুলিল্লাহ!
১০০১জন ৮৮৬জন
0 Shares

১৭টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

লেখকের সর্বশেষ মন্তব্য

ফেইসবুকে সোনেলা ব্লগ