আমি জেনেশুনে বিষ করছি পান ।
যারা ঢাকায় থাকেন তাঁদের এইটা ফেভারিট সং হওয়া উচিত ।
কি খাবেন সবকিছুতেই ভেজাল + বিষ । পানি থেকে শুরু করে সব কিছুই টাকা দিয়েই কিনে খেতে হয় । মাঝে মাঝে ভাবি এই যে বুক ভরে শ্বাস নিচ্ছি এটাও না একসময় কিনে নিতে হয় ! তারপরও এই নিশ্বাস দিয়েও ফুসফুসে ঢুকছে বিষাক্ত সিসা । ধীরে ধীরে স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে আমন্ত্রণ করছি ।
মাছ, দুধ, ফলসহ, শিশুখাদ্য কি নিরাপদ। আমরা সাধারন মানুষ যাবো কোথায়, খাবো কি ? খাবার মানে, বিষ আর বিষ। সৈয়দ মুজতবা আলীর মতকে অনুকরন করে বলা যায় – “ না খেলে বাঁচবেন ৭ দিন, আর খেলে বাঁচবেন 3/5 দিন।” অসাধু ব্যবসায়িরা সকল ধরনের খাদ্য পন্যে ফরমালিন সহ মারাত্বক বিষাক্ত রাসায়নিক মিশাচ্ছে।
একবার বাড়িতে যাচ্ছি দুই বন্ধু । আমার বন্ধু রাস্তায় খাওয়ার জন্য এবং বাড়িতে ছোট ভাইবোনের জন্য বড় বড় দুই লিটার ম্যাংগো জুস কিনতে যাচ্ছিলো আমি নিষেধ করলাম । পরিবর্তে শুধু দুই লিটার মাম পানি নিলাম । এটা গাড়িতে বসে খাওয়ার জন্য । চল বাসে বসে আমি তোকে বিস্তারিত বোঝাচ্ছি ।
এক লিটার জুসের দাম কত ? ৭০ টাকা । এরমধ্যে বিজ্ঞাপন খরচ , উৎপাদন খরচ বিভিন্ন পক্ষের মুনাফা যুক্ত আছে । তাঁর মানে এই পণ্যটার উৎপাদন খরচ ৭০ টাকা নয় , আরও কম । এবারে চিন্তা কর এক কেজি ভাল আমের দাম কত ১২০ টাকার কম নয় । এই এক কেজি আম দিয়ে কিন্ত ১লিটার জুস পাওয়া যাবে না । সব কিছু বাদ দিলে এক লিটারের অনেক কম জুস তৈরি করা যাবে । তাঁহলে তোর এই এক লিটার জুস কোম্পানি কিভাবে দিচ্ছে ? এর মধ্যে কি কি আছে ?
একদম সঠিক কথা বন্ধু । আজ থেকে আর এসব আজেবাজে জিনিস কিনব না । কিন্তু এতদিন পর বাড়ি যাচ্ছি কিছু তো একটা নিয়ে যাওয়া উচিত ।
তাহলে কিছু দেশী ফল নিয়ে যেতে পারিস ।
দেশী ফল তো ঢাকার চেয়ে গ্রামেই ভালো পাওয়া যায় ।
তবে আর কি এসব বাজে জিনিস না নিয়ে ওদের জন্য গল্পের বই বা অন্যকিছু নিতে পারিস । আর ওদের কাছে সবচেয়ে প্রিয় তোর ভালবাসা , ওটাই দিস । ওতে কোন ভেজাল নেই , নিষ্পাপ পবিত্র ভালবাসা ।
সম্প্রতি পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফলে ফরমালিন মেশানোর ভয়ঙ্কর তথ্য। চলতি বছরে জুন মাসে পবা ঢাকার মৌসুমি ফলে ফরমালিনের অবস্থা পরীক্ষার জন্য ১০ দিনব্যাপী এক কর্মসূচি চালায়। এতে ঢাকার ২৯টি এলাকা থেকে সংগৃহীত ফলের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি ৮২ শতাংশ আম, ৯১ শতাংশ কলা, ১০০ শতাংশ মালটা, ৫৯ শতাংশ আপেল, ৯৫ শতাংশ আঙ্গুর, ৭৭ শতাংশ খেজুর এ ফরমালিনের উপস্থিতি পায়। দুধেও ফরমালিন : এখন দুধে মেশানো হচ্ছে ফরমালিন।
মরিচের গুড়ায় ইটের গুঁড়া । মাছে দুধে ফরমালিন , ফিল্টার পানির বদলে টয়লেটের পানি , সেমাই তে সাবান তৈরির উপকরণ ।
এভাবেই আমরা প্রতিদিন যা খাচ্ছি সবটাই ভেজাল ।
নিয়ন আলোয় শহুরে চাঁদের আলো টাকেও মনেহয় নকল ।
ইট কাঠ পাথর আর কংক্রিটের শহরে নিজেকে বড্ড বেশী একঘরে মনেহয় ।
১৯টি মন্তব্য
ইমন
দাদা
এইটা নিয়া আমাদের একটা সামাজিক আন্দোলন ঘরে তুলা উচিত।আর আপনাকে ধন্যবাদ গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়ে লেখার জন্য। 😀
সঞ্জয় কুমার
অনেক ধন্যবাদ ইমন ভাই
ইমন
🙂
মারজানা ফেরদৌস রুবা
গত বছর ফরমালিন নিয়ে খুব হৈচৈ হওয়াতে, সরকারও তৎপর ছিলো আর মানুষও একটু সজাগ হয়েছিলো। ফলে মৌসুমী ফল ব্যবসায়ীরা বেশ একটা ধাক্কা খেয়েছিলো। আশা করছি, এ বছর বাজারে মৌসুমী ফলের মধ্যে ভেজাল একটু কম থাকতে পারে।
তবুও বাঙালীর তো আবার গোল্ডফিস মেমোরী। খুব ভালো করেছেন লিখে। আমিও ভাবছিলাম এ বছর সীজন আসার আগে থেকেই একটু নাড়া দিতে হবে। আমরা এভাবেই অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছি। চিল্লাপাল্লা হলে একটু নাড়া খায়, তারপর আবার সব আগের মতো।
মানুষের বিবেকে পচন ধরেছে। বোধ হারিয়ে গেছে। বোধসম্পন্ন মানুষ সংখ্যালঘুতে এসে ঠেকেছে।
সঞ্জয় কুমার
লিখতে থাকুন ।সবাই না হোক যদি একজনও সচেতন হয় ওটাই আমাদের স্বার্থকতা
খেয়ালী মেয়ে
না খেলে বাঁচবেন ৭ দিন, আর খেলে বাঁচবেন 3/5 দিন।”—-কি করা যায় ;?
সঞ্জয় কুমার
সেটাই ভাবছি । কি করা উচিত ?
কৃন্তনিকা
ভীষণ যুগোপযুগী পোস্ট…
সঞ্জয় কুমার
ধন্যবাদ
ঘুমন্ত আমি
ভেজাল খেতে খেতে আমরা এখন ভেজাল প্রুফ হয়ে গেছি!
সঞ্জয় কুমার
তেমনি মনে হচ্ছে ভেজাল ছাড়া আমাদের চলেই না
আশা জাগানিয়া
আচ্ছা ফরমালিনে ভেজাল দিতে পারেনা অসাধু ব্যবসায়ীরা? এই একটি ক্ষেত্রে তাহলে সমর্থন দিতাম ভেজালে।
সঞ্জয় কুমার
হা হা হা ।। চরম বলেছেন বস
অনিকেত নন্দিনী
বাতাস থেকে অক্সিজেনের পাশাপাশি কার্বন ডাই অক্সাইড/কার্বন মনোক্সাইড নেয়ার মতো করে আমরা জেনেশুনেই ভেজাল খাই। ঢাকার বাতাসে ভেজাল, পানিতে ভেজাল, খাবারে ভেজাল এমনকি দালান কোঠা তৈরিতেও ভেজাল! কিসে নেই ভেজাল?
সঞ্জয় কুমার
ঠিকই বলেছেন ।।আমরা ভেজাল মানুষ
জিসান শা ইকরাম
ভালো পোষ্ট।
সঞ্জয় কুমার
ধন্যবাদ
মেহেরী তাজ
একদম সত্যকথা………
বাঁচার উপাই কি????
সঞ্জয় কুমার
মৃত্যু বরণ করা 😛 । শহুরে থাকে গেয়ো পরিবেশ ভালভাবে বাঁচার জন্য উপযুক্ত