আত্মহত্যার প্রবনতা
_____________________
জীবনের মূল্য মানুষকে না বুজিয়ে, পন্যের মূল্য বুজাতে গেলে আত্নহত্যা কমবে না, আরো ৩ গুন বারবে।
প্রতিবছর সারাবিশ্বে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আত্নহত্যা করে। অর্থাৎ প্রতি ৪০ সেকেন্ডে সারাবিশ্বে কোথাও না কোথাও একজন করে মানুষ আত্নহত্যা করছে। যেখানে পুরুষের সংখ্যা নারীর তুলনায় প্রায় ৩-৪ গুন বেশী। দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে,সারাবিশ্বে আত্নহত্যা করার সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ম। আমাদের দেশের ১৫-২৯ বছর বয়সী ছেলে মেয়েদের আত্নহত্যা করার প্রবনতা সবচেয়ে বেশি। মূলত বয়সন্ধিকালে ছেলে মেয়েরা বেশি আবেগপ্রবণ হয়। যার ফলে তাদের কাছে মনে হয়,তারা যেভাবে চাচ্ছে ঠিক সেভাবেই সবকিছু চলবে। তারা জগৎটাকে তাদের মতো করে সাজাতে শুরু করে। যেখানে বাস্তবতার কোন অস্তিত্ব থাকেনা। কিন্তু পরবর্তীতে যখন তাদের ভাবনার বিপরীত সব সংঘটিত হয় তখন তারা তাদের বোঝা মনে করতে শুরু করে। ফলে তারা আত্নহত্যার মতো ভূল সিদ্ধান্তের দিকে পা বাড়ায়। এছাড়াও পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যা, যৌতুক সমস্যা, পরিক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল করতে না পারা(এ বছর এইচ এস এসসি পরিক্ষায় ফেল/অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফল ধারীদের মধ্যে এটি অধিক পরিলক্ষিত হয়) , পরিবারে অশান্তি, কাছের মানুষের অবহেলা ছাড়াও প্রেমজনিত বিভিন্ন কারনে আজ আত্নহত্যা সংঘটিত হচ্ছে। নিজেকে সমাজে একা ভাবা,অবহেলিত মনে করা ইত্যাদি বিষয় আত্নহত্যার প্রবনতা দিন দিন বাড়িয়ে তুলছে। এছাড়া বিভিন্ন টিভি সিরিয়াল, সামর্থের বাইরে কিছু আশা করা এসব কারনে অনেকেই মানসিক অশান্তিতে ভুগছেন এবং ফলাফল স্বরুপ আত্মহত্যাকে বেছে নিচ্ছেন। আর উক্ত সমস্যাগুলোর কারনেই আজ আমাদের আমাদের দেশে আত্নহত্যার পরিমান ব্যাপক হারে বেড়ে চলছে।
সামাজিক অবক্ষয়
____________________
কর্তব্য নিষ্ঠা, ধৈর্য,শিষ্টাচার, সৌজন্যবোধ, নিয়মানুবর্তিতা, অধ্যবসায়, নান্দনিক দেশপ্রেম, কল্যাণবোধ, পারস্পরিক মমতাবোধ ইত্যাদি নৈতিক গুণাবলী লোপ পাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়াকে বলে সামাজিক অবক্ষয়। আমরা সবাই আজ আত্নকেন্দ্রীক মনোভাব সম্পন্ন। আমরা অন্যদের নিয়ে আজ ভাবিনা। আজ আমরা সবাই মানবিকতা নামক কথাটি থেকে অনেক দূরে সরে গেছি। আমরা নিজেকে নিয়ে ভাবতে এখন খুব বেশি ভালবাসি। ফলশ্রুতিতে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন প্রকার সামাজিক সমস্যা। বাইরে দেশপ্রেমের নমুনা লাগায় ভিতরে আমরা দেশত্যাগের কথা চিন্তা করি। অন্যের সমস্যায় সাহায্য করার থেকে আজ আমরা সেটি দেখে অন্যের সামনে ব্যাখ্যা করতে পছন্দ করি। মানবিকতা আজ অমানবিকতার কাছে জিম্মি। এসব সামাজিক অবক্ষয়ের প্রবনতা দিন দিন বেড়েই চলছে। এর প্রধান কারনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, মানবিকতা লোভ,অধিক হারে কৃত্রিমতায় নির্ভরশীলতা,মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলা,আত্নকেন্দ্রিক মনোভাব ইত্যাদি। সামাজিক অবক্ষয়ের কারনে আজ আমরা ভুলে গেছি, আমরা মানুষ। অন্যের কল্যাণে আজ আমরা ব্যাথিত হই। এসব কারনে আজ সামাজিক অবক্ষয় বেড়ে চলছে,আর লোপ পাচ্ছে আমাদের প্রকৃত সামাজিকীকরণ।
প্রতিকার সমূহ
___________________
আত্নহত্যাঃ
১. আমাদের নিজেদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
২. পারিবারিক সম্পর্ক ভালো রাখতে হবে।
৩. একে অপরকে বুজার চেষ্টা করতে হবে।
৪. যৌতুক প্রথা নির্মূলে সরকারের পাশাপাশি জনগনকে সচেতন হতে হবে।
৫. নিজেদের বোঝা মনে করা যাবে না।
৬. সবসময় হাসিখুশি থাকতে হবে।
৭. সবার আচরণগত দিকে বয়োজোষ্ঠদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
৮. হতাশায় ভুগলে কাছের মানুষের সাথে তা শেয়ার করতে হবে।
৯. অবসর সময়ে গল্পের বই বা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে হবে।
১০. সর্বোপরি নিজেদের জীবনের মূল্য বুজতে হবে এবং ভালো কিছু করার দৃঢ় মনোবল থাকতে হবে।
সামাজিক অবক্ষয়ঃ
১. নিজেদেরকে দেশের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসাবে গড়ে হবে।
২. আত্নকেন্দ্রিক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
৩. শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন করতে হবে।
৪. নিঃস্বার্থের মতো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের স্বার্থে কাজ করে যেতে হবে।
৫. বিপদে একে অপরকে সাহায্য করার মানসিকতা থাকতে হবে।
৬. জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে মিলেমিশে বসবাস করতে হবে।
৭. সামাজিক অবক্ষয় রোধে বিভিন্ন সেমিনার, আলোচনা সভার আয়োজন করে জনগনকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
৮. সচেতনতা মূলক কার্জক্রম (টিভি শো,নাটক) ইত্যাদির মাধ্যমে সামাজিক অবক্ষয় রোধে জনগনকে সচেতন করে গড়ে তোলা।
৯. নৈতিক ও আদর্শিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
১০. এছাড়া সামাজিক অবক্ষয় রোধে সরকারকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
২১টি মন্তব্য
অনন্য অর্ণব
গতকাল ভাবছিলাম এই নিয়ে কিছু লিখবো। একটু স্টাডি ও করলাম। কিছু তথ্য উপাত্ত কালেকশন ও করলাম। অথচ দাদাভাই আমাকে গোল দিয়ে দিলেন।
রাফি আরাফাত
আল্লাহ রে, এটা কি হলো”! লেখাটা অনেক আগের আমার, কি জানি মনে হলো, আজকে দিলাম। আহা রে, যাক আপনার আমার মিল আছে। ভালো লাগলো দাদা ভাই,সামনে আপনি আমাক গোল দিয়েন!
তৌহিদ
লেখাটি আপনার!! কবে কোথায় লিখেছিলেন? আপনিতো এই লেখা অন্যের কাছ থেকে কপি করেছেন!!
তৌহিদ
রাফি ভাই, আপনার একই লেখা বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম নেটে। তবে আপনার লেখাটি সবার আগে পোষ্ট হয়েছে দেখলাম। সবাই আপনার লেখাই কপি করেছে মনে হয়। তবে তারিখ সবার একই। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখিত ভাই। ভালো থাকবেন।
সুরাইয়া পারভিন
চমৎকার পোস্ট করেছেন। ঘুম ভেঙ্গেই এতো সুন্দর কথা গুলো পড়লাম।ভালো লাগলো
এটা শুধু লেখায় নয় মানুষ যদি মস্তিষ্কে ধারণ করতো তাহলে সামাজিক অবক্ষয় অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হতো
রাফি আরাফাত
আসলেই,বুঝে বাস্তবায়ন করতে পারলে হয়তো আমরা আর এসব সমস্যায় কম পরতাম।
ধন্যবাদ ভালো থাকবেন
এস.জেড বাবু
এসব বিষয় নিয়ে এমন সুন্দর সুন্দর লিখা ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে দেয়া উচিত, যেন সবাই একবার হলেও পড়ে দেখে।
হতাশা সবচেয়ে বড় কারণ বলে মনে হয়-
চমৎকার পোস্টে অভিনন্দন রইলো।
রাফি আরাফাত
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, ভালো থাকবেন
জিসান শা ইকরাম
প্রতি চল্লিশ সেকেন্ডে একজন আত্মহত্যা করে!
আত্মহত্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশ দশম!
ভাবাই যায় না এমন অবস্থা।
অনেক ভালো একটি পোষ্ট দিয়েছ রাফি,
এমন পোষ্ট আশাকরি তোমার কাছে আরো।
শুভ কামনা।
রাফি আরাফাত
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। ইনশাআল্লাহ করবো আরও। ভালো থাকবেন ভাই।
সাবিনা ইয়াসমিন
দেশ কালের বিবেচনায় আমাদের দেশের আত্মহত্যার পরিমান কমই বলবো। আমাদের দেশে যত না আত্মহত্যা করা হয়, তার চেয়ে বেশি হত্যাকে আত্মহত্যার নামে প্রচার করা হয়ে থাকে। টিনেজ মেয়েদের বেলায় বেশিরভাগ এটা হয়। প্রতিটি মৃত্যুই ভিষন কষ্টের। তবে আত্মহত্যার মত অপ্রত্যাশিত মৃত্যু কারো কাম্য নয়। একজন আত্মহত্যাকারীর মৃত্যুর সাথে প্ররোচনাকারী সহ তার আশেপাশের প্রায় সবাইকে এর দ্বায় নিতে হয়। একজন মানুষ হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত নেয় না। সে অবশ্যই আপ্রান চেষ্টা করে ঐ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে। কিন্তু তাকে বা তার সমস্যা সমাধানের পথ না দেখিয়ে তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়াও হত্যা করার সামিল।
ভালো লাগলো লেখাটি। ছোট ছোট বানান ভুলের কারনে লেখাটি একটু দৃষ্টিকটু লেগেছে। সম্পাদনা করে নিলে ভালো হয়।
শুভ কামনা 🌹🌹
রাফি আরাফাত
অবশ্যই আপু। মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন
ছাইরাছ হেলাল
এই পরিসংখ্যানটি জানা ছিল না, ভাবতেই মন কেমন করা ভাব জেগে উঠছে।
প্রতিকার সমূহ পড়ে কিছুটা আশান্বিত ও হচ্ছি। আপনি/আপনারা কেউ না কেউ এ জটিল বিষয়ে নিয়ে এমন চমৎকার করে ভাবছে/লিখছে।
অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
রাফি আরাফাত
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই
নিতাই বাবু
‘আত্মহত্যা’ সমাজে এ-এক আতঙ্কের নাম। এ-নিয়ে ভাবলেই মনটা আঁতকে ওঠে। শরীর শিউরে ওঠে। নিজের চোখে অশ্রু ঝরে। নিজ সন্তানের কথা মনে পড়ে। আর বেশিকিছু লিখতে পারছি না। আমাকে প্রশ্নও করবেন না, প্লিজ!
আপনার লেখাটা এর আগেও পড়েছি ঠিক, কিন্তু মন্তব্য করিনি। এখন নিজেরই অনুভূতি প্রকাশ করলাম।
রাফি আরাফাত
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই
তৌহিদ
রাফি আপনি এই লেখাটি কপি করেছেন কেন? এটি যার লেখা তার নামের কার্টেসি পর্যন্ত দেননি। আপনিতো এটি নিজের ভাষায় দিতে পারতেন!!
ব্লগে অন্যের লেখা কপি করে নিজের নামে চালানো উচিত নয়। এবং এতে ব্লগ নানানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
উপরে যারা মুল্যবান সময় ব্যয় করে গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন তারা কি এতে ছোট হয়ে গেলোনা?
আশাকরি বুঝতে পেরেছেন। আপনি ভালো লেখেন বলেই বলছি, নিজেই লিখুন দেখবেন এর চেয়েও ভালো কিছু লিখতে পারবেন।
ব্লগে কারও লেখা বা তথ্য কপি করে লিখলে প্রথমে আপনার বক্তব্য লিখবেন এর পরে সেই লেখাটি লিখবেন।
আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
তৌহিদ
রাফি ভাই, আপনার একই লেখা বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম নেটে। তবে আপনার লেখাটি সবার আগে পোষ্ট হয়েছে দেখলাম। সবাই আপনার লেখাই কপি করেছে মনে হয়। তবে তারিখ সবার একই। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখিত ভাই। ভালো থাকবেন।
রাফি আরাফাত
এমন হয় ভাই৷ দেশে কপিবাজের অভাব নাই।ভালো থাকবেন প্রিয় ভাই।
তৌহিদ
আপনিও ভালো থাকবেন ভাই।
আরজু মুক্তা
শুনেছি, জাপানে এক পাহাড় আছে। সবাই সেখানে গিয়ে আত্মহত্যা করে।