কে জানি একজন! কিছু বোঝার আগেই একটা অদৃশ্য সুতো হাতটায় বেধে দিল। সুতোটা সারাক্ষণ আমায় সামনের দিকে টেনে নিয়ে চলেছে। মাঝে মাঝে যখন সুতো টানে এগিয়ে চলায় বিরক্ত হয়ে দাড়িয়ে পড়তে চাই তখন বুঝতে পারি, এই সুতোটার টানের ক্ষমতা। আমার সর্বশক্তির প্রয়োগের পরও সে সেটা উপেক্ষা করে সে তার দিকে আমাকে টেনে হেঁচড়ে ঠিকই নিয়ে যায়। এর বিরুদ্ধে টানাটানি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে এখন এর টানেই সামনে এগিয়ে চলেছি।
এই টানাটানির মাঝেই পথের বেশ কিছু জিনিষ দেখার বাকি থেকে যায়। অনেক প্রয়োজনীয় জিনিষও হাতছাড়া হয়ে তার টানের তাল সামলাতে গিয়ে। একটু দাড়িয়ে কোথাও বিশ্রাম নিয়ে নিবো, সেই অবস্থাটাও থাকে না। কত প্রিয়জনকে এই টানের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে যেতে দেখেছি। কত মানুষকে দেখেছি এর কাছে হার মেনে নিতে। কিন্তু কি জানেন? খুব ভয়ানক পরিস্থিতি দেখেও এই সুতোর টান এক বিন্দু পরিমাণ পর্যন্ত কমে না।
আবার কেউ কেউ আছে এই অদৃশ্য সুতোর টান সইতে না পেরে এর থেকে পরিত্রাণের রাস্তা খুঁজে বেড়ায়। জানি না, তারা কিভাবে চিন্তাও করতে পারে এই অসম্ভব কাজটার কথা। যা দেখা যায় না, যার কোন অস্তিত্ব নেই, তাকে ঠিক কোন উপায়ে বাধা দেব? পিছুই বা ছুটবো কেমন করে?
শেষে না পেরে তারা ভিন্ন উপায় খুঁজে বের করে। তারা তাদের সকল আক্ষেপ সুতোর উপর না দেখিয়ে নিজের উপর দেখানো শুরু করে। কারো কারো আক্ষেপের পরিমাণ এত বেশি থাকে যে, সুতোটা শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে তাকে ঐ লাইনটাকে পার করিয়ে দেয়।
ওহ! বলা তো হয়নি। সুতোটা কিন্তু সবাইকে ঐ লাইনের দিকেই টেনে নিয়ে যাচ্ছে। লাইনটা বড়ই অদ্ভুত। সবার জন্যে এক সমান নয়। কারো কারো দু’কদম এগুতেই লাইনের দেখা মিলছে তো আবার কারো কারো কদমের পর কদম ছুটে চলেছে, লাইনের দেখা আর মিলছে না। তবে লাইন ঠিকই আছে।
কেউ কেউ আবার এই লাইনের দিকে ছুটে চলার ভীতিকে বিভিন্ন উপায়ে পিছু ছাড়াতে ব্যস্ত। হরেক রকম পদ্ধতি তারাও প্রয়োগ করে যাচ্ছে। কিন্তু লাভের লাভ কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। সুতো ঠিকই তাদেরকেও ঐ লাইন বরাবর ছুটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
সুতোটার মত এই লাইনটাও আরেক রহস্য। এদিক থেকে লাইনটাকে কেউ যতই দ্রুত কিংবা দেরিতে পার করার চেষ্টা করুক না কেন, এই সুতোর টানের সাহায্য ছাড়া কেউ লাইনটাকে পার করতে পারে না। আবার কেউ একবার লাইনটাকে অতিক্রম করলে, তাকে এই ছুটে চলার পথটায় দেখাও যায় না। একেবারে অদৃশ্য হয়ে যায় লাইনটা অতিক্রম করার পরপরই।
মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে। লাইনটা পেরুনোর পরও কি এই অদৃশ্য সুতোর টানে টানে এগিয়ে চলে তারা? নাকি মুক্তি মেলে এই টান থেকে??
জানা হয় না….
এই প্রশ্নের জবাব সবাই একমাত্র আর কেবল মাত্র জানতে পারবে অদ্ভুত ঐ লাইনটাকে অতিক্রম করার পরেই…..
১৭টি মন্তব্য
ছাইরাছ হেলাল
জীবনের খুব মৌলিক দিক নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন দেখে ভালো লাগল ।
বাহ্ বেশ ।
লিখতে থাকুন , উপস্থাপনা আরও সুন্দর দেখতে চাই । আর একটু যত্ন নিলেই হবে ।
অলিভার
ধন্যবাদ ভাইয়া।
চেষ্টা করবো আরও গুছিয়ে লেখার জন্যে 🙂
শুভ কামনা জানবেন -{@
খসড়া
খুব বাস্তব কিন্তু উপেক্ষিত বিষয় উপস্থাপন করেছেন।
অলিভার
সময় নিয়ে লেখাটা পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ 🙂
মা মাটি দেশ
লাইন ছাড়া চলে না জীবনের রেল গাড়ী খুব ুন্দর অনুভূতি। -{@
অলিভার
ধন্যবাদ ভাইয়া।
শুভ কামনা থাকলো -{@
পুষ্পবতী
লাইন ছাড়া জীবন চলবে না।ভালো লিখেছেন।
অলিভার
লাইনটাই জীবনের ছুটে চলার সমাপ্তি।
ধন্যবাদ সময় নিয়ে লেখাটা পড়ার জন্যে 🙂
বনলতা সেন
আপনি কিন্তু আস্তে আস্তে ভাল লিখতে শুরু করেছেন ।
অলিভার
:Overjoy:
এই গুলি কি সত্যিই ভালো বলার মত?
তবুও প্রশংসা করার জন্যে অনেক ধন্যবাদ 🙂
শুন্য শুন্যালয়
আপনার চিন্তাভাবনার গভীরতা আর প্রকাশে মুগ্ধ হলাম।
এমন করে লিখলে আমাদের চাওয়া বাড়বেই কিন্তু।
অলিভার
:Amazed:
আমি তো অল্প-পানির মাছ, গভীর জলের চাহিদা মেটাবার মত মেধা এখনো হয়নি।
চেষ্টা করবো এমন হিজিবিজি জিনিষপত্র লেখার জন্যে।
শুভ কামনা জানবেন 🙂
জিসান শা ইকরাম
অদ্ভুত ভালো লাগায় আচ্ছন্ন হলাম লেখাটি পড়ে
ভালো লেখেন আপনি
এবং নিজে তা স্বীকার করেন না 🙂
শুভ কামনা ।
ব্লগার সজীব
অসাধারন লেখা, যদিও বুঝতে একটু সময় লেগেছে ।
মিসু
কিছুটা ভিন্ন লেখা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
লীলাবতী
ছবিটার দিকে এক দৃষ্টে তাকানো যায়না। মাথা ঘুরে যায়। কি আছে ছবিটায় বলুনতো ? ভালো লিখেছেন খুব।
আদিব আদ্নান
একটু কঠিন কঠিন হলেও পড়লাম সবই । আরও লিখুন ।