===অসম্পূর্ণা ====
যখন এখানে ভোর নামে
সূর্যের আলোয় নদীর জল চিকচিক করে।
সেখানে ছায়ার মতো নারী-শরীর এসে দাঁড়ায়।
যে সহিষ্ণু আলোয় মিলিয়ে যায় মানুষ,
তাকে রোদ-মেঘ-বৃষ্টি আদর করে নতজানু হয়ে।
দু’-চারটে আলিঙ্গনের পর বিচ্ছেদ,
কে মনে রাখে প্রতিটি ভোরে এখানে নদীর জল চিকচিক করে,
ভেতরে ভেতরে কাঁদে!
===বেতন===
দূর থেকে নক্ষত্র এসে দাঁড়ায়,
জুজু বুড়ীর গল্প শোনার জন্যে।
শৈশবের উঠোন চোখ-ভাঙ্গা ঘুমের শয্যা হয়ে যাবার পর,
জোড়াতালি দিয়ে সেলাই করা জীবন ছোটে
মাস-শেষের ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের বিলে।
===কাপুরুষ===
নেপথ্যের অন্ধকার থেকে বেড়িয়ে আসে ভূত
শোঁ শোঁ শব্দে হাওয়াদের দৌরাত্ম্যে
ছুট লাগানো “পরাজিত-বীর” হোঁচট খেয়ে পড়ে।
মানুষের পূর্ণাঙ্গ শরীরে অশরিরী আত্মার বিরাজ।
===অসভ্যতা===
বহু বহু জন্ম-মৃত্যুর আদলে গড়ে ওঠে হৃদয়
চিহ্ন রেখে যাবার অপপ্রয়াসে হেরে যেতে থাকে
মনুষ্যত্ত্ববোধ,
আর সততার নামে তৈরী হওয়া ভন্ড সামাজিকতায়
ভালোবাসা বলে শব্দটি সেক্স হিসেবে পরিগণিত হয়।
কি সব্বাই চুপ!
নিঃস্তব্ধতা কথা জানেনা।
হ্যামিল্টন, কানাডা
১৮ মার্চ, ২০১৬ ইং।
৩৪টি মন্তব্য
শুন্য শুন্যালয়
নিঃস্তব্ধতার ছবিটি দেখে পুরাই নিঃস্তব্ধ হয়ে গেছি, ওয়াও টাইপের ছবি।
বহুদিন পর নীলাঞ্জনা আপুকে দেখলাম, কবিতা ছাড়া তুমি একদম খোঁড়া 🙂
১। অসম্পূর্ণাঃ আপু, একাকীত্বেও সম্পূর্নতা আছে। আমার পিচ্চি ভূতের লাইন, কাউকে এতোটা প্রায়োরিটি দিওনা, যার থাকা না থাকায় তোমার কিছু যায় আসে। ভোরে নদীর জল কাঁদবে কেন? আমি আছিনা!! 🙂
২। বেতনঃ কাজ, মাস শেষ, বেতন, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের বিল–আহ্ নীলাপু দেখোতো ভালো করে সারেগামাপা এর মতো লাগছেনা? বেতনের মধ্যেও শান্তি আছে বুঝলে? 🙂
৩। কাপুরুষঃ জয়ী বীরও হোঁচট খেতে পারে, আনন্দে উষ্ঠা খাবার মতো 🙂 অশরীরি আত্মা আমাদের শরীরের মধ্যেই থাকে। (y)
৪। অসভ্যতাঃ বড্ড কঠিন হিসাব নিকেশ, জানিনা ভালোবাসা মানে কি!! সত্যিই জানিনা।
সব কয়েকটি চমৎকার অনু, তবে নিঃস্তব্ধতা ছবিটার জন্য, সোজা এক ক্লিক। -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু তোমার মতো ফটোগ্রাফার যখন বললো নিঃস্তব্ধতা দেখে নিঃস্তব্ধ হয়ে গেছো, গর্বে তো মাটিতে পা-ই ফেলতে ইচ্ছে করছে না। খুশীতে দাঁত 😀 কেলিয়েই রেখেছি। মাটিতে পা না ফেললেও ঠিকই নেচে চলছি। এই দেখো \|/
হায়রে ভুলেই গিয়েছিলাম তুমি থাকতে ভোরের জল তো কাঁদতেই পারবেনা। আপু গো এক্সিডেন্ট কি শিখিয়েছে জানো? আমি-ই আগে-পিছে-সামনে-ঊর্ধ্বে, কে থাকলো আর কে গেলো এসব ভাবার জন্যে টাইম নাইক্কা। 😀
সারেগামা-মাসারেগা গানটা শোনো। https://www.youtube.com/watch?v=OlwsYhKjjKU
কাপুরুষেরা অসভ্যতা জানেনা, পালায়। আর অসভ্যেরা ভালোবাসা শব্দটাকে নিয়ে খেলা করে।
আপু ভালোবাসা কারে কয়! ;?
যদি জানতেম 🙁
ছাইরাছ হেলাল
অসম্পূর্ণা সুন্দর হয়েছে,
কেউ মনে রাখুক বা না রাখুক ভোরনদী চিকচিকেই থাকে।
অনেলদিন পর সুন্দর কিছু পড়লাম আপনার থেকে।
নীলাঞ্জনা নীলা
অসম্পূর্ণা পূর্ণতা পেয়েছে, জানেন?
আর ধানসিঁড়ি কেমন থাকে ভোরের বেলায়?
যাক আপনার ভালো লাগলো আমার লেখা, জেনে তৃপ্ত হলাম।
জিসান শা ইকরাম
অসম্পূর্ণার ”কে মনে রাখে প্রতিটি ভোরে এখানে নদীর জল চিকচিক করে,
ভেতরে ভেতরে কাঁদে!” ……… মনে গেঁথে গেলো এটুকু।
বিষণ্নতার কথা গানগুলো মনে গেঁথে যায়।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা লেখাটা এ সমাজের নারীর যন্ত্রণাকে তুলে ধরা হয়েছে। তাদের অতৃপ্তি। তনু ধর্ষিত হয়েছে, এমন অনেক তনুর খবরই অপ্রকাশিত থেকে যায়। এখানে নারীকে নদী রূপে আঁকার চেষ্টা করেছি।
জিসান শা ইকরাম
বুঝেছি
তনুর পরে আরো দুই মেয়ে ধর্ষনের শিকার কয়েছে 🙁
ভাললাগছেনা এই অবস্থা আর।
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা আমাদের দেশের অধিকাংশদেরই নৈতিকতা নেই। এমন তো হতেই থাকবে।
হিলিয়াম এইচ ই
সুন্দর হইসে কবিতাগুলো। জুজুবুড়ি কি জিনিস? আমি জানি না!! :/
আপনাকে বলসিলাম কবিতা লেখা শিখাইয়া দিতে!! দিলেন না তো!! :/
নীলাঞ্জনা নীলা
আমি শেখাবো আপনাকে কবিতা লেখা! 😮
হায়রে আজও আমি পারলাম না কবিতা লিখতে। কেউ শেখানোরও নেই 🙁
জুজুবুড়ী রূপকথার একটি চরিত্র। জুজুবুড়ী ভয় দেখায়। আভিধানিক অর্থে ভয় দেখাবার জন্য কল্পিত অশরীরী।
খসড়া
অসভ্যতারর গর্ভেই সভ্যতার জন্ম।
নীলাঞ্জনা নীলা
বাহ! খসড়া আপু কি দারুণ বললেন! (y)
মুহাম্মদ আরিফ হোসেইন
বহু বহু জন্ম-মৃত্যুর আদলে গড়ে ওঠে হৃদয়
চিহ্ন রেখে যাবার অপপ্রয়াসে হেরে যেতে থাকে
মনুষ্যত্ত্ববোধ,
আহ্! অসাধারণ। (y)
নীলাঞ্জনা নীলা
আমরা মানুষেরা জানি মৃত্যু নিশ্চিত, তাও অসভ্য সে আরোও অসভ্যই হতে থাকে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
মেহেরী তাজ
আপু আমি কবিতা বুঝিনা গো…..! ;(
তবে অশুরীরি ছবি টা কিন্তু বেশ আর শুন্য আপু তো বলেই দিলো নিস্তব্ধতা ছবির জন্য সোজা একটা ক্লিক -{@
কবে যে আমি কবিতা বুঝবো ^:^
নীলাঞ্জনা নীলা
এটা কবিতা না তো!
এমন নীল অন্ধকারের দৃশ্য নিয়ে একটা এলবাম করেছিলাম ফেসবুকে।
ব্লগার সজীব
কত্ত গুলো সুন্দর অনুকবিতা শিরোনাম দিলেন একটির। সবগুলোই ভালো লেগেছে দিদি।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভাভু বাইয়া অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকাল লেখার আকাল চলছে।
তারপরেও যে ভালো লেগেছে আপনার। 🙂
অরুনি মায়া
ঘটমান সবকিছুরই নিরব সাক্ষি এই প্রকৃতি। মানুষ ভুলে যায় ক্ষাণিক পরেই।কিন্তু একদিন সাক্ষি দিবে এই পৃথিবী।
জুজুর গল্প শুনতে চায় নক্ষত্র, তার ভয় করেনা বুঝি ;? ।
একদিন একটি নাটকে দেখেছিলাম ইবলিশ খুঁজতে নরকে যাবার প্রয়োজন হয়না,মানুষের মাঝেই তার বসবাস। তোমার কাপুরুষ পড়ে তা মনে পড়ে গেল।তোমার ছায়া এত লম্বা হয়ে গেল কি করে আপু? 🙂
ভালবাসা কেমন হয় তা আজও অস্পষ্ট।
নি:স্তব্ধতা ছবিটি জাস্ট অসাধারণ।
তোমার কবিতার কথা নতুন করে আর কি বলব আপু। একটি আলাদা স্টাইল আছে, যা অন্য কারো নেই -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
আপু ছবিটা তোলার পর আমি কি যে খুশী, আমার থেকে আমার ছায়া যে লম্বা। 😀
এই, এই এত্তো প্রশংসা করোনা। তাহলে মাথা ঘুরে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যাবো যে! 😀
আবু খায়ের আনিছ
কেউ মনে রাখে না, সবাই সুখের ভাগি হতেই আসে।
নীলাঞ্জনা নীলা
হুম সবাই তো সুখী হতে চায় ভাইয়া।
আবু খায়ের আনিছ
সবাই সুখি হোক, তাতেও যে সুখ।
নীলাঞ্জনা নীলা
“সুখ তুমি কি বড়ো জানতে ইচ্ছে করে।”
https://www.youtube.com/watch?v=f12MnidI4oE
জিসান শা ইকরাম
শুন্য শুন্যালয় যেভাবে মন্তব্য করেন, এরপরে আর মন্তব্য করা যায় নাকি?
সবই তো বলে দেন এক মন্তব্যে 🙂
অসম্পূর্ণা সবচেয়ে ভালো মনে হয়………
শুভকামনা -{@
নীলাঞ্জনা নীলা
নানা প্রত্যেকেই তাঁর নিজের মতো করে মন্তব্য করেন। সকলেরই নিজস্ব একটা স্টাইল আছে।
তুমি তোমার মতো করে এই যে মন্তব্যটা করেছো, ভালো লেগেছে।
ও নানা সম্পূর্ণা আমি কি খারাপ? ;( ঠিক করে বলো, নইলে :@
জিসান শা ইকরাম
আমার মন্তব্য গুলো ছোট হয়, এতে অনেকে আবার রাগ করে।
দৌড়ের উপরে থাকি, ব্লগেই কত কাজ যে করতে হয়
মন মত মন্তব্য করতে পারিনা।
তুমি আমার দেখা মানুষদের মাঝে সেরার সেরা একজন মানুষ 🙂
নীলাঞ্জনা নীলা
“তুমি আমার দেখা মানুষদের মাঝে সেরার সেরা একজন মানুষ 🙂 ”
নানা বলো তুমি কি চাও? 😀 \|/
নাজমুস সাকিব রহমান
‘এখানে নদীর জল চিকচিক করে, ভেতরে ভেতরে কাঁদে!’
শুভেচ্ছা নেবেন।
নীলাঞ্জনা নীলা
অসংখ্য ধন্যবাদ নাজমুস সাকিব রহমান।
অপার্থিব
খুবই ভাল লিখেছেন। অশরীরী ছবিটাও ভাল লেগেছে।
নীলাঞ্জনা নীলা
ভালো লাগার জন্যে আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
ইলিয়াস মাসুদ
খুব ভাল লেখা, ছবি গুলোও দারুণ
নীলাঞ্জনা নীলা
অসংখ্য ধন্যবাদ ইলিয়াস মাসুদ। আপনার স্কেচের কাছে এই ছবি কিছুই না।