যাচ্ছিলাম এক স্কুলের পাশ দিয়া।সাউন্ড সিস্টেমের বিকট দ্রিম দ্রিম শব্দে কান ফাইট্যা যাবার অবস্থা।গেটে ভিড়, জিজ্ঞেস করে জানলাম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছে,একটু পরেই নাটক আরম্ভ হবে। নাটক? দেখতেই হয় তাহলে, কত্তদিন নাটক দেখিনা।গেট দিয়ে ঢুইকা পড়লাম।
উরেব্বাপ্স এত্ত ভীর?নাটক দেখুম কেমনে?ষ্টেজ তো ম্যালা দূর।ছুড কালে নাটক দেখছি এক্কেরে স্টেজের সামনে পাটিতে বইস্যা। স্টেজের সামনে কেমনে যাই? একটা সুই পাইলে ভালো হইত।হালকা গুঁতা দিতে দিতে সামনে চইল্যা যাওয়া যাইত। সুই নাই কি আর করা:(
‘দেখি দেখি সরেন তো,সাহেব আইছে (আসলে কিসের সাহেব,কোন সাহেব তা আমিই জানি না) ‘ কইতে কইতে কেনু দিয়া দু’একটা গুঁতা দিতে দিতে সামনের দিতে আগাইতাছি।
যাক বসার জায়গা পাইছি 🙂 ওম শান্তি ওম। কোন রকমে সামনের একটা চিপা চাপায় বইতে পারছি 🙂
এই যে নাটক শুরু হইল। বাহ মাশাআল্লাহ, কি সৌন্দর্য ! নায়ক আইয়া পরছে 🙂
নাটকের নামঃ শ্বশুর বাড়ি মধুর হাড়ি , বাহ বাহ খাসা একখান নাম।
নায়ক গ্রামের বাড়ি থেকে শহরে এসেছে, প্রথম বার শ্বশুর বাড়ি যাবে।বেশ সরল সে।কাগজে লেখা শ্বশুর বাড়ির ঠিকানা হারিয়ে ফেলেছে। সে বিশাল বিশাল অট্টালিকা দেখে চমকিত,আনন্দিত।অট্টালিকা দেখে চমকিত হলেও তাঁর উপলব্ধি’ধুর এই সব বাড়ির চাইতে আমাগো বাড়ি অন্নেক ভালো,ইচ্ছে মত উঠানো দৌড় ঝাঁপ করা যায়,লাফ দিয়ে পুকুরে পড়া যায়,নারকেল গাছে উঠে ডাব পেড়ে খাওয়া যায়। আমার বৌ তো এসবের কিছুই দেখলো না। বৌকে এই খুপড়ি গুলো থেকে নিয়ে যেতেই হবে। কিন্তু সমস্যা হলো, সে তো বাড়িই চেনে না। যাক লোকজনের কাছে জিজ্ঞেস করতে করতে শ্বশুর বাড়ি যাবে। তাঁর হাতে এক হাড়ি মিষ্টি, সব সময় পান খায় সে। ধুতি পড়া, উপরে পাঞ্জাবীর সাথে একটি কোট।দারুণ মানিয়েছে তাঁকে।
এই যে এই যে একজন পুজারী বামুন পাওয়া গেছে। বামুন মশাই বামুন মশাই আমাকে একটু আমার শ্বশুর বাড়ির রাস্তাটা দেখিয়ে দিন। কয়েকবার বলার পরে বামুনের প্রশ্নে নায়ক জানায়ঃ
আমার নাম শনি
বাবার নাম ননি
করছি আমি বিয়া
শ্বশুর বাড়ি গেছি ভুইলা।
ইয়া বড় এক বাড়ি,তার সামনে ইয়া বড় এক গেট।
বামুন বলে, আমার পথ ছেড়ে দাও, আমি চিনি না। একথা শুনেই শনি বামুনকে ষষ্ঠাঙ্গে প্রণাম করে,পায়ে হাত লাগে,বামন ঠাকুর চিৎকার করে বলে’তুই আমাকে ছুঁয়ে দিলি,আমার আবার স্নান করতে হবে। অভিশাপ দিতে দিতে বামন চলে যায়। শনির উপলব্ধি হয়, এত সহজে একজন ধর্মীয় গুরুর ছুত লাগে ? উজু ভেঙ্গে যায় ?
শনি সামনে আগায় আরো। একজন পথচারীকে থামায়, নিজের পরিচয় দেয় ‘আমার নাম শনি ………শ্বশুর বাড়ি গেছি ভুইলা।’ পথচারী খুবই আন্তরিক হয়ে বলে,আরে জামাই বাবু আমি তো আপনার কুটুম, আমাকে চিনতে পারেন নাই? আমি নারায়ণ। শনি আকাশের চাঁদ হাতে পাবার মত করে ঠিকানা জানতে চায়,নারায়ণ বলে বসুন আগে, একটু আলাপ করি। কুটুম যেহেতু, কি মিষ্টি এনেছে দেখতে চায়,একটি মিষ্টি খেতে চায়।সরল শনি মিষ্টির হাড়ি নারায়ণের হাতে দিলে গপাগপ কয়েকটা মিষ্টি সে গিলে ফেলে। কোন রকমে নারায়ণের কাছ থেকে মিষ্টির হাড়ি নেয় শনি। নারায়্ণ দৌড়ে দূরে চলে যায়।
বিষণ্ণ মনে শনি পথ চলে। তিনজন ভদ্র লোক দেখতে পায়।নিজের পরিচয় দেয় সে আগের মত করে।লোক তিনজন বলে যে তারা শনির শশুর বাড়ির এলাকার। শনি খুশি হয়। এরা পূজার জন্য চাঁদার রশিদ বেড় করে এবং অঞ্জন বাবুর জামাই এর বড় অংকের টাকা চাঁদা না দিলে,জামাই এবং শ্বশুর বাড়ির মান ইজ্জত শেষ হয়ে যাবে ইত্যাদি বলে শনির কাছে রাখা সব টাকাই চাঁদা হিসেবে নিয়ে যায়। যাবার আগে বলে যায় সোজা যাবেন,এরপর ডানে,এরপর ডানে,তারপর আবার ডানে গেলেই শ্বশুর বাড়ি পৌছে যাবে। টাকা না থাকায় কিছুটা মন খারাপ হলেও, বাড়ি যেতে পারবে ঠিকানা পেয়েছে ভেবে আনন্দিত হয়। তাঁদের কথামত সোজা গিয়ে তিনবার ডানে যাওয়ায় সে এই স্থানেই আবার ফিরে আসে।
শহরের মানুষ গুলো এমন কেন ?
আবার সামনে আগায় শনি। দেখা হয় একজনের সাথে,কানে কম শোনে সে।বিকট চিৎকার দিয়েও যতই সে বলে আমার নাম শনি — তখনই লোকটি বলে আজ তো সোমবার।শনিবার নয়। বাবার নাম রনি বলায় কানে কম শোনা লোকটা বলে ‘ননি এখানে পাওয়া যায় না,দূরে একটি দোকান দেখিয়ে দেয়। হতাশ শনি বুঝাতে বুঝাতে ক্লান্ত হয়ে যায়। এরপর এক বোবা আসে তাঁর কাছে, হাত পা ইত্যাদির মাধ্যমে ইশারা ইংগিতে সে বুঝাতে ব্যার্থ হয়। অভুক্ত ক্লান্ত শনি একটা পার্ক এর বেঞ্চে বসে।পিকনিক হচ্ছে সেখানে। গান বাজছে………… প্রায় ঘুম ঘুম তন্দ্রা ………।।
দর্শক আপনারাও মনে হয় ক্লান্ত। আসুন পিকনিকের গান শুনি। গানের মধ্যেই শনি পেয়ে যায় তাঁর শ্বশুর বাড়ির ঠিকানা।
শনি প্রায় ঘুমে তন্দ্রার মাঝে, গান বাজছে আগে কি আরামে চুরি করিতাম আমরা ,আগে কি আরামে চুরি করিতাম। আগে ধরা পরিলে মারতো না শরীরে,মেম্বার আসিলে ছাড়া পাইতাম, এখন যদি ধরে র্যাবেরা মারে, হাড্ডি গুড্ডি ছারাইয়া দেয় চিন্তায় পরিলাম …
আরে পাইছি পাইছি, ঠিকানা পাইছি। র্যাবের অফিসের পাশেই আমার শ্বশুর বাড়ি। তন্দ্রা থেকে জেগে এক দৌড়ে রাস্তায়। পার্কে না বসলে গান শোনা হতো না, গানের মধ্যে র্যাবের কথা শুনেই সব মনে পরে গেলো।
রঞ্জন বাবু অনেক আগেই ইহলোক থেকে বিদায় নিয়েছেন।বাড়ির কর্তা এখন তাঁর ছেলে নিরঞ্জন। আদরের ছোট বোনটাকে বিয়ে দিলেন,জামাই বাবু আজ আসবেন,কি কি বাজার করা যায় আলাপ করছেন ভৃত্য কালার সাথে।
আলাপের মধ্যেই চলে আসে তাঁর পেটুক ছেলে কার্তিক।রুই মাছ আনতে বলে বাবাকে,মাছের মাথা খাবে। বাবা ধমক দেয় এত খেয়ে খেয়ে হাতি হচ্ছো দিন দিন। ছেলে জোরে চিৎকার দিয়ে মাকে ডাক দেয় ‘মা আমাকে বাবা হাতি বলে ধমক দিছে।’
কি এত্তবড় কথা আমার ছেলেকে তুমি ধমক দিছো,তোমার এত্তবড় সাহস। না খেতে পেরে আমার ছেলে কত শুকিয়ে গ্যাছে,আহারে 🙁 যাও বাজে যাও, ছেলের পছন্দের রুই মাছ যদি আজ নাই আনো, তোমাকে বটি দিয়ে কেটে মাথা রান্না করে খাবো। স্ত্রীর এমন রণরঙ্গিণী অবস্থা দেখে আতংকে নিরঞ্জন দৌড়ে বাজারে যায়।
অবশেষে শনি শ্বশুর বাড়ি আসে। বৌদিকে দেখে কাচুমাচু করে বলে যে আমার প্রিয়তমা বৌকে এখনই দেখতে চাই। বৌদি রাতে দেখাবে বললেও জামাইয়ের আবদারে ননদ কে আনতে যায়।
ননদকে নিয়ে আসে হলুদ শাড়ি পরিয়ে। শনি বৌকে দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে নাচতে আরম্ভ করে।
বলি ও ননদি আর দু’মুঠো চাল ফেলে দে হাড়িতে, ঠাকুর জামাই এলো বাড়িতে বৌদি গান গাইতে থাকলে ধীরে ধীরে জামাইয়ের সাথে বউ, বউদি, পেটুক ছেলে, সবাই সে নাচে অংশ গ্রহণ করে।
নিরঞ্জন বাজার করে নিয়ে এসে দেখে চলছে গান আর নাচ, সেও অংশ নেয় নাচে।
এই গান আর নাচের মধ্য দিয়ে শেষ হয় নাটক।
নাটকে গাওয়া নাচ ও গানার কিছু অংশ দেখুন লাইভ , নাচ,গা্ন, দর্শকের হাততালিতে আপনিও না নেচে পারবেন না।
নাটক কেমন লাগলো জানাবেন।
৫২টি মন্তব্য
মাহামুদ
লাইভ শো দেখার মজাই অন্যরকম।
জিসান শা ইকরাম
ঠিক বলেছেন,খুব মজা পেয়েছি নাটক দেখে।
প্রহেলিকা
লেখা নিয়া মন্তব্য পরে আগে কন তিন নাম্বার ছবিতে পায়ের উপর পা দিয়ে যিনি বসে আছেন উনি কেডা? চেনা চেনা লাগে।
জিসান শা ইকরাম
আমারো তো একই প্রশ্ন,তিনি কেডা ? চেনা চেনা লাগে!
খেয়ালী মেয়ে
সবার পরে আইসা সবার সামনে বসছেন এটা মেনে নেওয়া যায় না 😮
গান শুনে, ভিডিও দেখে মজা পাইছি (y)
আপনি চাইলে আমাদেরকেও নাটক দেখার জন্য দাওয়াত করতে পারতেন…লেখা পরেই মনে হচ্ছে অনেক মজা হইছে, আর আপনার মতো আরাম করে সামনে বসে দেখতে না জানি আরো কতো মজা লাগতো..
সবশেষে আসল কথা হচ্ছে নাট্যকার হিসেবে দেখি আপনে সুপার ডুপার হিট (y)
জিসান শা ইকরাম
স্টেজের একদম সামনে জায়গা পেলাম কই?
সেখানে পাটিতে বসা পিচ্চি পাচ্চারা
আমি বসতেই পারিনি পাটিতে।
যেমন দেখেছি,বর্ননায় তার কিছুই আনতে পারিনি।
ধন্যবাদ 🙂
খেয়ালী মেয়ে
পাটিতে বসা পিচ্চি পাচ্চাদের ছবি কই?.. পিচ্চি বলে তাদের একটা ছবি নিবেন না, এটা হতে পারে না 🙁
জিসান শা ইকরাম
পিচ্চিদের ছবি দিলে, ষ্টেজ একদম পিচ্চি দেখায়,তাই দেইনি।
পিচ্চিরা পিচ্চিদের সাপোর্ট করে বুঝতে পারছি 🙂
খুঁজে পেলে দেবো।
খেয়ালী মেয়ে
কোন অযুহাত চলবে না–পিচ্চিদের ছবি খুঁজে বের করুন…
আর হ্যাঁ আমি কিন্তু পিচ্চি না 🙂
জিসান শা ইকরাম
আচ্ছা আজ দেবো খুঁজে পেলে।
হৃদয়ের স্পন্দন
লাইভ দেখলে ভালো লাগত। তবুও নাটক ই তো দেখলাম মনে হচ্ছে
জিসান শা ইকরাম
খুবই ভালো হয়েছে নাটক,
উপস্থাপনা নাটকের তুলনায় কিছুই না ।
খসড়া
মঞ্চ নাটক আমার খুব প্রিয়। সে নাটক যদি নিজের পরিচালনায় হয় তব তো সোনায় সোহাগা।
জিসান শা ইকরাম
আমারো খুব প্রিয় মঞ্চ নাটক।
পরিচালকঃ দুই চোরা ( বাবুল , স্বপন ) , আমি না 🙂
শুন্য শুন্যালয়
ইশ কতো যে বাস আর স্টেজ মিস করছি, সাহেবের এই কেনু গুন যদি থাকতো, এক্কেরে সামনে যাইয়া পায়ের উপর পা উঠাইয়া জায়গাখান দখল করতে পারতাম। নাটকের কথা কি আর কমু? এত্তো পঁচা নাটক কেমনে লেখে মানুষ, তাও ভালো, র্যাবের অফিসের পাশে শ্বশুরবাড়ি কইছে, র্যাবের অফিসে কয় নাই। তা বউরে গ্রামে কি নিয়া যাইতে পারছে, নাকি শুশুরবাড়ি আইসা বাড়ি যাওয়ার কথাই ভুইলা গ্যাছে?
মজা পেলাম ভাইয়া। নিজেদের স্কুলের প্রোগ্রামের একটা অন্যরকম অনুভূতি। আর প্রথম প্রোগ্রামের অনুভূতি বিশেষ কিছু।
জিসান শা ইকরাম
ভালো অনেকেই লিখতে পারে,পঁচা কত জনে লিখতে পারে?
আপনি পারলে একটা পঁচা লেখা দিন।
এমন খোলা স্থানে কাপড়ের স্টেজ নাটক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার আনন্দ আলাদা
ছোট বেলায় দেখেছি, এখনো টানে সেসব দিন।
কিছুটা সময় অতীতে চলে গিয়েছিলাম ………
শুন্য শুন্যালয়
হে হে নাটক লিখছেন পঁচা আবার ক্রেডিট নিচ্ছেন কয়জন পঁচা লিখতে পারে? আমি পারলে মানে, ও আমি হরহামেশা লিখে থাকি, আপনার জন্য কঠিন হইলেও আমার জন্য খুবই সহজ।
বুনো দি বললো আপনি নাকি মধ্যের জন? তাইলে ঠিক আছে ব্যাপুক ভাবুক আর জ্ঞানী চেহারা।
অতীতে চলে যাওয়ার এই মুহূর্ত গুলো সত্যি দারুণ। আপনার ও স্টেজে উঠতে ইচ্ছে করছিল, ঠিক কিনা বলেন?
জিসান শা ইকরাম
আচ্ছা পারলে একটা পচা লেখা দিন দেখি।
বুনো দি একটা প্রতিভা। ক্যামনে চিনে ফেললো!
স্টেজে উঠে কেউ গান গেলেও এখানে তা বলা হবে না 🙂
শুন্য শুন্যালয়
আমি যে এতো ভালো ঢিল মারি মারতে পারি তাতো জানতাম না!!! ভাইয়া এই প্রতিভা আপনি এতোদিনে ক্যাম্নে লুকাইলেন? জলদি সেই ভিডিও দেখতে চাই। গান শুনে কেউ দৌড়ে পালালো কিনা কিংবা ভিড় বেড়ে গেলো কিনা সেটাও দেখতে হবে।
জিসান শা ইকরাম
গানের ভিডিও দেখলে সোনেলার সবাই পালাবে,এটা নিশ্চিত।
তাই এই রিস্ক নেয়া ঠিক না ।
মেহেরী তাজ
মজা পাইছি। নাট্যকারের নাম আমি দেখি নাই। :p
প্রতি
বছর হতে থাকুক আপনার স্কুলের এই অনুষ্ঠান।
জিসান শা ইকরাম
নাট্যকারের নাম নাই 🙂
প্রতি বছরই হবে ইনশ আল্লাহ ।
নওশিন মিশু
নাটকটা মজার কিন্তু নাট্যকার কে …. ;?
জিসান শা ইকরাম
সবার অভিনয় খুবই চমৎকার ছিল।
নাট্যকারের নাম নেই।
ঘুমন্ত আমি
ছবি ব্লগেr একটা সুবিধা হচ্ছে মজাটা পুরোপুরি উপভোগ করা যায়! মজার চিত্রনাট্য!
জিসান শা ইকরাম
ক্যামেরা নিতে ভুলে গিয়েছিলাম।
মোবাইলে ফটো ভালো আসেনি।
অনেক দিন পরে দেখলাম।
অরণ্য
নাটকটি ভাল লাগলো। সে যে মাপের শিল্পীই হোক না কেন লাইভ শোর মজা আলাদা। আমরা সবাই তখন ঐ পরিবেশ ও সময়ে পুরো মিশে যাই। বেশ মজা করেছেন সময়টাতে, বুঝতে পারছি।
নাটক দেখতে দেখতে আমার যাত্রাদেখার কথা মনে পড়ল। সেই কালটা ভালই ছিল। ক্লাস টেন-এ পড়ি। ছুটিতে বাড়ি এসেছি। শুনলাম যাত্রা চলছে। মাকে বললাম “মা, আমি আজ যাত্রা দেখতে যাব”। মা বলল “এ সব যাত্রা এখন আর ভাল হয় না, যাত্রা দেখে ফাত্রা লোকে। তুই তো ছোটবেলায় যাত্রা দেখেছিস”। আমি বলেছিলাম “মা, ছোটবেলার যাত্রা ভুলে গেছি। আমার সংস্কৃতি আমার জানা উচিৎ”। মা রাজি হয়েছিলেন। সেদিনে যাত্রাপালার চেয়ে মূল আকর্ষণ ছিল জোস্নার নাচ। ঐ বয়সে জোস্নাকেই মনে হয়েছিল আমার দেখা সেরা সুন্দরী। আমি সামনের কাতারে থাকলেও কোন বাঁদরামি করা হয়নি আমার আমি শিক্ষিতের ছেলে বলে। 😀
জিসান শা ইকরাম
একটি স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীরা নাটকটি করেছে
তাঁদের সাধ্যের অতিরিক্ত ভালো করেছে অভিনয়।
দারুন আনন্দ পেয়েছি আমি।
‘ যাত্রা দেখে ফাত্রা লোকে ‘ — আরে এটি তো আমাদের বরিশাল অঞ্চলেও প্রচলিত,এতদিন ভাবতাম এ কথা মনে হয় বরিশাল অঞ্চলেই বলা হয়,এখন বুঝলাম উত্তরাঞ্চলেও এই কথা প্রচলিত।
জোস্নাকেই মনে হয়েছিল সেরা সুন্দরী ? হা হা হা হা , মজা পেলাম অরণ্য ভাই।
যাত্রা মিস করি এখন।
অরণ্য
স্কুলের পারফরমেন্স শুনে খুব ভাল লাগছে। যাক, ছেলে মেয়েরা একটা ভালকিছুর মধ্যে আছে। কলেজে এবং ভার্সিটির প্রোগ্রামে আমিও অভিনয় করতাম। বেশি মজা লাগতো রিহার্সেলের সময়। আর জোস্না ! আমার কাছে এখনও সেই আগের মতই। দেখেছিলাম তাকে এক রাতে মাত্র। ও ছবি এখনও মনে এঁটে আছে। 😀
জিসান শা ইকরাম
স্কুলের নাম ‘ উদ্বোধন ‘ স্কুল।
কবি গুরুর দেয়া নাম। জেলার সবচেয়ে বড় বেসরকারী স্কুল।
১৮০০+ ছাত্র ছাত্রী। ১০ বছর যাবত স্কুলে জড়িয়ে আছি। এই স্কুলের এক ছাত্রী দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ইতিহাস পাল্টে দেয়ায় ভুমিকা রেখেছে। [ https://sonelablog.com/archives/8789 ] এই লেখাটি পড়লে বুঝবেন। আমি অত্যন্ত গর্বিত এবং আনন্দিত এমন একটি স্কুলের সাথে যুক্ত হতে পেরে।
কিছু ছবি,কিছু মানুষ থেকে যায় আজীবন 🙂
অরণ্য
জিসান ভাই, লিংকটিতে গিয়ে খুব ভাল লাগলো। এমন স্কুলের সাথে যুক্ত থাকা নিশ্চয়ই অত্যন্ত গর্বের এবং আনন্দের বিষয়। স্কুলটির জন্য শুভ কামনা থাকবে সবসময়।
জিসান শা ইকরাম
ধন্যবাদ অরণ্য ভাই -{@
নুসরাত মৌরিন
আচ্ছা লুবনা আপু তাহলে এই স্কুলের ছাত্রী।খুব ভাল লাগলো এই স্কুলের কথা জেনে। 🙂
জিসান শা ইকরাম
@নুসরাত মৌরিন, হ্যা লুবনা এই স্কুলের ছাত্রী ছিলেন।
মারজানা ফেরদৌস রুবা
প্রথমতঃ নাটক ভালোই লাগছে, লাইভ দেখতে পারলে আরও ভালো লাগতো কিন্তু এই মুহূর্তে সে সুযোগ নাই। মঞ্চনাটক আমারও প্রিয়।
দ্বীতিয়তঃ স্ত্রী’র রণরঙ্গিনী রুপ নিয়ে কিঞ্চিত আপত্তি আছে। এতোটা ক্ষুব্ধ মনে হয় বাঙালী নারীরা হয়না যে, বটি দিয়ে কেটে স্বামীর মাথা রান্না করে খাওয়ার মতো।
সবশেষে বলবো, বেচারা শনি! নাটকের চরিত্রে তার বেহাল অবস্থা দেখা গেলেও, এমনটা কিন্তু বাস্তবেও ঘটছে। এইতো গেলো রবিবারেই আমার ভাই গিয়েছিলো গুলশানে তার জন্য বিমানের টিকেট ক্রয় করতে। বাসায় এসে সে যা বললো, ঠিক শনি বেচারার মতো এক ভুলাবালা টাইপ লোককে ফুসলিয়ে দুই প্রতারক তার টাকাপয়সাসহ ভিসা লাগানো পাসপোর্টটাও নিয়ে গেছে। বেচারার সে কি কান্না! জমি-জমা বিক্রি করে সে রোজগারের জন্য মধ্যপ্রাচ্যের কোথায যেনো যাবে। বাড়ি তার লালমনির হাট না কোথাও যেনো।
সবচেয়ে কষ্টকর টাকা নিবি নে, কিন্তু পাসপোর্টটাও নিয়ে গেলো!!
জিসান শা ইকরাম
নাটকের হাস্য রসের প্রয়োজনে এমন রূপ দরকার ছিলো 🙂
হ্যা এমন শনি আমাদের সমাজে আছে।
সহজ,সরল আমরা যাদেরকে বোকা বলেও থাকি।
প্রতারিত,লাঞ্চিত হতে থাকে এরা প্রতি মুহুর্তে।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
এ সব সামাজিক অনুষ্ঠান অনেকটা বিলুপ্তি নিরাপত্তার অজুহাতে।ভাল লাগল আমাকে নিয়ে গেল সেই ১৯৮৬ সালে যখন নিজে নাটক করতাম লিখতাম পরিচালনায়ও ছিলাম। -{@
জিসান শা ইকরাম
মনির ভাই, নিরাপত্তার দিকটা আসলে উপেক্ষা করার মত না।
এসব নাটক আসলেই ছোট বেলার কথা মনে করিয়ে দেয়।
বনলতা সেন
বয়স্ক তিন জনের মধ্যে আপনি মধ্যের জন? ঠিক বলেছি না?
ছবিগুলো দেখতে ভাল হয়নি। তবে নাটকের গল্পটি বেশ মজার।
জিসান শা ইকরাম
আমি কি আছি এখানে? মধ্যের জন কিনা বলা যাবে না 😀
মোবাইলে তোলা ফটো, লাইট এর কারনে এর চেয়ে ভালো আসেনি।
স্মৃতির নদীগুলো এলোমেলো...
অভিনয় খারাপ হলে নাটক দেখতে বেশি মজা লাগে।
জিসান শা ইকরাম
ভালোই বলেছেন।
আসলে এই ছোট প্রগ্রামটা ছিলো পুজার সন্ধ্যায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বেশ আনন্দঘন ছিল।
আবু জাকারিয়া
আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের গ্রামের স্কুলে মঞ্চ নাটকের আয়োজন করা হত। নাটক মঞ্চ হবে নাকি অন্য কিছু হবে তা তখন বুঝতাম না, নাটক নাম শুনেই ছুটে যেতাম স্কুল মাঠে। একা নয়, দল বেধে। নাটকের তখন কিছুই বুঝতাম না। তবু ভাল লাগত দল বেধে নাটক দেখতে যেতে, স্কুল মাঠে ঘুরে বেরাতে। আসলে অনেক মানুষ একযায়গায় জড় হলে ছোট ছেলেময়েদের মনে কৌতূহল তৈরী হয়, আনন্দ লাগে। সেই দিনগুলো এখন নেই। কবে সর্বশেষ মঞ্চ নাটক দেখেছি তা ভুলেও গেছি। সময়ের সাথে সাথে মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়। সম্ভবত তাইই হয়েছে।
জিসান শা ইকরাম
আমাদের ছোটবেলাটা মনে হয় সবারই এক ধরনের ছিল।
এই নাটক দেখে আসলে আমি সেই ছোট বেলায় চলে গিয়েছিলাম।
আগুন রঙের শিমুল
খেকজ
জিসান শা ইকরাম
🙂
রাইসুল জজ্
হা হা হা । চমৎকার 🙂
জিসান শা ইকরাম
🙂 -{@
রিমি রুম্মান
লেখাটি পড়ার সাথে সাথে যেন নয়ন সম্মুখে দেখলাম নাটকটি। এমনকি আমার নাম শনি… বাবার নাম ননী … এসব শুনলাম বাদ্যের তালে তালে। তবে ৩ নং ছবিতে একজন গণ্য মান্য ব্যক্তিকে বড় চেনা চেনা লাগলো । কেউ কি আমারে মনে করাইয়া দিবেন__ উনি ক্যাডা !! 😀
জিসান শা ইকরাম
বনলতা সেন উদ্ঘাটন করেছেন সামনের বয়স্ক তিন জনের মাঝের জন নাকি আমি 🙂 আপনারও তাই মনে হলে ভালোই হয়।
নুসরাত মৌরিন
হিহিহি!! 😀
আচ্ছা সামনের সারিতে পায়ের উপরে পা দিয়ে যিনি বসে আছেন উনি কি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন?ওনাকে কোথায় জানি দেখেছি বলে মনে হচ্ছে!! ;? :p
নাটকের কাহিনী তো মারাত্মক!! ভাল্লাগছে!
জিসান শা ইকরাম
ভাব সাব দেখে মনে হয় প্রধান অতিথিই ছিলেন তিনি। আমিও জানি কোথায় দেখেছি তাকে,মনে পরছে না 🙂
কাহিনী আমারো ভালো লেগেছে এবং নাটকটির উপস্থাপনাও।