লিখতে লিখতে সকাল হয়ে গেলো।একটা চিঠি লিখতে যদি এক রাত চলে যায় তবে একটা কবিতা কিংবা গল্প লিখতে গেলে তো পুরা মাস লাগবে আমার।রাবিদ চিন্তায় পড়ে চিঠি তো লেখা হলো এখন সেটা উপমার হাত পর্যন্ত পৌছাবে কি করে??অনেক ভেবে নিজে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাবিদ।যা হবে আজ হয়ে যাক।কত দিন এভাবে না বলে দহন জ্বালায় মরা যায়?উফফ পড়বি তো তাও আবার এই রাগী মাইয়ার গলায়।ভালয় ভালয় একটা দিন গেলেই হয়।থাপ্পর খাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়ে বাসা থেকে বের হয় রাবিদ।
শীত থাকাতেও প্রচন্ড ঘামছে সে।ঐ যে উপমা আসছে।রিক্সাওয়ালাকে সাইডে রাখতে বলে রাবিদ।উপমা কে দেখে একটা শুকনা হাসি দেয় শুধু।
:কি স্যার আসতে এত সময় লাগলো আজ??মেকাপ করছিলেন নাকি??
-স্যরি রে তোকে মে বি অনেক ক্ষন দাঁড় করিয়ে রেখেছি??
:আরে না।আমি মাত্রই বের হইলাম।বল কি এমন জরুরি কথা যেটা ফোনে বলা যায় না?
-আগে রিক্সায় ওঠ দেন বলছি।
:না চাপলে আমি কি তোর মাথায় উঠে বসবো??চেপে বস।
-আচ্ছা রাগ করিস কেন??আয় এখন।
:কি বলবি বলে ফেল।
-আসলে তোকে কথাটা অনেক দিন ধরেই বলবো বলবো করছিলাম।বলা হয়ে উঠে নি।আসলে কি করে যে তোকে বলি সেইটাই ভেবে পাই নাই।
:ভনিতা না করে সোজা বলে ফেল তো।প্রেমে টেমে পড়িস নি তো??মুখ দেখা তো।নাকি আমার প্রেমেই পড়ছিস??খবর দার এইটা হইলে তোর রক্ষা নেই বলে দিলাম।
-হ্যাঁ পড়েছি প্রেমে।পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্রি মেয়ের প্রেমে পড়েছি।
:কে সেটা শুনি??(অভিমানে সুরে)
-আরে তোকে বলতে পারলে তো কবেই বলতাম।দেখ তোকে তার কথা বলতে পারবো না বলেই লিখে নিয়ে এসেছি।পড় এইটা।
:ওকে।
প্রিয় তুমি,
কি নামে ডাকবো ভেবে পাচ্ছি না।জীবনে প্রথম বার তোকে তুমি করে বলছি।লজ্জা লাগছে ভিষন।চিঠিটা পড়ে নিশ্চিত একটা থাপ্পর দিবি আমাকে।আমি রেডি আছি।ওকে।
শোন সেই প্রথম দেখার পর থেকেই আমি তোর প্রেমে পড়ে গেছি।এত করেও বলা হয়ে উঠেনি।তুই যদি আমার বন্ধুত্বটাকেই ভেঙ্গে দিস সেই ভয়ে বলাই হয়নি।প্লিজ এটা করিস না।তোকে অনেক ভালবাসি।দেখ আমার কিছু নাই তোকে দেয়ার মত।এখন অফুরন্ত সময় আছে হাতে।এরপর দেয়ার মত আছে অজস্র ভালবাসা।প্লিজ তোকে ভালবাসার সুযোগ দে একবার।দেখবি দুনিয়ার যে কারো চাইতে বেশি ভালবাসবো আমি তোকে।প্লিজ না করিস না।আর যদি আমায় তোর পছন্দ না হয় তবে এখন কিছু বলিস না।একটা থাপ্পর দিয়ে দিস।বুঝে নিবো।
আর হ্যা এখন যদি আমি তোকে তুমি করে একবার ডাকি রাগ করবি না তো??
ইতি,
তোর গাধাটা
চিঠিটা পড়েই রাবিদের গালে কষিয়ে একটা থাপ্পর মারে উপমা।রিক্সাওয়ালাকে থামায়ে রাবিদ কে কিছু না বলে রিক্সা থেকে নেমে যায় সে।রাবিদ মন খারাপ করে কিছুক্ষন বসে থাকে।কি করবে কিছু বুঝে উঠতে পারছে না।বাসায় ফিরে এসে মোবাইলটা হাতে নেয় রাবিদ।একটা এসএমএস দেখে।ইনবক্সে ঢুকে দেখে উপমার নাম্বার থেকে এসেছে।কি না কি জানি লিখেছে মেয়েটা।আল্লাহ উলটা পালটা কিছু হলে মোবাইল নষ্ট করে দিও।চোখ বন্ধ করে ওপেন করে এসএমএস।ছোট্ট একটা লাইন মাত্র সেখানে লেখা।যেই লাইন ঠিক এখন রাবিদকে যুদ্ধে নামিয়ে দিতে পারে।যে লাইন শুনে ১০০ মাইল দৌড়ে আসা যায় কিছু না ভেবে।যে লাইন শুনে মরে গেলেও কোন আপত্তি থাকবে না ওর।যে লাইনটা শোনার জন্য রাবিদ ৪ বছর অপেক্ষা করে ছিলো।ছোট একটা এসএমএস অথচ সেখানে সব কিছু বলে দিয়েছে মেয়েটা।এসএমএস রিপ্লাইতে গিয়ে রাবিদ লিখে ফেলে আই লাভ ইউ টু।তুমি তুমি তুমি তুমি।আজ থেকে তুই হচ্ছিস তুমি :)।।
২০টি মন্তব্য
বনলতা সেন
প্রেমের এমন সাফল্য খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখছেন আপনি ।
আরও লিখুন ।
নীল রঙ
প্রেমের সাফল্য গুলো খুব কম আসে মানুষের জীবনে।কিছু মানুষ অসম্ভব রকমের সুখি হয়।তবে তার সংখ্যাটা সামান্য।দেখা যাক এই সাফল্য কত দিক এক সাথে থাকে।কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। 🙂
সীমান্ত উন্মাদ
প্রেম কথনে অনেক অনেক ভালোলাগা। শুভকামনা আপনার জন্য নিরন্তর।
নীল রঙ
যাদের নিয়ে লেখা তাদের কাছে আপনার শুভ কামনা পাঠিয়ে দিবো যদি কোন্দিন দেখা হয়ে যায় আর কি। 🙂
শুন্য শুন্যালয়
আহা কি মজা… আমারই তো শুনে আনন্দ লাগছে…
শুভকামনা দুজনের জন্য…
নীল রঙ
মজাই মজা।যাদের সাথে এমন ঘটে তাদের আসলেই অনেক মজা হয় বুঝি???আমার জানা নেই।আমার তরফ থেকেও তাদের দুজনের জন্য শুভকামনা।কোন একদিন দেখা হলে বলে দিবেন তো। 🙂
খসড়া
সম্মোধন বদলালে কি যাপিত জীবন বদলিয়ে যায়।
নীল রঙ
কিছুটা তো বদলে যায়।তুই বললে আপন আপন লাগে।আর তুমিটা সেই মানুষ যাকে আপন করে পাওয়ার বাসনা থাকে আই গেইস।
জিসান শা ইকরাম
খুব কিউট একটা গল্প 🙂
নীল রঙ
ধন্যবাদ। 🙂
ব্লগার সজীব
খুব ভালো লেগেছে ভাইয়া । তুই আমার তুমি – এত ভালো লেগেছে এটা যা বলার মত নয় 🙂
নীল রঙ
নিজের সাথে মিলে যায় নি তো আবার?? 😉 ।আপনার ভাল লেগেছে শুনে খুশি হলাম।ধন্যবাদ 🙂
প্রহেলিকা
দুঃখিত এতো রোমান্টিক গল্পটা পড়তে অনেক দেরী করে ফেললাম। তুই থকে তুমি হওয়াতে শুভেচ্ছা আগেই জানাই। খুব ভালো গল্প লিখেন আপনি। আমাকে একটা গল্প লিখে দিবেন তুমি থেকে তুই, তুই থেকে আপনি আবার আপনি থকে তুমি পরবর্তীতে তুই এড়িয়ে? আমার এই গুবরে পোকা ধরা মাথায় কিছু ঢুকে না লিখে দিন না আমাকে একটা এমন গল্প। আপনার গল্পটা পড়তে বলবো একজন যদি লিখে দেন আর কি।
নীল রঙ
তুমি থেকে তুই, তুই থেকে আপনি আবার আপনি থকে তুমি পরবর্তীতে তুই এড়িয়ে?
এই লাইনটা ক্লিয়ার না।যদি ক্লিয়ার করে দেন।তবে চেষ্টা করে দেখতে পারি।পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
প্রহেলিকা
এখন এটা বুঝতে গেলেতো অনেক বড় গল্প হয়ে যাবে। যাইহোক তুমি থেকে তুই(অপরিচিত কাউকে ভালোবেসে ব্রেক-আপ), এই তুই কিন্তু রাগ থেকে যাকে তুই বলা হয় এরপর তুই থেকে আপনি (অপরিচিত যে ছিল আগে সে আবার অপরিচিত হয়ে যাবে), ব্রেক-আপ হয়ে যাওয়া সম্পর্ক আবার জোড়া লাগবে(আপনি থেকে তুমি ) তুই এড়িয়ে (যা আর কোনদিন ভাঙ্গার সম্ভাবনা নেই। ^:^
নীল রঙ
(অপরিচিত কাউকে ভালোবেসে ব্রেক-আপ)- এই অপরিচিত মানুষটার সাথে পরিচয় কোঠায় হয়??বাস্তব লাইফে পরিচিত নাকি ব্লগ ওর ফেবুতে??এইটা ক্লিয়ার করে দেন।বাকিটা ট্রাই করে দেখতে পারি।
প্রহেলিকা
ভুলেও কোনো ব্লগ অথবা ফেবু টেবু আনবেন না ভাইয়া। ok কিছু বলেই দিচ্ছি নিজের মনের অনুভুতি।
তার সাথে পরিচয় হবে চলন্ত ট্রেনের বগিতে অথবা খেয়ার অপেক্ষায় বসে থাকা নদীর ঘাটে অথবা পথ হারানো কোনো নির্জন দ্বীপে। এবার আপনার ইচ্ছা কিভাবে কি করবেন। ট্রেন হলেই ভালো হয়। আবার কিছু মনে করবেন না আপনাদের কাছে না এসে আমরা কোথায় যাব বলেন। লিখে দিন এই অধমের জন্য একটি।
নীল রঙ
আমি আমার সাধ্যমত ট্রাই করবো।কবে লিখে দিতে পারবো বা আউদো পারবো কিনা বলতে পারছি না। 🙂
মানিক পাগলা
গল্পটা পড়ে মনে হচ্ছে একটা প্রেম করেই ফেলি। \|/
নীল রঙ
করে ফেলুন।প্রেম হয়ে গেলে খাওয়ানোর দাওয়াত দিয়েন। 🙂