মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধানো বই
উত্তর ইংল্যান্ডের লিওসের এক রাস্তায় সম্প্রতি মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধানো ৩০০ বছরের পুরোনো একটি বই পাওয়া গেছে। বইটির ভেতরের পৃষ্ঠাগুলোতে কালো কালির হাতের লেখা রয়েছে। ধারনা করা হয়, এটি সতেরো শতকে লেখা। বইটির বিষয়বস্তু ফরাসি ভাষায় লেখা। ফরাসি বিপ্লবের সময় এমন অনেক বই বেরিয়েছে যেগুলো এ বইটির মতো মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধানো। সপ্তদশ থেকে উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যে কখনো কখনো বই বাঁধাই করতে এ নৃশংস পদ্ধতি কাজে লাগানো হতো, যা ‘অ্যানথ্রোপোডারমিক বিবলিওপেজি’ নামে পরিচিত।
কোডেক্স জিগাস
কাঠের ওপর চামড়ায় মোড়ানো বিশাল আকারের হাতে লেখা একটি বই কোডেক্স জিগাস (ইংরেজীতে যার অর্থ বৃহত্তম বই) ৭৫ কেজি ওজনের এ বইটি ৩৬.২ ইঞ্চি লম্বা,১৯.৭ ইঞ্চি চওড়া এবং ৮.৬ইঞ্চি পুরু। বইটির ওজন ৭৪.৮ কেজি। কথিত আছে শয়তান এ বইটি লিখেছে। বইটির ২৯০ নম্বর পৃষ্ঠায় শয়তানের একটি ছবিও আঁকা আছে। আর এটিই হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র বই যেটিতে শয়তানের ছবি আছে। এ কারণে এটিকে শয়তানের বই বলা হয়! ১৬০ টি গাধার বাচ্চার চামড়া দিয়ে তৈরি বইটি। বিটিতে প্রথম দিকে ৩২০ টি পাতা ছিলো। তবে বর্তমানে এর আটটি পাতা নেই। বইটির যে পৃষ্ঠায় শয়তানের ছবি আঁকা আছে তার ঠিক উল্টো পৃষ্ঠায়ই আঁকা আছে স্বর্গের ছবি। মানুষের মধ্যে এমন ধারনাও আছে যে, বইটিতে এমন কিছু বাক্য আছে যা থেকে রশ্মি নির্গত হয়! আর সে কারনেই কডেক্স জাইগাসকে মধ্যযুগের অষ্টম আশ্চর্য বলে মনে করা হতো।বইটি কে লিখেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারনা বইটি যেই-ই লিখুক না কেনো, এটি লিখতে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ বছর সময় লেগেছে। বইটি লেখার কাজে পোকামাকড়ের বসতবাড়ি দিয়ে তৈরি এক ধরনের কালি ব্যবহার করা হয়েছে। আলোচিত এ বইটি এখন স্টকহোমের স্ট্যাইট লাইব্রেরি অব সুইডেনে সংরক্ষিত আছে।
তথ্যসূত্রঃ নলেজ এনসাইক্লোপিডিয়া।
১৪টি মন্তব্য
জিসান শা ইকরাম
মানুষের চামড়া দিয়ে বাঁধানো বই!
এও কি সম্ভব!? একজন মানুষ কিভাবে অন্য একজন মানুষের চামড়া দিয়ে বই বানাতে পারে!
শত হাজার বছর পূর্বের মানুষের সেই বর্বরতা আমরা এখনো ধারণ করে আছি।
কোডেক্স জিগাস গাধার চামড়া দিয়ে তৈরী, কিছুটা উন্নতি আছে এই বইয়ে যদিও এটি শয়তানের বই,
ধন্যবাদ এমন তথ্য দেয়ার জন্য।
মৌনতা রিতু
বাবার বইগুলো দেখতেছিলাম। এই ছবিটা আমার বইতেও আছে। এমনই রঙিন। কি বিভৎস লাগছিলো কেনো যেনো। বাবার এই এনসাইক্লোপিডিয়াটা খুব ভালো।
অনেক অজানা বিষয়গুলো আছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
নীলাঞ্জনা নীলা
“শয়তানের বই” এটা নিয়ে কোথায় জানি পড়েছিলাম! মনে হয় পত্রিকাতে। তবে ভুলে গিয়েছিলাম। তুমি আবার মনে করিয়ে দিলে।
পৃথিবীতে সবচেয়ে বড়ো শয়তান হলো মানুষ।
অনেক ভালো লিখেছো।
ভালো থেকো শান্তসুন্দরী আপু।
মৌনতা রিতু
তুমিও ভালো থেকো। সত্যিই মানুষের চেয়ে ভয়ঙ্কর কিছু নেই। মাঝে মাঝে কিছু কিছু বিষয় নিয়ে যখন পড়তে বসি তখন একা লাইব্রেরী রুমটাতে ভয়ই লাগে। পাশেই বাগানে দুইটা কবর বাঁধাই করা, মনে কতো কি যে ভাবনা আসে!
ভালো থেকো নীলনদ।
নীলাঞ্জনা নীলা
শান্তসুন্দরী আপু তোমার লাইব্রেরী রুম আছে? ইস! পাশে কবর? ওরে বাবা!
তুমিও ভালো থেকো আপু।
মৌনতা রিতু
আছে ছোটোখাটো একটা আপু। কবরগুলোকে রাতে অনুভব করি। খুবই অন্যরকম লাগে তখন। যদিও ভয় ভয় করে একটু।
মোঃ মজিবর রহমান
তুমি আবার মনে করিয়ে দিলে।
পৃথিবীতে সবচেয়ে বড়ো শয়তান হলো মানুষ। ঠীকৈ কৈছেণ নীলাপূ।
মৌনতা রিতু
হুম মানুষই ভয়ংকর। ভালো থাকবেন ভাই।
রেজওয়ান
মানুষের মত হিংস্র প্রাণী পৃথিবীতে হয়তো দ্বিতীয় কোনো প্রাণী নেই…
btw মানুষের চামড়ার হলে ১৬০ টি গাধার বাচ্চার চামড়া দিয়ে তৈরি বই কোনটা ?
মৌনতা রিতু
উপরের বইটি। ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইলো।
মনির হোসেন মমি(মা মাটি দেশ)
গুরুত্বপূর্ণ অন্তত আমার অজানা এ লেখাটি সেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। -{@
মৌনতা রিতু
ধন্যবাদ মনির ভাই। ভালো থাকবেন।
শুন্য শুন্যালয়
শয়তানের বই এর কথা পড়েছি আগে। মানুষের চামড়ার বই। ইন্টারেস্টিং। যারা এই বই বানিয়েছে তারাই সম্ভবত পরে স্লোগান বানিয়েছ, ওমুকের চামড়া তুলে নেব আমরা। 🙂
মৌনতা রিতু
হা হা হা। হয়তো। সত্যই মানুষের কি বিভৎস সব শখ!